Oculus Rift: গেমে হেরে গেলে সত্যি সত্যি মৃত্যু ঘটবে প্লেয়ারের, নিজেই খেলতে ভয় পাচ্ছেন নির্মাতা

অবসর সময়ে গেম খেলতে কে না ভালোবাসে? বর্তমানে ইউজারদের এই বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে মার্কেটে প্রচুর সংখ্যক গেমের আবির্ভাব ঘটেছে। গেমারদের মধ্যে যদিও বেশিরভাগই…

অবসর সময়ে গেম খেলতে কে না ভালোবাসে? বর্তমানে ইউজারদের এই বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে মার্কেটে প্রচুর সংখ্যক গেমের আবির্ভাব ঘটেছে। গেমারদের মধ্যে যদিও বেশিরভাগই কম বয়সী, তবে অধিক বয়সের মানুষেরাও এখন নানাবিধ গেমে বুঁদ হয়ে থাকেন। অনেকেরই আবার গেম খেলার নেশা এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, সেটা তখন মাদকাসক্তির মতোই ক্ষতিকর হয়ে যায়। তবে সবমিলিয়ে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, মানুষের জীবনে একটু বিনোদনের সঞ্চার করতে আকর্ষণীয় গেমের ভূমিকা নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য। এর জন্য মার্কেটে একাধিক উন্নত টেকনোলজিরও আবির্ভাব ঘটেছে, যার সুবাদে গেমিং দুনিয়ায় প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে এক আমূল পরিবর্তন। কিন্তু সম্প্রতি এমন একটি চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, যা শুনলে সকলেই রীতিমতো বিস্মিত তথা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে যাবেন। এই রিপোর্ট থেকে অকুলাস রিফট (Oculus Rift)-এর নির্মাতা ও ডিজাইনার পামার লাকি (Palmer Luckey) কর্তৃক পরিকল্পিত লেটেস্ট ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি বা ভিআর (VR) হেডসেট সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথা হাড়হিম করা তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে যে, এটি এমন একটি হেডসেট হতে চলেছে যার সহায়তায় গেম খেলতে খেলতে গেমের মধ্যে মরে গেলে ইউজাররা বাস্তব জীবনেও মরে যাবেন!

আজ্ঞে হ্যাঁ, শুনে কিঞ্চিৎ অবিশ্বাস্য বলে মনে হলেও সত্যি সত্যিই আগামী দিনে মার্কেটে এমনই এক আশ্চর্যজনক হেডসেটের আবির্ভাব ঘটবে বলে দাবি করেছেন পামার লাকি। তিনি সম্প্রতি তার এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন যে, আসন্ন এই ভিআর হেডসেটটি বেশ শক্তিশালী হবে এবং ইতিমধ্যেই এটির অর্ধেক নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে মি. লাকি যা দাবি করছেন, তা যদি বাস্তবিকভাবে সত্য হয়, তাহলে এই হেডসেটটিকে একটি ‘মাস্টারপিস’ বললেও খুব একটা ভুল বলা হবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই চমকপ্রদ ডিভাইসটির নাম দেওয়া হয়েছে নার্ভগিয়ার (NerveGear)।

NerveGear ঠিক কীরকম হবে?

পামারের কথায়, নার্ভগিয়ার একটি সাধারণ হেডসেটের মতোই হবে, যেটিতে সর্বাধিক তিনটি এক্সপ্লোসিভ চার্জ থাকতে পারে। এই চার্জগুলিকে ফটোসেন্সরের সাথে লাগানো হবে। একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে স্ক্রিনে লাল ফ্ল্যাশ হলেই এই এক্সপ্লোসিভগুলি অ্যাক্টিভেট হবে – এই পরিকল্পনামাফিক গেম ডিজাইনাররা এই হেডসেটটিকে ডিজাইন করছেন। আর এই ফ্ল্যাশের তীব্রতা এবং এক্সপ্লোসিভের কার্যকারিতা এতটাই জোরালো এবং দুঃসহ হবে যে, গেম চলাকালীন কোনো প্লেয়ার ভার্চুয়ালি মারা গেলে তিনি বাস্তব জীবনেও বেঘোরে মারা যাবেন বলে দাবি করছেন পামার।

