Hyundai Ioniq 6: টেসলার আধিপত্যে থাবা বসাতে দুর্ধর্ষ ইলেকট্রিক গাড়ি নিয়ে এল হুন্ডাই, এক চার্জে 610 কিমি

একথা মানতে দ্বিধা নেই যে পরিবেশবান্ধব যানবাইনই ভবিষ্যৎ! যার মধ্যে সিংহভাগের অংশীদার ব্যাটারি চালিত গাড়ি। সমগ্র বিশ্বে বৈদ্যুতিক গাড়ির নবজাগরণের দামামা বেজে গিয়েছে। যার প্রভাব…

একথা মানতে দ্বিধা নেই যে পরিবেশবান্ধব যানবাইনই ভবিষ্যৎ! যার মধ্যে সিংহভাগের অংশীদার ব্যাটারি চালিত গাড়ি। সমগ্র বিশ্বে বৈদ্যুতিক গাড়ির নবজাগরণের দামামা বেজে গিয়েছে। যার প্রভাব প্রকট হয়েছে সমস্ত গাড়ি সংস্থাগুলির ইলেকট্রিক মডেলের পোর্টফোলিওতে। প্রায় রোজই নিত্য নতুন মডেল নিয়ে হাজির হচ্ছে কোনো না কোনো সংস্থা। তেমনই এবার দক্ষিণ কোরিয়ান সংস্থা হুন্ডাই (Hyundai) আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের প্রথম ইলেকট্রিক সেডান গাড়ি সর্বসমক্ষে নিয়ে এলো। যার নাম Ioniq 6। তাদের ফ্ল্যাগশিপ ইলেকট্রিক ক্রসওভার Hyundai Ioniq 5-এর উত্তরসূরি এটি। আমেরিকার Tesla এর সাথে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিচ্ছে Hyundai। ইলেকট্রিক গাড়ির জগতে ইলন মাস্কের সংস্থাকে টেক্কা দিতেই  Hyundai Ioniq 6-এর আগমন। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মার্কেট লঞ্চের দিনক্ষণ পরে এক সময় ঘোষণা হবে। এবার ইলেকট্রিক সেডানটির খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।

Hyundai Ioniq 6 রেঞ্জ এবং ব্যাটারি

হুন্ডাই আয়োনিক ৬ এক চার্জে ৬১০ কিলোমিটার পথ চলতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে। এতে ৪০০ ভোল্ট/৮০০ ভোল্ট মাল্টি চার্জিংয়ের সুবিধা থাকবে। রেঞ্জ যতটা সম্ভব বাড়তে এর অ্যারোডায়নামিক স্টাইলের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। হুন্ডাই আয়োনিক ৬ এর ব্যাটারি ৩৫০ কিলোওয়াট চার্জারের মাধ্যমে ১৮ মিনিটে ১০ থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ হয়ে যাবে বলে জোর দিয়ে জানানো হয়েছে।

Hyundai Ioniq 6 পাওয়ার এবং পারফরম্যান্স

মোটর ও ব্যাটারির ক্ষেত্রে একের বেশি বিকল্প দেবে আয়োনিক ৬। গাড়িটির ৭৭.৪ কিলোওয়াট আওয়ার ক্ষমতার লং রেঞ্জের ব্যাটারি দুটি ইলেকট্রিক মোটরের বিকল্পে আসতে পারে। অল হুইল ড্রাইভ (AWD) এবং রিয়ার হুইল ড্রাইভ (RWD) অপশনে বেছে নেওয়া যাবে। AWD ভার্সন থেকে ২৩৯ কিলোওয়াট শক্তি এবং ৬০৫ এনএম টর্ক উৎপন্ন হতে পারে। এটি ৫.১ সেকেন্ডে ঘন্টা প্রতি ০-১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে সক্ষম হবে।

ডুয়েল কালার অ্যাম্বিয়েন্ট লাইটিং

হুন্ডাই আয়োনিক ৬ এর অন্যতম আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল ডুয়েল কালার অ্যাম্বিয়েন্ট লাইটিং। সহজ ভাষায় বললে, বিভিন্ন রঙের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা গাড়ির কেবিনের লুক বদলাতে দেবে। মোট ৬৪ রকমের লাইটিংয়ের সাথে আসতে চলেছে গাড়িটি। যার মধ্যে আবার ৬টি প্রি-সিলেক্টেড থিম। অধিকন্তু এতে থাকছে একটি স্পিড সিঙ্ক লাইটিং মোড। যার কাজ গাড়ির গতিবেগ বুঝে আলোর উজ্জ্বলতা বাড়ানো অথবা কমানো।

ফিচার্স

হুন্ডাই আয়োনিক ৬ এর ফিচারের তালিকায় দেখা মিলবে  মডিউলার টাচস্ক্রিন ড্যাশবোর্ড। যেখানে একটি ১২ ইঞ্চি ফুল টাচ ইনফোটেইনমেন্ট ডিসপ্লে এবং একটি ১২ ইঞ্চি ডিজিটাল ক্লাস্টার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এতে উপস্থিত কানেক্টেড কার পরিষেবা গন্তব্যে পৌঁছানোর পথের সাথে চার্জিং স্টেশনে পৌঁছানোর সহজ রাস্তার হদিশ দেবে বলে দাবি করেছে হুন্ডাই। চওড়া স্ক্রিনের ডিসপ্লের সাথে এতে রয়েছে অ্যাপেল কারপ্লে এবং অ্যান্ড্রয়েড অটো টেকনোলজি। আটটি বোসের স্পিকার এবং একটি সাব উফার থাকবে। আবার নেভিগেশন সিস্টেমের সাথে থাকছে ব্লুলিঙ্ক ইনফোনটেনমেন্ট/ম্যাপ আপডেট।

সুরক্ষাজনিত ফিচারের মধ্যে অ্যাডভান্সড ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম সহ আসছে এটি। যার মধ্যে হাইওয়ে ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট ২ চলার সময় সামনের গাড়ির সাথে নির্দিষ্ট দূরত্ব এবং গতিবেগ বজায় রাখতে সাহায্য করবে। আবার স্মার্ট ক্রুজ কন্ট্রোল চালকের দ্বারা নির্ধারিত গতিবেগ মেনে সামনের গাড়ির সাথে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখবে। এছাড়াও রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে এতে রয়েছে ফরওয়ার্ড কলিশন অ্যাভয়েডেন্স অ্যাসিস্ট।

কালার অপশন

Hyundai Ioniq 6 মোট ১২টি রঙে উপলব্ধ হবে – গ্র্যাভিটি গোল্ড ম্যাট, অ্যাবিস ব্ল্যাক পার্ল, সেরেনিটি হোয়াইট পার্ল, কিউরেটেড সিলভার মেটালিক, নক্টার্ন গ্রে মেটালিক, নক্টার্ন গ্রে ম্যাট, ট্রান্সমিশন ব্লু পার্ল, বায়োফিলিক ব্লু পার্ল, আল্টিমেট রেড মেটালিক, ডিজিটাল গ্রীন পার্ল, ডিজিটাল গ্রীন ম্যাট এবং বাইট ব্লু। তবে চারটি রঙের কেবিন সহ বেছে নেওয়া যাবে গাড়িটি। যেগুলি হল – লাইট গ্রে-এর সাথে ডার্ক গ্রে, লাইট গ্রে-এর সাথে ডার্ক অলিভ গ্রীন, পেল ব্রাউন-এর সাথে ব্ল্যাক এবং ব্ল্যাক।