আঁধার কাটিয়ে আলোর রোশনাই দেশের গাড়ি শিল্পে, গত অর্থবর্ষে বিক্রির সমস্ত রেকর্ড ভেঙে চুরমার

বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি বাজারের নিরিখে চলতি বছর চতুর্থ থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভারত। থার্ড বয় জাপানকে টক্কর দেওয়ার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। এক কথায়…

বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি বাজারের নিরিখে চলতি বছর চতুর্থ থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভারত। থার্ড বয় জাপানকে টক্কর দেওয়ার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে করোনার পর থেকে এদেশে চার চাকার বিক্রি ছন্দে ফিরেছে। তবে তার পরিমাণ যে পুরনো সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে সেই ধারণা অনেকেরই ছিল না। সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যানে তেমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। যেখানে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ আর্থিকবর্ষে রিটেইল চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতে মোট ৩৬ লক্ষ যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হয়েছে। যা দেশের অটোমোবাইল শিল্পের ইতিহাসে এই প্রথম।

উল্লেখ্য, প্রাক করোনা অতিমারির সময় অর্থাৎ ২০১৮-১৯-এ সমগ্র ভারত ৩২ লক্ষ প্যাসেঞ্জার ভেহিকেল বিক্রির সাক্ষী থেকে ছিল। এতদিন সেটিই ছিল একটি অর্থবর্ষে সর্বাধিক বেচাকেনার পরিমাণ। কিন্তু ২০২২-২৩-এর বিক্রির সেটিকেও হার মানিয়েছে। ফেডারেশন অফ অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন বা ফাডা (FADA) সূত্রে দাবি, ২০২১-২২-এর তুলনায় গত অর্থবছরে ভারতে গাড়ি বিক্রি ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বলাই বাহুল্য, দেশে করোনা অতিমারির আবহে একাধিকবার লকডাউন জারি হওয়ার কারণে বিক্রিতে ব্যাপক ভাটা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল। যে কারণে গাড়ি কোম্পানিগুলির জোগান-শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি সেমিকন্ডাক্টর চিপের অপ্রতুলতা, বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অর্থনীতি খুলতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া শুরু করেছে। যে কারণে গাড়ির চাহিদায় উত্থান ঘটেছে, সেগুলি এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

নতুন গাড়ির লঞ্চ ও সেমিকন্ডাক্টর চিপের লভ্যতা বৃদ্ধি

২০২০ ও ২১-এ অতিমারির আবহে বহু সংস্থা তাদের নতুন মডেল লঞ্চের থেকে বিরত থেকেছিল। তাই একথা খুব ভালোই বোঝা গিয়েছিল যে, ২০২২-২৩-এ বাজারে গাড়ি লঞ্চের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। গত অর্থবর্ষে আপডেটেড মডেলের সাথে সাথে সম্পূর্ণ নতুন গাড়িরও দেখা মিলেছে। যা ক্রেতাদের গাড়ি ক্রয় করার প্রবণতাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছিল। এদিকে বাজারে সেমিকন্ডাক্টর চিপের জোগান বাড়ার ফলে কোম্পানিগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ডিলার এবং গ্রাহকদের গাড়ি কেনার হিরিক বাড়তে দেখা গেছে।

SUV মডেলের প্রতি আকর্ষণ

বিগত কয়েক মাস ধরে ভারতের এসইউভি গাড়ির সেগমেন্ট ফুলেফেঁপে উঠেছে। যার দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায় এ বছর মার্চে মাহিন্দ্রা ৩৬,০০০-এর বেশি এসইউভি মডেল বিক্রি করেছে। যা দেখে লোভাতুর মারুতি সুজুকি এপ্রিল ও মে মাসে পরপর দুটি এই জাতীয় মডেল লঞ্চ করতে চলেছে। এগুলি হল – Fronx ও Jimny। আবার এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই জাপানি সংস্থা হোন্ডা-ও। তারাও একটি মাঝারি আকারের এসইউভি তৈরিতে হাত লাগিয়েছে।

উৎসবের মরসুমে বিক্রি বৃদ্ধি

করোনা পরবর্তী বছর হিসেবে ২০২২-হল এমন এক বছর, যেখানে মহামারির তেমনভাবে কোনো প্রভাব পড়েনি। এমনটাই দাবি করেছে ফাডা। ফলে গত বছর উৎসবের মরসুমে ভারতীয় ক্রেতাদের মধ্যে গাড়ি কেনার প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন