বর্তমানে স্মার্টফোন (Smartphone) আসক্তি আমাদের সমাজের একটি বড় সমস্যা। অনেকেই আছেন যখন আমাদের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে মন দেওয়া দরকার, তখন তারা ক্রমাগত নিজের ফোন চেক করতে থাকেন। এর ফলে সঠিকভাবে সেই কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন না। শুধু মাত্র প্রাপ্তবয়স্ক নয় এখন শিশু থেকে কিশোর সকলের মধ্যে এই সমস্যাটি দেখা যায়। আর বেশির ভাগ কিশোর-কিশোরীরা প্রায়ই তাদের স্কুলের কাজের প্রতি মনোযোগ না দিয়ে ফোনের প্রতি আগ্রহ দেখায়। ফলে ক্রমাগত তাদের সার্বিক শিক্ষা ব্যাহত হয়। সম্প্রতি ডাচ সরকার (Dutch Government) এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা জানিয়েছে জানুয়ারী ২০২৪ থেকে, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং স্মার্টওয়াচগুলি নেদারল্যান্ডের শ্রেণীকক্ষে নিষিদ্ধ করা হবে। সরকার আশা করছেন যে, এই পদক্ষেপের ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দেবে।
ডাচ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন স্কুল এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি মিলিত হয়ে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ডাচ শিক্ষামন্ত্রী রবার্ট ডিজকগ্রাফ এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, “শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতে এবং তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ ফিরিয়ে আনার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজনীয়।” তিনি আর জানান, “শিক্ষার্থীদের জন্য মোবাইল ফোন সমস্যাজনক, তাই সকলে মিলে স্মার্টফোনের কবল থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে হবে।”
তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোনের ব্যবহার করতে পারবে। রাজ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ডিজিটাল দক্ষতার পাঠের জন্য বা চিকিৎসা পরিস্থিতি বা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষে এই ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করা যেতে পারে। আর সরকারের এর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য স্কুলগুলি দায়ী থাকবে। ২০২৪ সালে বিশ্বের মধ্যে যদি এই নিষেধাজ্ঞা ফলপ্রসূ না হয় তাহলে অন্য নিয়ম অনুসরণ করা হবে।
ডাচ স্কুল গুলিতে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করার নিয়ম নুতন হলেও বিশ্বের অন্যান্য অনেক অংশে ইতিমধ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা লাগু হয়েছে। কমন সেন্স মিডিয়ার মতে, একটি কিশোর বা কিশোরী গড়ে প্রত্যেকদিন সাত ঘন্টা বাইশ মিনিট মোবাইল ফোনে ব্যয় করে। এর মধ্যে বেশিরভাগই সোশ্যাল মিডিয়া, টেক্সটিং, গেমিং, ভিডিও, বিভিন্ন অ্যাপে সময় ব্যয় করে থাকে। উল্লেখ্য, সিডিসি সুপারিশ করেছে যে, ৫-১৭ বছর বয়সী শিশু এবং কিশোর কিশোরীরা তাদের অনেকটাই সময় স্ক্রিনে অতিবাহিত করে, তাই তাদের স্ক্রিনটাইম যেন প্রত্যেক দিন দুই ঘন্টার জন্য সীমিত করে দেওয়া হয়।