পুরানো iPhone কিনতে হুড়োহুড়ি, দাম উঠলো মার্সিডিজ বেঞ্জ SUV এর থেকেও বেশি

দুষ্প্রাপ্য, পুরোনো জিনিসের দাম বা কদর সবসময়ই বেশি হয়। কিন্তু পুরোনো হ্যান্ডসেটের ক্ষেত্রেও কি এই একই রীতি খাটে? সেক্ষেত্রে বলি, এই প্রশ্নের উত্তরও হ্যাঁ-ই হবে,…

দুষ্প্রাপ্য, পুরোনো জিনিসের দাম বা কদর সবসময়ই বেশি হয়। কিন্তু পুরোনো হ্যান্ডসেটের ক্ষেত্রেও কি এই একই রীতি খাটে? সেক্ষেত্রে বলি, এই প্রশ্নের উত্তরও হ্যাঁ-ই হবে, অন্তত সাম্প্রতিক খবর তাই বলছে। আসলে স্মার্টফোন এমন একটি জিনিস, যা নির্দিষ্ট দামে লঞ্চ হলেও সময়ের সাথে সাথে তার দাম কমতে শুরু করে। তবে আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাদেরকে এমন একটি iPhone-এর কথা বলতে চলেছি, যেটি প্রায় ১৬ বছরের পুরোনো হলেও বর্তমানে তার দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর একটু-আধটু নয়, দামটা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, শুনলে আপনাদের চোখ কপালে উঠতে বাধ্য!

উল্লেখ্য যে, বরাবরই আইফোনকে প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির হ্যান্ডসেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই বাজারে নতুন আইফোন এলেই তার দামকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে ট্রোল আর মিমের বন্যা বয়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কিডনি বিক্রি করে আইফোন কেনার কৌতুক। তবে আজকে আমরা আপনাদেরকে যে প্রাচীন আইফোনটির কথা বলতে চলেছি, সেটি কিনতে গেলে সত্যি সত্যিই কিডনি বেচতে হবে বৈকি; কারণ সম্প্রতি এই ফোনটিকে নিলামে তোলা হয়েছে, যেখানে এর সর্বোচ্চ দাম প্রায় পঞ্চাশ হাজার ডলার (প্রায় ৪১,৪২,৪৫০ টাকা) পর্যন্ত উঠবে বলে অনুমান করা হচ্ছে! উল্লেখ্য যে, এই দামে বিশ্বের একাধিক নামজাদা কোম্পানির দামি গাড়ি অতি অনায়াসে কিনে ফেলা যেতে পারে। কিন্তু ডিভাইসটির এত দাম হওয়ার পিছনে মূল কারণ কী? আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

পুরোনো এই iPhone-এর দাম শুনলে পাঠকদের চক্ষু হবে চড়কগাছ!

আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাদেরকে যে ফোনটির কথা বলতে চলেছি, সেটি হল ২০০৭ সালে লঞ্চ হওয়া আইফোন ৭ (iPhone 7)। লঞ্চের সময় হ্যান্ডসেটটির দাম ছিল ৫৯৯ ডলার (প্রায় ৪৯,৬২০ টাকা)। সম্প্রতি একজন ট্যাটু শিল্পী তার এই আইফোনটিকে নিলামে তুলেছেন। অকশন লিস্টিং ওয়েবসাইট অনুযায়ী, উক্ত ডিভাইসটির জন্য সর্বশেষ দরদাম হাঁকা হয়েছিল গত ১২ ফেব্রুয়ারি। এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ জন এই অতি প্রাচীন হ্যান্ডসেটটি কেনার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, এই আইফোনটির নিলাম চলবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে আপাতত এটির দাম উঠেছে প্রায় ১৮ হাজার ৫০৫ ডলার (প্রায় ১৫,৩২,৬৫০ টাকা); তবে আশা করা হচ্ছে যে, নিলামের শেষ পর্যায়ে ২০০৭ সালের এই ভিন্টেজ আইফোনটির দাম সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।

iPhone-টির এত দাম হওয়ার মূল কারণ কী?

এখন নিশ্চয়ই আপনারা ভাবছেন যে, ঠিক কী কারণে ক্রেতারা এত দাম দিয়ে আইফোনটি কেনার কথা ভাবছেন? আসলে ব্যাপারটা হল, ২০০৭ সালে লঞ্চ হওয়া সত্ত্বেও এই আইফোনটি এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি প্যাক করা রয়েছে। এমনকি এর বাক্সের প্লাস্টিকের কভারেও এতটুকু আঁচড় লাগেনি। উল্লেখ্য যে, এই আইফোনটি ট্যাটু শিল্পী ক্যারেন গ্রিনকে তার এক বন্ধু উপহার দিয়েছিলেন। তবে গ্রিন কোনোদিনই এই ফোনটিকে ব্যবহার করেননি, বরং গোটা বাক্সটিকে সযত্নে তুলে রেখে দিয়েছিলেন। কেননা তিনি যখন ফোনটি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন, তখন তার কাছে আগে থেকেই একটি নতুন কেনা ফোন মজুত ছিল। ফলে আলোচ্য আইফোনটি তার ব্যবহার করার প্রয়োজনই পড়েনি।

এত দাম দিয়ে কেনা সত্ত্বেও কিন্তু আলোচ্য iPhone-টি ব্যবহার করা যাবে না

আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, উক্ত আইফোনটিকে AT&T নেটওয়ার্ক থেকে লক করা হয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন আর কাজ করে না। এর অর্থ হল, বর্তমানে যিনি এই ফোনটি কিনবেন, তিনি ভবিষ্যতে কোনোদিনই এটিকে ব্যবহার করতে পারবেন না। এখন স্বাভাবিকভাবে নিশ্চয়ই আপনারা ভাবছেন যে, এত দাম দিয়ে ফোন কেনার পর যদি সেটিকে ব্যবহারই না করতে পারা যায়, তাহলে ক্রেতারা কেন একগাদা টাকা খরচা করে এই ডিভাইসটি কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন? সেক্ষেত্রে বলি, এই পৃথিবীতে অনেক সৌখিন তথা ধনবান মানুষ রয়েছেন, যারা বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য তথা পুরোনো জিনিস নিজেদের সংগ্রহে রাখতে ভালোবাসেন। তাই আলোচ্য স্মার্টফোনটিকে নিজের কাছে সযত্নে রাখতে চাইছেন, এমন খরিদ্দারের সন্ধান মেলাটা খুব একটা অসম্ভব ব্যাপার নয় বললেই চলে।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন