গোপনে স্মার্টফোনে দেখছেন নীল ছবি? এইসব অযাচিত সমস্যার মুখে পড়তে পারেন খুব সহজেই

ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোন নামক বস্তু দুটির সহজলভ্যতা সাধারণ মানুষের জীবনে যে বড়সড় পরিবর্তন এনেছে, তার সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু এগুলির কারণে সমাজ…

ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোন নামক বস্তু দুটির সহজলভ্যতা সাধারণ মানুষের জীবনে যে বড়সড় পরিবর্তন এনেছে, তার সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু এগুলির কারণে সমাজ যে বিপথে চালিত হচ্ছে, সেই বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়ার মত নয়! যেমন সস্তায় হাই স্পিড ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করা এবং কীবোর্ডের বদলে অ্যান্ড্রয়েড হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে, কয়েক বছর আগে থেকে ভারতে অ্যাডাল্ট কনটেন্ট বা অযাচিত ছবি-ভিডিও দেখার প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ এদেশে অ্যাডাল্ট কনটেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কেন্দ্র সরকার। অন্যদিকে, সরকারের নির্দেশে দেশের সব টেলিকম কোম্পানিও তাদের নেটওয়ার্কে প..গ্রাফি, চাইল্ড প..গ্রাফি ইত্যাদি ভিডিও ব্যান করে। নিষিদ্ধ হয় বহু ওয়েবসাইটও। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও মানুষ গোপনে এইসব কন্টেন্ট দেখতে ছাড়ে না। রিপোর্ট অনুযায়ী, নেটপাড়ার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই নীল ছবির প্রতি আসক্ত। কিন্তু এতে আইনি গেরো ছাড়াও যে আরো অনেক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, তা এইসব মানুষেরা বুঝে উঠতে পারেন না!

সাধারণত যারা ফোনে এই ধরণের অশ্লীল ভিডিও দেখেন তারা মনে করেন যে যেহেতু প্রাইভেট মোডে দেখছেন তাই গোটা বিষয়টি গোপন থাকছে; তাদের কীর্তি কেউ জানতে পারছে না। কিন্তু বাস্তবটা ঠিক উল্টো। আসলে কেউ যদি ইন্টারনেট বা ফোন ব্যবহার করে কোনো সাধারণ কন্টেন্ট দেখেন, তাহলে তার গতিবিধি ট্র্যাক নাও হতে পারে। কিন্তু কেউ যদি প.. দেখেন, তাহলে একই সময়ে হাজার হাজার এআই (AI) বটের চোখ থাকে সেই ইউজারের ওপর। কীভাবে? আসুন জেনে নেই এই ধরণের ট্র্যাকিং সম্পর্কে খুঁটিনাটি।

নীল ছবি দেখলে এভাবে আপনি ঝামেলায় পড়তে পারেন

প্রথমত, আপনি যখন এই ধরনের অযাচিত কন্টেন্ট দেখেন তখন আপনার মোবাইল সার্ভিস অপারেটর প্রথমে সেই তথ্য এবং আপনার ফোনে থাকা অ্যাপগুলি সম্পর্কে তথ্য পায়। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার মত আপনার ওপর নজরদারি চলে, যেখানে আপনার সম্পূর্ণ ব্রাউজিং হিস্ট্রিও ট্র্যাক করা হয়। স্ক্যান করা হয় আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলিও। এরপর ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কী বিষয়ের বিজ্ঞাপন দেখানো হবে তা ঠিক করা হয়। আর, আপনি যদি পর্ন বেশি দেখেন তাহলে শুধুমাত্র এই জাতীয় বিজ্ঞাপনই আপনাকে যত্রতত্র দেখানো হবে।

দু নম্বর অস্বস্তি হল ‘পেইড সার্ভিসে ফার্স্ট লুক’। যারা প.. দেখার জন্য টাকা দিতে ইচ্ছুক, এই ধরনের ট্র্যাকিংয়ে তারাই সবার আগে টার্গেট হন। পেমেন্টের সময় এই ধরনের ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ সংগ্রহ করা হয়। এতে ইউজারদের ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডের অপব্যবহারও হতে পারে।

এছাড়া কেউ যদি প.. সাইট ভিজিট করেন বা ফাইল ডাউনলোড করেন, তাহলে তাদের ফোনে ম্যালওয়্যার হামলার সম্পূর্ণ ঝুঁকি রয়েছে। ইউজারদের অজান্তেই ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে, তাদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি এবং ব্যক্তিগত ছবি সার্বজনীনভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হতে পারে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত ক্যাসপারস্কি ল্যাব (Kaspersky Lab)-এর একটি রিপোর্ট রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ওই সময় প্রায় ১.২ মিলিয়ন অ্যান্ড্রয়েড ইউজার প.. দেখার কারণে ম্যালওয়্যার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।

অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট ও ভারত সরকারের আইন

ভারত সরকারের আইন অনুযায়ী, এদেশে নীল ছবি/ভিডিও তৈরি করা, কোনো সাইটে তা আপলোড করা বা অন্য কোনো মাধ্যমে শেয়ার করা বেআইনি। এছাড়া শিশু প..গ্রাফির ওপরেও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অতএব আদিম রিপুর প্রভাবে অযাচিত ভিডিও দেখার আগে অবশ্যই দুবার ভাববেন!