আশা ছাড়তে নেই! অনলাইনে কেনা জিনিস 4 বছর পর ডেলিভারি পেলেন ক্রেতা

এখনকার স্পিড-ডেলিভারির যুগে পার্সেল হাতে পেতে ৪ দিনও অপেক্ষা করতে হয় না। কিন্তু ধরুন যদি আপনার অর্ডার করা প্রোডাক্টটি যদি ৪ দিনের জায়গায় ৪ বছর…

এখনকার স্পিড-ডেলিভারির যুগে পার্সেল হাতে পেতে ৪ দিনও অপেক্ষা করতে হয় না। কিন্তু ধরুন যদি আপনার অর্ডার করা প্রোডাক্টটি যদি ৪ দিনের জায়গায় ৪ বছর পর বাড়িতে এসে হাজির হয় তাহলে কেমন লাগবে? ভাবছেন মজা করছি তাই তো? না একদমই মজা করছি না, বাস্তবে এক ব্যক্তির সাথে এমনটা ঘটেছে। ঘটনাটি খুলে বলি তাহলে। আজ থেকে ৪ বছর আগে ভারতীয়দের কাছে সস্তায় ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য কেনার অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস ছিল AliExpress। কিন্তু কোভিড-১৯ চলাকালীন চীন ভিত্তিক এই রিটেল ওয়েবসাইটটিকে এদেশে নিষিদ্ধ করা হয়। যারপর থেকে আলোচ্য সাইটটি আর ভারতীয়দের জন্য উপলব্ধ ছিল না। কিন্তু করোনা অতিমারী এদেশে আছড়ে পড়ার আগে পর্যন্ত সরাসরি চীন থেকে পণ্য আনানোর সুযোগ থাকায়, দিল্লি-ভিত্তিক এক ব্যক্তি ২০১৯ সালে AliExpress থেকে একটি পণ্য অর্ডার করেছিলেন। যার পর পার্সেলটি তার হাতে এসে পৌঁছায়ও বটে, কিন্তু দীর্ঘ চার বছর পর।

নিতিন আগরওয়াল নামের এক প্রযুক্তিবিদ সম্প্রতি টুইটারে তার সাথে ঘটে যাওয়া একটি মজাদার তথা বিস্ময়কর ঘটনার কথা শেয়ার করেছেন। তিনি টুইট করে জানান যে, ২০১৯ সালে আলী বাবা কোম্পানি মালিকানাধীন অনলাইন রিটেল সার্ভিস প্রদানকারী পোর্টাল ‘আলীএক্সপ্রেস’ (AliExpress) থেকে তিনি একটি প্রোডাক্ট অর্ডার করেছিলেন। যারপর ২০২০ সালে কোভিড-১৯ অতিমারী ভারতে হানা দেয় এবং প্রায় সমকালীন সময়ে আলীএক্সপ্রেস -কে কেন্দ্রীয় সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যান করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও কিন্তু নিতিন তার পার্সেল হাতে পায় না। এমত অবস্থায়, অর্ডার করা প্রোডাক্টটি আর পাবেন না বলেই ধরে নিয়েছিলেন পোস্টদাতা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, দীর্ঘ চার বছর পর অবশেষে তার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পার্সেলটি।

নিতিনের টুইটে বলেন – “কখনও আশা হারাবেন না! আমি ২০১৯ সালে আলিএক্সপ্রেস (বর্তমানে ভারতে নিষিদ্ধ) থেকে একটি প্রোডাক্ট অর্ডার দিয়েছিলাম এবং আজ পার্সেলটি ডেলিভারি করা হল।” যদিও আগরওয়াল পণ্যের বিবরণ বা ডেলিভারি করতে এতো দেরি কেন হয়েছে সেই বিশদ প্রকাশ করেননি। তবে তার সাথে ঘটে যাওয়া এই অনলাইন শপিংয়ের ঘটনা বিশেষভাবে ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়।

নিতিনের করা পোস্টটিতে অন্যান্য টুইটার ব্যবহারকারীরাও তাদের প্রতিক্রিয়া ও অনুরূপ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন কমেন্ট বক্সে। যেমন এক ব্যক্তি লিখেছেন যে, “আমি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দুটি পণ্যের অর্ডার দিয়েছিলাম। তাই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আশা করতেই পারি যে সেই পার্সেলও একদিন না একদিন ডেলিভার করা হবে।” আবার অপর একজনের প্রতিক্রিয়া – “কিভাবে? আমি ২০১৭-১৯ সালের মধ্যে প্রোডাক্ট অর্ডার করেছিলাম এবং তার জন্য টাকাও পরিশোধ করে দেওয়া হয়, তাও আমার পার্সেল আটকে গেছে।”

জানিয়ে রাখি, করোনা-কালীন সময়ে অর্থাৎ ২০২০ সালের জুন মাসে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারত সরকার AliExpress সহ মোট ৫৮টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল। আর এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আজ অবধি ভারতীয় ক্রেতারা আলোচ্য রিটেল প্ল্যাটফর্ম থেকে কোনোভাবেই পণ্য কেনার বিকল্প পাচ্ছেন না। যদিও ভারতে আলীএক্সপ্রেস থেকে অর্ডার করার কয়েকটি বিশেষ উপায় এখনও বিদ্যমান আছে। আপনি যদি আগ্রহী থাকেন তবে নিচে দেওয়া পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করতে পারেন –

১. প্রথম উপায় হল একটি থার্ড পার্টি সার্ভিস অ্যাপ ব্যবহার করা, যারা আলীএক্সপ্রেস থেকে এদেশে পণ্য পাঠাতে পারে৷ এই ধরণের সার্ভিস অ্যাপগুলি থেকে জিনিস আনানোর জন্য আপনাকে একটা নির্ধারিত পরিমাণ সার্ভিস ফি চার্জ দিতে হবে। তবে কিছু পরিমাণ অতিরিক্ত টাকা খরচ করার পরিবর্তে নিশ্চিতভাবে আপনি আলীএক্সপ্রেস থেকে সস্তা তথা ভারতে উপলব্ধ নয় এমন প্রোডাক্ট আনাতে পারবেন।

২. ভারতে আলীএক্সপ্রেস থেকে অর্ডার করার আরেকটি উপায় হল VPN ব্যবহার করা। জানিয়ে রাখি, VPN কিন্তু আপনার ডিভাইসের আইপি অ্যাড্রেস মাস্ক করতে সক্ষম। আর এটি আপনার যথাযথ অবস্থানও সনাক্ত করতে সমর্থ, সে আপনি যে দেশেই থাকুন না কেন। যাইহোক এটি আপনাকে আলীএক্সপ্রেসের সাইট অ্যাক্সেস করতে এবং এখন থেকে কেনাকাটা করতে দেবে।

দ্রষ্টব্য : একটা বিষয় আপনাদের জানিয়ে রাখা খুবই দরকার। ভারত সরকার নিষিদ্ধ অ্যাপগুলি অ্যাক্সেস করার জন্য VPN ব্যবহার করতে বারংবার বারণ করেছে। কেননা VPN ব্যবহার করলে আপনার ব্যক্তিগত ডেটা অসুরক্ষিত হয়ে পড়তে পারে। এছাড়া VPN -এর মাধ্যমে ব্যান হওয়া অ্যাপ ব্যবহার করলে আপনি শাস্তি পেতে পারেন।