ভার্চুয়াল জগতে বাস্তব জীবনের অনুভূতি প্রদান করতেই বাজারে আসছে এই হেডসেট

পামার লাকি তার ব্লগ পোস্টে আরও জানিয়েছেন যে, চলতি সময়ে বাস্তব জীবনকে ভার্চুয়াল অবতারের সঙ্গে সংযুক্ত করার ধারণা থেকে তিনি ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত তথা মুগ্ধ হয়েছেন। ভার্চুয়াল দুনিয়ার সঙ্গে বাস্তব জীবনের এই মেলবন্ধন তাকে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, যার জেরেই আলোচ্য হেডসেটটিকে বাজারে আনার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। তার কথায়, এই হেডসেটটিকে ব্যবহার করে গেম খেললে ইউজাররা যাতে একদম রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স পেতে সক্ষম হন, তার জন্য গেমের গ্রাফিক্স খুবই দুর্দান্ত তথা উন্নত হওয়া দরকার। এবং এইসব বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই গেমের পাশাপাশি আলোচ্য হেডসেটটিকেও ডিজাইন করা হচ্ছে।

NerveGear লঞ্চ হলে গেমিং দুনিয়ায় ঘটে যাবে এক যুগান্তকারী আলোড়ন

সত্যি কথা বলতে গেলে, পামারের এই পরিকল্পনা যদি প্রকৃতপক্ষেই বাস্তবায়িত হয়, তাহলে গেমিং দুনিয়ার দীর্ঘ ইতিহাসে যে এক যুগান্তকারী আলোড়ন ঘটে যাবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বললেই চলে। তবে মি. লাকি যা দাবি করছেন, তার কোনো হাতেকলমে পরীক্ষা কি তিনি এখনও করে দেখেছেন? এর জবাবে তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি এখনও এই হেডসেটটি ব্যবহার করার সাহস পাননি। তবে হাতেনাতে কোনো পরীক্ষামূলক ফল না মিললেও তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা যে প্রবল, সে বিষয়ে চরম আশাবাদী তিনি। পামার বলেছেন যে, হেডসেটটিতে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে যার সহায়তায় ভার্চুয়াল গেমিং দুনিয়াকে বাস্তবে অনুভব করতে পারবেন গেমাররা, আর এর সুবাদেই গেমে কারোর মৃত্যু ঘটলে বাস্তবেও তিনি মারা যেতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এই ভয়াবহ পরিণতি এড়ানোর জন্য ডিভাইসটিতে একটি অ্যান্টি-টেম্পার মেকানিজম অ্যাড করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

এরকম বিপজ্জনক হেডসেট সরকারের তরফে নিষিদ্ধ করা উচিত বলে মনে করছেন অনেকেই

পামার আরও জানিয়েছেন যে, লঞ্চ হওয়ার পর যাতে কোনোভাবেই এই ভিআর হেডসেটটিকে নষ্ট না করে ফেলা যায়, তার জন্যও তিনি যথাযথ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অর্থাৎ সোজা কথায় বললে, একবার NerveGear মার্কেটে পা রাখলে কোনোভাবেই আর সেটিকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলা যাবে না। প্রসঙ্গত বলে রাখি, আপাতত এই ভিআর হেডসেটটি কল্পনার দুনিয়াতেই রয়েছে; তবে বাস্তবে এটির আগমন ঘট

লে গেমারদের জীবন যে কতটা ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখীন হয়ে যাবে, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই অধিকাংশ মানুষের মনেই নানাবিধ প্রশ্নের সঞ্চার ঘটেছে। অনেকেই দাবি করেছেন যে, এই জাতীয় বিপজ্জনক ভিআর হেডসেটকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের অবশ্যই চিন্তা করা উচিত। সেক্ষেত্রে সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে সত্যি সত্যিই আগামী দিনে মার্কেটে NerveGear নামক এই চমকপ্রদ গ্যাজেটটি পা রাখবে কি না, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।