অজান্তেই বিপদ ডেকে আনছেন, আপনার এই সব অভ্যাসে গাড়ির চরম ক্ষতি হতে পারে

আজকালকার দিনের আধুনিক গাড়িগুলিতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের পাশাপাশি অটোমেটিক সিস্টেম দেখতে পাওয়া যায়। এমনকি অটোমেটিক ট্রান্সমিশন সিস্টেম এর মধ্যেও রয়েছে আরও নানা ধরনের ভাগ- CVT, DCT…

আজকালকার দিনের আধুনিক গাড়িগুলিতে ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের পাশাপাশি অটোমেটিক সিস্টেম দেখতে পাওয়া যায়। এমনকি অটোমেটিক ট্রান্সমিশন সিস্টেম এর মধ্যেও রয়েছে আরও নানা ধরনের ভাগ- CVT, DCT এবং টর্ক কনভার্টার। তবে যত ধরনের গিয়ার বাজারে উপলব্ধ থাকুক না কেন ম্যানুয়ালের মজাই যেন আলাদা। তাছাড়াও সঠিকভাবে গাড়ি চালানো শিখতে হলে অবশ্যই ম্যানুয়াল গাড়িতে শেখা উচিত। উপরন্তু অটোমেটিক গিয়ারবক্সে চেয়ে ম্যানুয়াল গিয়ার যুক্ত গাড়িগুলির দাম বেশ খানিকটা কম। কিন্তু সমস্যা হল ম্যানুয়াল গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় শিক্ষানবিস চালকরা বেশকিছু গুরুতর ভুল করে ফেলেন। এই প্রতিবেদনে এমন চার অভ্যাসের কথা রইল, যার কারণে গাড়ির ক্ষতি হতে পারে।

ক্লাচ চেপে গাড়ি চালানো

সদ্য গাড়ি চালানো শেখা মানুষও ক্লাচের প্যাডেলকে অল্প চেপে রেখেই গাড়ি চালানোর চেষ্টা করেন। আবার অনেক সময় দক্ষ চালকরাও নিজের অজান্তেই এই ভুল করে ফেলেন। এর ফলে ক্লাচ প্লেটের উপর প্রবল চাপ পড়ায় তা সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি ক্লাচ প্লেট সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে অনেক সময়। তাই প্রতিমুহূর্তে ক্লাচ পরিবর্তনের পর প্যাডেলের উপর থেকে পা সরিয়ে গাড়ির মেঝেতে রাখা উচিত। এই সুঅভ্যাস করার ফলে ক্লাচের আয়ু যেমন বাড়বে বহুদিন তেমনই গাড়ির ইঞ্জিন সঠিকভাবে কর্মক্ষম হতে পারবে।

ক্লাচ সম্পূর্ণ না চেপে গিয়ার পরিবর্তন

এটি আরও একটি খুব বড় ভুল করে ফেলেন অনেকে। ম্যানুয়াল গাড়ি চালানোর সময় প্রতিমুহূর্তে ব্রেক, ক্লাচ, এক্সেলেটর, গিয়ার এই সমস্ত কিছুর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হয়। গাড়ি চালকরা অনেক সময়ই ভুলবশত ক্লাচের প্যাডেল সম্পূর্ণ না চেপেই গিয়ার পরিবর্তন করেন। মনে রাখবেন ক্লাচ চাপার ফলে গিয়ারের সঙ্গে লাগানো যে দাঁতের মতো অংশগুলি থাকে সেগুলি সহজেই একটি ঘাট থেকে পরিবর্তন হয়ে অন্য ঘাটে যেতে পারে। আর এভাবেই পরিবর্তন হয় গিয়ারের। সেই কারণেই ক্লাচ সম্পূর্ণ না চেপে গিয়ার পরিবর্তন করলে ট্রান্সমিশন সিস্টেমের মধ্যে প্রবল ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন এমন চলতে থাকলে পুরো ট্রান্সমিশন সিস্টেম খারাপ হয়ে যেতে পারে, যা মেরামত করা যথেষ্ট খরচা সাপেক্ষ।

ইঞ্জিন ব্রেকের ব্যবহার

উচ্চগতিতে চলার সময় আচমকাই যদি গিয়ার বদলে এক বা দুইতে নিয়ে আসেন তবে ইঞ্জিন সেই উচ্চ আরপিএমকে একপ্রকার বল প্রয়োগ করে কমিয়ে আনে। একেই বলা হয় ইঞ্জিন ব্রেক। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এমন ব্রেকের ব্যবহার করলেও দীর্ঘদিন ধরে করা অনুচিত কাজ। এর ফলে কিন্তু ইঞ্জিনের উপর অত্যাধিক বেশি চাপ প্রয়োগ হয়। তাই প্রতি মুহূর্তে গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবশ্যই গাড়ির ব্রেকের ব্যবহার করুন। যদি কোনো কারনে ব্রেক ফেল করে কিংবা ক্রুজ কন্ট্রোল সিস্টেম কাজ করা বন্ধ করে দেয় অথবা পাহাড়ি রাস্তায় নিচের দিকে নামতে হয় এমন পরিস্থিতিতেই ইঞ্জিন ব্রেকের ব্যবহার করুন।

ইঞ্জিনের সক্ষমতার বেশি গতিতে গাড়ি চালানো

এই মারাত্মক ভুলটি বেশিরভাগ কম বয়সী গাড়ি চালকরা করে ফেলেন। অন্য কোনো উচ্চ সক্ষমতার ইঞ্জিন সম্পন্ন গাড়ির সঙ্গে রেস করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন নিজের গাড়ির। সাধারণভাবে তৈরি করা গাড়িগুলির ইঞ্জিন একটি নির্দিষ্ট আরপিএম পর্যন্তই সঠিকভাবে কর্মক্ষম থাকতে পারে। তার বেশি গতিতে চালানোর চেষ্টা করলে ইঞ্জিন থেকে যে কর্কশ শব্দ উৎপন্ন হয় তা শুনতে কারোর ভালো লাগলেও ইঞ্জিনের স্বাস্থ্যের জন্য কিন্তু বিপদজনক। দীর্ঘদিন এমন বদ অভ্যাসের কারণে ইঞ্জিনে বড়োসড়ো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই কারণে আজকালকার দিনে অনেক গাড়ি নির্মাতা স্পিড লিমিটার লাগিয়ে থাকেন।