Zomato Student: দুর্ঘটনায় আহত বাবা, সংসার চালাতে খাবার ডেলিভারি করতে শুরু করল ৭ বছরের ছেলে

বর্তমান ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়শই নতুন নতুন জিনিস ভাইরাল হয়। সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হল সাত বছরের এক বালকের চাঞ্চল্যকর একটি ভিডিও। Twitter (টুইটার)-এ…

বর্তমান ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়শই নতুন নতুন জিনিস ভাইরাল হয়। সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হল সাত বছরের এক বালকের চাঞ্চল্যকর একটি ভিডিও। Twitter (টুইটার)-এ ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি অ্যাপ, Zomato (জোম্যাটো)-র ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজ করতে দেখা গিয়েছে ওই ছেলেটিকে। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বাচ্চাটির বাবা, আর তাই সংসারের হাল ধরতে বাবার জায়গায় খাবার ডেলিভারির কাজে যোগ দিয়েছে ওই খুদে। বয়স মাত্র ৭ হলেও এই বয়সেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে একরত্তি ছেলেটি। যে বয়সে নিশ্চিন্তে খেলাধুলা এবং পড়াশোনা করে মহানন্দে জীবন কাটানোর কথা, সেই বয়সেই বাচ্চাটির কাঁধে এসে পড়েছে সংসারের বোঝা; আর তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে খাবার দেওয়ার কাজ বেছে নিতে হয়েছে তাকে। তবু এর মাঝেও সে স্কুলে যায়, পড়াশোনা করে।

সংসারের হাল ধরতে বাবার জুতোয় পা গলিয়ে Zomato-য় ডেলিভারি বয়ের কাজ করছে সাত বছরের বালক

রাহুল মিত্তল (Rahul Mittal) নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী (@therahulmittal) ছেলেটির জীবনের করুণ কাহিনী টুইটারে এক ভিডিও মারফত শেয়ার করেন, এবং তারপর এক নিমেষেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে ছেলেটি তার নাম জানায়নি, তবে বলেছে যে তার বয়স সাত বছর (কিন্তু পরবর্তীকালে জোম্যাটোর তরফ থেকে ছেলেটিকে ১৪ বছর বয়সী হিসেবে উল্লেখ করা হয়)। ওই খুদেটি আরও জানিয়েছে যে, তার বাবা এক দুর্ঘটনায় জখম হয়ে আপাতত ঘরবন্দী। তাই রোজগারের তাগিদে মাত্র ৭ বছর বয়সেই বাবার কাজ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে সে৷ রোজ সকালে সে স্কুলে যায়, এবং বিকেল অবধি পড়াশুনা করে; আর তারপর সন্ধ্যে ৬ টা থেকে প্রায় রাত ১১ টা পর্যন্ত সাইকেল চালিয়ে জোম্যাটোতে ডেলিভারি বয়ের কাজ করে।

খুদের করুণ কাহিনী শুনে চোখের কোণে জল নেটিজেনদের

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে রাহুল এবং বাচ্চাটির কথোপকথন চলাকালীন দেখা গিয়েছে যে, খুদেটির হাতে একটি অর্ধপূর্ণ চকলেটের বাক্স এবং পিঠে একটি ব্যাগ রয়েছে (সম্ভবত সেটিতেই সে ডেলিভারি করার জন্য খাবারগুলি বহন করে)। টুইটারে পোস্ট হওয়ার পর থেকে ভিডিওটি প্রায় ৯১,৩০০ টি ভিউ পেয়েছে। একরত্তি ছেলেটির এই করুণ কাহিনী পড়ে চোখ ভিজে গিয়েছে নেটিজেনদের। শিশুটির এই কঠিন পরিস্থিতিতে অনেকেই তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। সংসার চালানোর জন্য এই ছোট্ট বয়সেই তার কঠোর সংগ্রাম ও মনের জোর দেখে ছেলেটির ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন অনেকেই। তবে কেউ কেউ আবার শিশুশ্রমের প্রসঙ্গও তুলেছেন।

ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলল Zomato

এই গোটা ঘটনায় জোম্যাটো কর্তৃপক্ষও নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সংস্থার এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন যে, “ঘটনাটিকে আমাদের নজরে আনার জন্য আমরা নেট দুনিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ। যেহেতু বাচ্চাটি এত ছোটো বয়সে কাজ করছে, তাই অনেক আইন ভাঙ্গার পাশাপাশি শিশুশ্রমের প্রসঙ্গও উঠে আসছে। কিন্তু বাচ্চাটির পরিবার এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, সেকথা মাথায় রেখে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি না। বরং আমরা বাচ্চাটির পরিবারকে জোম্যাটো ফিউচার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তার পড়াশোনায় সাহায্যের জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। যেহেতু কিশোরটির বাবা দুর্ঘটনার পরে জোম্যাটোতে যোগদান করেন, তাই আমরা আমাদের সক্রিয় ডেলিভারি পার্টনারদের যে দুর্ঘটনাজনিত সহায়তা প্রদান করি, সেই সুবিধা তাকে দেওয়া যাবে না। কিন্তু এই ঘটনাটিকে একটি ব্যতিক্রম হিসেবে ধরে নিয়ে মানবিকতার কারণে আমরা আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে বাচ্চাটিকে যথাসম্ভব সাহায্য করব।”

তবে Zomato কর্তৃপক্ষের এই প্রতিশ্রুতি কি আদৌও বাস্তবায়িত হয়েছে? সেকথাও এক টুইট মারফত জানিয়েছেন রাহুল মিত্তল। নিজের করা পোস্টের রিপ্লাই করে রাহুল জানিয়েছেন, ছেলেটি অভিযোগ করেছে যে Zomato তার বাবার অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে, ফলে সেটি এখন কাজ করছে না। তবে ফুড-ডেলিভারি অ্যাপ কর্তৃপক্ষ ওই বাচ্চাটির পরিবারকে কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে, এবং একথাও জানিয়েছে যে তার বাবা সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিলেই অ্যাকাউন্টটিকে আনফ্রিজ করে দেওয়া হবে।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন