BSNL এর ডাবল ধামাকা, একই বছরে চালু হচ্ছে 4G ও 5G পরিষেবা

একটা সময় ছিল, যখন ভারতে কবে 5G পরিষেবা রোলআউট হবে, সেই প্রশ্নই সবার মনে ঘোরাফেরা করতো। তবে ইদানীংকালে টেক মহলের চর্চিত বিষয়টি হল, এদেশে কবে…

একটা সময় ছিল, যখন ভারতে কবে 5G পরিষেবা রোলআউট হবে, সেই প্রশ্নই সবার মনে ঘোরাফেরা করতো। তবে ইদানীংকালে টেক মহলের চর্চিত বিষয়টি হল, এদেশে কবে Bharat Sanchar Nigam Limited বা BSNL-এর 4G এবং 5G সার্ভিস উপলব্ধ হবে? আসলে সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম সংস্থাটি একাধিকবার বেশ জোর দিয়ে বলেছে যে, ভারতে 4G এবং 5G পরিষেবা আনার জন্য তারা বর্তমানে জোরকদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ইতিমধ্যেই টেকপাড়ায় রটে গিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই ভারতে 4G ও 5G সার্ভিস চালু করতে চলেছে BSNL। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৩ সালেই আপামর দেশবাসীর কাছে এই সুখবরটি পৌঁছে যাবে। জানা গিয়েছে যে, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে ভারতে এই নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু করবে সংস্থাটি। সেক্ষেত্রে এই সার্ভিসের আগমন ঘটলে আপামর জনসাধারণ ঠিক কীভাবে উপকৃত হবেন, আসুন জেনে নিই…

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে 4G চালু করতে পারে BSNL

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে গোটা ভারত জুড়ে দুর্বার গতিতে ৫জি-র হাওয়া বয়ে চলেছে। দেশের একের পর এক শহরে ক্রমাগত পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিস চালু করছে ভারতের অন্যতম প্রধান দুই বেসরকারি টেলিকম অপারেটর Reliance Jio এবং Airtel। বছর ছয়েকের মধ্যে নেটওয়ার্ক জগতে রীতিমতো বিপ্লব এনে ফেলেছে কোম্পানি দুটি; সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএলের সার্ভিস কয়েক বছর আগে যে তিমিরে ছিল, এখনও সেই তিমিরেই আটকে আছে, যার ফলে গ্রাহকদের মনে ক্ষোভের অন্ত নেই। এমত পরিস্থিতিতে বেসরকারি কোম্পানিগুলির সাথে পাল্লা দিয়ে বাজারে টিকে থাকতে খুব শীঘ্রই গোটা দেশে ৪জি সার্ভিস চালু করার জন্য রীতিমতো উঠেপড়ে লেগেছে সংস্থাটি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw) সম্প্রতি সিআইআই বা কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (Confederation of Indian Industry)-র একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, সম্ভবত ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বিএসএনএল ৪জি চালু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আগামী বছরে এদেশে BSNL-এর 5G সার্ভিসের আগমন ঘটার সম্ভাবনা প্রবল

তবে এখানেই শেষ নয়, ৪জি চালু হওয়ার ৫ থেকে ৭ মাসের মধ্যে এদেশে ৫জি পরিষেবা নিয়েও হাজির হবে সংস্থাটি। বৈষ্ণবের মতে, আগামী ৫-৭ মাসের মধ্যে বিএসএনএল প্রায় ১.৩৫ লক্ষ ৪জি টাওয়ারকে ৫জি-তে উন্নীত করবে, এবং ২০২৩ সালের জুলাই বা আগস্ট মাস নাগাদ এদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির ৫জি পরিষেবার আগমন ঘটবে। অনেকেই অনুমান করছেন যে, আগামী বছরের ১৫ আগস্ট ভারতে সরকারি টেলিকম কোম্পানিটির ৫জি সার্ভিস লঞ্চ হতে পারে। সেক্ষেত্রে এই সকল পরিকল্পনা যদি সত্যি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এক বছরে দু-দুটি বহুপ্রতীক্ষিত তথা ধামাকাদার খবর পাবেন বিএসএনএল অনুরাগীরা। ফলে সংস্থার গ্রাহকদের জন্য খুব শীঘ্রই ‘আচ্ছে দিন’ আসতে চলেছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।

BSNL-এর 4G পরিষেবা এসে গেলে বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিগুলির ওপর থেকে প্রচুর চাপ কমে যাবে

আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, এদেশে বিএসএনএলের ৪জি এবং ৫জি পরিষেবা উপলব্ধ হলে শুধুমাত্র সংস্থার গ্রাহকরাই নয়, বরং আপামর জনগণ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। এখন নিশ্চয়ই আপনাদের মনে প্রশ্ন আসছে যে, কেন আমরা এরকম কথা বলছি? আসলে ব্যাপারটা হল, ভারতের কোটি কোটি মানুষকে টেলিকম পরিষেবা দেওয়ার জন্য বর্তমানে তিনটি বেসরকারি কোম্পানি (Reliance Jio, Airtel এবং Vodafone Idea বা Vi) মজুত রয়েছে। ইদানীংকালে দেশের অধিকাংশ মানুষই এই তিনটি সংস্থার ওপর নির্ভরশীল। তাই একটা সময়ে চুটিয়ে ব্যবসা করলেও উক্ত তিনটি অপারেটরের আগমনের পর থেকে বিএসএনএল বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে। তবে গত বছরের শেষের দিকে কোম্পানিগুলি তাদের রিচার্জ প্ল্যানের দাম কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়ায় এখন বহু মানুষ সরকারি টেলিকম সংস্থাটির হাত ধরতে বাধ্য হয়েছেন।

তবে যেহেতু এই মুহূর্তে সংস্থার ৪জি সার্ভিস উপলব্ধ নয়, তাই বিএসএনএলের ঢিমে তালের নেট পরিষেবা এখনও পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক জনগণকে খুশি করতে পারেনি। সেই কারণে এখনও বেসরকারি কোম্পানিগুলিই মানুষের প্রথম পছন্দ হিসেবে থেকে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে যদি সংস্থার ৪জি পরিষেবার আগমন ঘটে, তাহলে গ্রাহকরা তিনটি বেসরকারি কোম্পানি ছাড়াও আরও একটি বিকল্প পাবেন। এর ফলে একদিকে যেমন বিএসএনএলের ইউজারবেস বাড়বে, তেমনি অন্যদিকে বেসরকারি অপারেটরদের ওপর থেকেও প্রচুর পরিমাণে চাপ কমে যাবে; ফলে তাদের গ্রাহকরা আরও ভালো নেট পরিষেবা পেতে সক্ষম হবেন। উল্লেখ্য যে, ৫জি-র ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য (যদিও এখনও অবধি এদেশে ৫জি পরিষেবা চালু করতে পারেনি ভোডাফোন আইডিয়া)।

প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাসকারীরাও অতি অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন BSNL-এর 4G পরিষেবা

উল্লেখ্য যে, সাশ্রয়ী মূল্যে গ্রাহকদেরকে টেলিকম পরিষেবা প্রদান করার জন্য BSNL ইউজারমহলে বিশেষভাবে পরিচিত। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, বেশ কম খরচেই আগামী দিনে সংস্থার 4G এবং 5G সার্ভিস ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন গ্রাহকরা। টাটা (Tata)-র মালিকানাধীন তেজস নেটওয়ার্কস (Tejas Networks) BSNL-কে 4G ও 5G-র জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্টে টেলিকম সচিব কে রাজারামন (K Rajaraman) জানিয়েছেন যে, সরকারি টেলিকম কোম্পানিটির 4G সার্ভিস চালু হলে প্রতিটি গ্রামে হাই-স্পিড ব্রডব্যান্ড কানেকশন ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন ইউজাররা। সহজে বললে, BSNL-এর 4G-র আগমন ঘটলে প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাসকারী মানুষদেরকেও আর নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। সেক্ষেত্রে এবার কবে এদেশে সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানিটির 4G এবং 5G পরিষেবার আগমন ঘটবে, এখন সেটাই দেখার।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন