সরকারি নীতির সুফল, 1 বছরের বিক্রি 6 মাসেই! ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহারে এই শহর পেছনে ফেলছে বাকিদের

দিল্লির মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণকে কব্জা করতে রাতের ঘুম উড়েছিল কেজরিওয়াল সরকারের। পেট্রোল-ডিজেল চালিত যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন যুক্ত কালো বিষাক্ত ধোঁয়া এর অন্যতম কারণ বলে…

দিল্লির মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণকে কব্জা করতে রাতের ঘুম উড়েছিল কেজরিওয়াল সরকারের। পেট্রোল-ডিজেল চালিত যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন যুক্ত কালো বিষাক্ত ধোঁয়া এর অন্যতম কারণ বলে জানান পরিবেশবিদগণ। এরপরই নড়ে চড়ে বসে সরকার। ব্যাটারি চালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোতে জোর দেওয়া হয়। আনা হয় বৈদ্যুতিক গাড়ি নীতি। সাথে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল (NGT)-র নির্দেশ মতো ১০ বছরের পুরনো ডিজেল এবং ১৫ বছরের পুরনো সমস্ত পেট্রোল গাড়ি বাতিলের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে মসনদের প্রশাসন। এই কড়া পদক্ষেপগুলির সুফল এবার হাতেনাতে মিলল। রাজধানীতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের বিক্রি বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ছাপিয়ে যাওয়ার পরিসংখ্যান সামনে এল।

রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০২২-এর প্রথম ৬ মাসে দিল্লিতে মোট ২৫,৮৯০টি বৈদ্যুতিক যানবাহন বিক্রি হয়েছে। এর আগে বছরের প্রথমার্ধে বা কখনও গোটা বছরে এত বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়নি। এদিকে এ বছরের এখনও অর্ধেক বাকি। বাকি ছয় মাসে বৈদ্যুতিক যানবাহনের বিক্রি যে আরও বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। পরিসংখ্যান বলছে, এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দিল্লিতে বিক্রি হওয়া মোট যানবাহনের ৯.৩% হচ্ছে বৈদ্যুতিক। ২০২১-এর তুলনায় যা ৫.৬% বেশি। গত বছরে সেখানে মোট ২৫,৮১৪টি বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি বিক্রি হয়েছিল। ২০১৯ ও ২০১৮ -তে এই অঙ্কটি ছিল যথাক্রমে ২৩,২২২ ও ২০,৯৭৩। ২০২০-তে মাত্র ১২,৩৮১টি এই জাতীয় যানবাহন বিক্রি হয়েছিল। যার জন্য করোনা অতিমারি প্রধানত দায়ী।

পাঁচ বছর আগে দিল্লিতে ২১,০০০ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছিল, যা তৎকালীন বিক্রিত মোট যানবাহনের ২.৯%। ২০১৯-এ তা বেড়ে ৩.৬% হয়। কিন্তু ২০২০-তে সেই শতকরা কমে ফের ২.৯ শতাংশে দাঁড়ায়। এ বছর এখনও পর্যন্ত যা ১২.৬%। মার্চে রাজধানীতে বিক্রি হওয়া মোট গাড়ির ১২.৬% ছিল ব্যাটারি চালিত। দেখা গেছে এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৪৩টি বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে। ২০২১-এ যেই অঙ্কটি ছিল ৭১।

প্রসঙ্গত, ২০২০-র ৭ আগস্ট দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বৈদ্যুতিক গাড়ি নীতি লঞ্চ করেন। ২০২৪-এর মধ্যে সেখানকার বিক্রিত যানবাহনের ২৫% বৈদ্যুতিক করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয় এই নীতিতে। এই প্রসঙ্গে এক সরকারি আধিকারিক জানান, “প্রাথমিক পর্যায়ে কেবলমাত্র বৈদ্যুতিক চার চাকার গাড়ির উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ইলেকট্রিক টু-হুইলারকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। কারণ দিল্লির রাস্তায় দু’চাকার গাড়ি বেশি চলাচল করে।” তিনি আরও বলেন, “গত বছর থেকে বৈদ্যুতিক যানবাহন বিক্রি বৃদ্ধির কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ি নীতি এখন দৃঢ়ভাবে রয়েছে এবং প্রতিশ্রুতি মতো সমস্ত ইন্সেন্টিভ চালু করা হয়েছে।”

অন্যদিকে, পাঁচ বছর আগে দিল্লিতে বিক্রি হওয়া মোট বৈদ্যুতিক যানবাহনের মধ্যে ৯৬.৭% ছিল ই-রিকশা অথবা মালপত্র টানার ই-কার্ট গাড়ি। ২০১৯-এ এর শতকরা ছিল ৯৩.৪%। ২০২০-তে তা কমে দাঁড়ায় ৮৩%। এ বছর দিল্লিতে বিক্রি হওয়া প্রতি চারটি বৈদ্যুতিক যানবাহনের মধ্যে একটি হল ই-রিকশা অথবা ই-কার্ট। উল্লেখ্য, হালে ইলেকট্রিক সাইকেল কিনলেও ইনসেন্টিভ দেওয়ার ঘোষণা করেছে দিল্লি সরকার।