সোশ্যাল মিডিয়ার হাতছানি! ইচ্ছে করে প্লেন ক্র্যাশ করে ২০ বছরের জন্য জেলে গেলেন ইউটিউবার

সোশ্যাল মিডিয়া এখন যেভাবে আট থেকে আশি সবার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছে, তাতে জীবনে নানা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে বারবার দাবি করা হচ্ছে। ঘণ্টার পর…

সোশ্যাল মিডিয়া এখন যেভাবে আট থেকে আশি সবার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছে, তাতে জীবনে নানা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে বারবার দাবি করা হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নেশাগ্রস্তের মত এইসব প্ল্যাটফর্মে সময় কাটানো, মানসিক অস্থিরতা বা অ্যাংজাইটি বৃদ্ধি, শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা ইত্যাদি নানা সমস্যা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেচ্ছাচার চালানো, হালফিলের একটি নতুন ট্রেন্ড বললে ভুল হবেনা। এখন প্রায়ই দেখা যায়, কিছু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা এবং ভিউ পেতে যা খুশি পোস্ট করেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সমস্ত সীমা অতিক্রমও করে ফেলেন। কিন্তু তাই বলে কি কেউ শুধুমাত্র এইরকম জনপ্রিয়তার জন্য জীবন বিপদে ফেলতে পারে? বিশেষ করে কোনো বিমানের পাইলট? এই একবিংশ শতাব্দীতে সেই উত্তরটাও হ্যাঁ-বাচকই হবে।

এক পাইলট ইচ্ছে করে প্লেন ক্র্যাশ করেছেন

আসলে ক্যালিফোর্নিয়ার লম্পোক নিবাসী এক ২৯ বছর বয়সী ব্যক্তি যার নাম ট্রেভর ড্যানিয়েল জ্যাকব (Trevor Daniel Jacob), ২০২১ সালের ২৪শে নভেম্বর নিজের বিমান ইচ্ছে করে ক্র্যাশ বা টেক অফ করার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি প্যারাসুট ব্যবহার করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখেন এবং ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে পুরো ঘটনাটি শুট করেছিলেন। এক্ষেত্রে বিমানটিকে তিনি একটি শুকনো ঝোপঝাড়পূর্ণ এলাকায় ধ্বংস করে ফেলেন। এরকম পদক্ষেপের কারণ? ইউটিউব (YouTube)-এ ভিউ পাওয়া এবং মানুষের চর্চায় উঠে আসা। তবে দু বছর আগের কুকীর্তির জন্য এবার ট্রেভর কড়া শাস্তি পেয়েছেন!

দু-বছর আগের ঘটনায় শাস্তি পেয়েছেন ব্যক্তি

ট্রেভর, ২০২১ সালের ওই দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ইউটিউবে ‘আই ক্র্যাশড মাই এয়ারপ্লেন’ (I crashed my airplane) শিরোনাম দিয়ে আপলোড করেন। এরকম অদ্ভূত বিষয়বস্তুর কারণে স্বাভাবিকভাবেই ভিডিওটি বেশ ভাইরাল হয় এবং ওই ব্যক্তি সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি মোটা টাকা পেতেও সক্ষম হন। কিন্তু, ভিডিওটি ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনেরও (FAA) নজরে আসে এবং তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। এরপরেই ট্রেভর ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান ক্র্যাশ করার এবং সেটির ধ্বংসাবশেষ ধ্বংস করার কথা স্বীকার করেন। এর শাস্তি হিসেবে তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়

সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার নেশা যে কীভাবে মানুষকে বিপথে চালিত করে এবং তাদের সমস্ত বোধ-বুদ্ধিতে অসাড় প্রভাব ফেলে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ ট্রেভরের এই হঠকারি কীর্তিটি। তার প্লেন ক্র্যাশের এই পদক্ষেপ থেকে সমূহ বিপদ হতে পারতো। কিন্তু ওই যে, এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের আত্মসম্মান এবং মূল্যবোধের বিসর্জন দেওয়াই বোধহয় ট্রেন্ডে পরিণত হচ্ছে।