Instagram, Snapchat-এ আসক্তি, ভয়ংকর পরিণতি হল ১৭ বছরের কিশোরের

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আট থেকে আশি প্রায় প্রতিটি ব্যক্তিই আসক্ত। কিন্তু, প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে কৈশোরকালীন মস্তিষ্কে ডিজিটাল মিডিয়ার চাকচিক্য অধিক প্রভাব ফেলে। ফলস্বরূপ, একাধিক…

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আট থেকে আশি প্রায় প্রতিটি ব্যক্তিই আসক্ত। কিন্তু, প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে কৈশোরকালীন মস্তিষ্কে ডিজিটাল মিডিয়ার চাকচিক্য অধিক প্রভাব ফেলে। ফলস্বরূপ, একাধিক আত্মহত্যা বা অসৎ কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে এখনকার প্রজন্মদের। এমনই একটি প্রায় অর্ধ দশক পুরোনো সোশ্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক কাহিনী সম্প্রতি আমাদের সামনে এসেছে। যেখানে ইনস্টাগ্রাম (Instagram) এবং স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat)-এ আসক্তির কারণে ১৭ বছর বয়সী একটি ছেলের আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের তাড়নায় করা এই আত্মহত্যার ঘটনাটি ৭ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৫ সালে ঘটেছিল বলে দাবি করা হয়েছে একটি মামলায়। তবে দীর্ঘ ৭ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি ছেলেটির বাবা-মা। যার দরুন, এত বছর পর সন্তানের এই আকস্মিক পদক্ষেপের জন্য তারা সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে অভিযুক্ত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছেন।

‘সোশ্যাল মিডিয়া ভিক্টিমস ল সেন্টার’ বা SMVLC এর একটি রিপোর্ট অনুসারে, উইসনসিনের অধিবাসী, ১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টোফার জে. ডাউলি, ২০১৫ সালের ৪ঠা জানুয়ারী একটি ২২-ক্যালিবার রাইফেল দিয়ে নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী হয়েছিলেন। তবে, আত্মহত্যা করার আগে, তিনি তার বন্ধুকে “God speed” টেক্সট করেছিলেন এবং তার ফেসবুক পেজে “Who turned out the light?” লেখা পোস্ট ছিল৷ ফলস্বরূপ, ছেলেটির মৃত্যুর সাত বছর পর, তার বাবা-মা সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷

কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার দিকে চালিত করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিকে দায়ী করে একটি মামলায় দাবি করা হয়েছে যে, মেটা প্ল্যাটফর্মগুলি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিপজ্জনক সোশ্যাল মিডিয়া প্রোডাক্ট ডিজাইন করেছে। এই বিষয়ে, SMVLC-এর প্রতিষ্ঠাতা ম্যাথু পি. বার্গম্যানের মন্তব্য, “কংগ্রেশনাল টেস্টিমোনি দেখিয়েছে যে মেটা প্ল্যাটফর্ম এবং স্ন্যাপচ্যাট উভয়ই তাদের প্রোডাক্টের আসক্ত প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতন ছিল। তাত্ত্বেও অতিরিক্ত ক্লিক এবং রেভেনিউ লাভের উদ্দেশ্যে প্রোডাক্ট ডিজাইন অব্যাহত রেখেছে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।” একই সাথে, “আমরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের পেরেন্ট সংস্থাগুলিকে, ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের প্ল্যাটফর্মগুলিতে ব্যাপকভাবে চলা সাইবার বুলিং এবং যৌন শোষণের বিপদ থেকে নাবালকদের রক্ষা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি” বলে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে আবেদন জানিয়েছে বার্গম্যান।

রিপোর্ট অনুসারে, ১৭ বছর বয়সী কিশোরটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এতটাই আসক্ত ছিল যে, প্রায় প্রতি দিনই সে রাত ৩টে পর্যন্ত জেগে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতো এবং বন্ধুদের সাথে চ্যাট করত। ফলস্বরূপ, তিনি এতটাই কম ঘুমোতেন যে – ঘুমের অভাবজনিত সমস্যায় ভোগা, চেহারা ঝুঁকতে থাকা ও সেই দিকে তার অধিক মনোনিবেশ করা এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে ছবি আদান-প্রদান করার মতো বেশ কয়েকটি কান্ড ঘটেছিলো। যদিও তার মধ্যে কখনও ‘ডিপ্রেশন’ বা বিষন্নতার কোনো লক্ষণ দেখাননি তার অভিভাবক। তবে, তাদের বিশ্বাস, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য ঘুমের কমতির ফলে তার শরীরে স্থায়ীভাবে কমজোরি এসেছিল, যার কারণে তার পায়ে ব্যথা শুরু হয়েছিল।

ছেলেটির অভিভাবক মামলায় অভিযোগ করেছেন যে, “মেটা তাদের প্রোডাক্টকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডিজাইন এবং বিকাশ করতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যাতে কন্টেন্ট দেখার প্রতি কিশোর ও শিশুদের উৎসাহিত এবং উত্তেজিত করতে পারে, যা নাবালক ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সমস্যাযুক্ত এবং অত্যন্ত ক্ষতিকারক।”