Twitter: টুইটার কিনছেন না ইলন মাস্ক, সংস্থার বিরুদ্ধে তোপ দেগে বাতিল ৩৩,৬৭২ কোটি টাকার চুক্তি!

দীর্ঘ চর্চার পর গত এপ্রিলে Twitter (টুইটার) অধিগ্রহণের পথে পা বাড়ালেও অবশেষে মতবদল করে পিছিয়ে এলেন টেসলা (Tesla)-র কর্ণধার ইলন মাস্ক (Elon Musk)। অতিসম্প্রতি মাইক্রো…

দীর্ঘ চর্চার পর গত এপ্রিলে Twitter (টুইটার) অধিগ্রহণের পথে পা বাড়ালেও অবশেষে মতবদল করে পিছিয়ে এলেন টেসলা (Tesla)-র কর্ণধার ইলন মাস্ক (Elon Musk)। অতিসম্প্রতি মাইক্রো ব্লগিং সাইটটির সঙ্গে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩৩,৬৭২ কোটি টাকা) চর্চিত চুক্তি বাতিল করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। স্বভাবতই এই ঘটনার ফলে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে টেক দুনিয়ায়। আসলে মাস্কের টুইটার কেনার খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একাধিক ঘটনার ঘনঘটা সংবাদমাধ্যমে ছেয়ে গিয়েছিল। কখনও টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ, তো কখনও আবার শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে মনোমালিন্য – এরকম হাজারো খবর আমাদের সামনে ঘোরাফেরা করছিল। তবে এবার যাবতীয় নাটকের যবনিকা পতন ঘটল, শেষ পর্যন্ত Twitter-এর হাত ছেড়ে দিলেন ইলন মাস্ক।

ইলন মাস্কের দাবি ‘মানেনি’ Twitter!

উল্লেখ্য, টুইটার কেনার চুক্তি হওয়ার পর থেকেই ইলন মাস্কের সঙ্গে মাইক্রো ব্লগিং সাইটটির বিরোধের একাধিক খবর সামনে আসছিল। কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট ছিলেন না মাস্ক এবং এই নিয়ে টুইটার বোর্ডের কাছে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, বহু টাকা ব্যয় করে প্ল্যাটফর্মটি কেনার পথে এগোলেও মাসখানেক আগে টেসলার সিইও জানিয়েছিলেন, টুইটারে বিদ্যমান স্প্যাম অ্যাকাউন্টের তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত তিনি এটিকে অধিগ্রহণ করবেন না। তিনি দাবি করেছিলেন যে, অনেক অ্যাকাউন্ট বটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়; সেজন্য টুইটারকে এই সমস্ত বিষয় থেকে স্বচ্ছ রাখা একান্ত আবশ্যক, কেননা স্বচ্ছতাই একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার মূল দিক। এই মতের প্রেক্ষিতে চুক্তি কার্যকর হওয়ার বিষয়টিকেও মাস্ক স্থগিত রাখেন।

তবে এখন এই ধনকুবেরের আইনজীবী জানিয়েছেন যে, মাইক্রো ব্লগিং সাইটটির পক্ষ থেকে এই স্প্যাম অ্যাকাউন্ট সম্বন্ধিত দাবির উত্তরে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মূলত এই কারণেই নাকি টুইটারের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পথে হেঁটেছেন মাস্ক।

মাঠে নামছে Twitter কতৃপক্ষও

বলে রাখি, ইলন মাস্কের এই কীর্তি দেখে টুইটার কর্তৃপক্ষও কিন্তু চুপ করে নেই! এই ডামাডোলের মধ্যেই মাস্ককে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংস্থাটি। টুইটারের তরফে জানানো হয়েছে যে, তারা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জানা গিয়েছে, যদি চুক্তিটি কোনো এক পক্ষ (টুইটারই হোক বা মাস্ক) বাতিল করে, তবে অপর পক্ষকে ১০০ কোটি ডলার জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু টেসলার সিইও যদি আদালতে তার বিরুদ্ধে টুইটারের করা যাবতীয় অভিযোগ ভুল বলে প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে তাকে আর এই জরিমানা দিতে হবে না; বরং সেই পরিস্থিতিতে টুইটারের জন্য বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে যে একটি সম্ভাব্য দীর্ঘস্থায়ী আইনি লড়াই শুরু হতে চলেছে, সেকথা বলাই বাহুল্য। এদিকে, এই চুক্তি বাতিলের খবর প্রকাশ্যে আসতেই টুইটারের শেয়ারের দাম বেশ অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আলোচ্য ঘটনাটির খবর সামনে আসতেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যঙ্গাত্মক ট্রোলসহ একাধিক পোস্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। চুক্তি বাতিলের খবরকে কেন্দ্র করে সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার, মার্কেটিং লিডার এবং অন্যান্য কর্মচারীরা Twitter-এ বিভিন্ন মজাদার মিম শেয়ার করা শুরু করেছেন। কিছু ব্যক্তি রোলার কোস্টার, তো আবার কয়েকজন একটি ক্রন্দনরত বাচ্চার ছবি শেয়ার করেছেন। তবে কর্মচারীদের তরফে একথাও জানানো হয়েছে যে, তারা শুরু থেকেই এই ডিলটির সম্পর্কে সন্দিহান ছিলেন। মাস্কের Twitter কেনার খবর সামনে আসার পর থেকে তার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েই কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল। তবে এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া পরিস্থিতির এই সমাপতনে রীতিমতো বাকরুদ্ধ কর্মীরা। সেক্ষেত্রে অনেকেই আবার এটিকে কেবল ডামাডোলের প্রথম পর্ব বা সিজন ওয়ান বলে উল্লেখ করেছেন। এখন আগামী দিনে কোথাকার জল কোথায় গড়ায়, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে…