Gaming: ইন্টারনেট না থাকায় বাড়ি ছেড়ে পালালো ছেলে, গেমিংয়ের নেশা ভয়ংকর, কি বলছেন ডাক্তার

বেশির ভাগ গেমাররা দৈনন্দিন জীবনে একঘেয়েমি কাটানোর জন্য Gaming-কে আপন করে নেয়। আর এই কাজটি তারা সেই সময় করে যখন তারা কোনো কাজ করে না…

বেশির ভাগ গেমাররা দৈনন্দিন জীবনে একঘেয়েমি কাটানোর জন্য Gaming-কে আপন করে নেয়। আর এই কাজটি তারা সেই সময় করে যখন তারা কোনো কাজ করে না বা বাড়িতে বিশ্রাম করে। তবে কথায় আছে কোনো কিছুরই বেশি ভালো নয়। আর তাই এই গেমিং ততক্ষণই ভালো যতক্ষণ এটি উপভোগের পর্যায়ে থাকে। তবে কখনো যদি এটি আসক্তিতে পরিণত হয় তাহলে এর ফল হতে পারে ভীষণই ভয়াবহ। বর্তমান দিনে শুধু বড়দের মধ্যেই নয়, শিশু থেকে তরুণ যুবক-যুবতীদের মধ্যেও এই আসক্তি প্রবলভাবে দেখা দিচ্ছে।

এই বিষয়ে কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

এই বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হলেন হেনরিয়েটা বাওডেন জোন্স। যিনি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সেন্টার ফর গেমিং ডিসঅর্ডারের পরিচালক। আর এটি একটি এমন জায়গা যেখানে ভিডিও গেমিং-এ আসক্ত মানুষের চিকিৎসা করা হয়।

২০২০ সালে এই ন্যাশনাল সেন্টার ফর গেমিং ডিসঅর্ডার নামের ক্লিনিকটি শুরু হয়। যদিও সেই সময় তারা প্রতিবছর পঞ্চাশটি রোগী দেখতে পারবেন সেই আশাও করেননি। কিন্তু বর্তমানে তাদের পেশেন্টের সংখ্যা ৮০০-রও বেশি।

হেনরিয়েটা, দ্য গার্ডিয়ান নামের একটি আর্টিকেলে লিখেছেন, এই ক্লিনিকের শুরুর পর থেকেই তিনি গেমিংয়ে আসক্ত অগণিত পেশেন্ট দেখেছেন। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটা পেশেন্টের আচার-আচরণ আলাদা হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু পেশেন্টের সাথে কিভাবে তারা আচরণ করবেন , সেই বিষয়ে আগে থেকে তাদের কোনো প্রস্তুতি নেওয়া ছিল না। তবে পরবর্তীকালে কিভাবে তাদের সামলাতে হবে সে বিষয়ে ধারণা হয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে হয়। আর তারা অনলাইনে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটানোর ফলে পরিবার এবং বন্ধুদের থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে শুরু করে। এবং বাড়িতে বসে গেম খেলায় বেশি সময় দিতে শুরু করলে স্কুলের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে দূরত্ব তৈরি হয়। আর এই দূরত্বটা যখন চরম হয়ে ওঠে তখন দেখা যায় তারা আর বাবা মার সাথে বসে খাবার খেতে চায় না, বা একসাথে কোনো রকম কাজ করতেও চায় না।

গেমিংয়ে আসক্তির ফলে কিছু কিছু বাচ্চারা আবার বাড়ির ভিতরেই হিংস্র হয়ে ওঠে এবং স্কুল যেতেও রাজি হয় না। এমন সময় পিতা-মাতারা যদি সন্তানের থেকে গেমিং ডিভাইসগুলি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে শিশুরা বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি ও তর্ক শুরু করে। এমনকি তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার মতন পদক্ষেপ অবলম্বন করতে পারে।

তিনি বলেছেন, তারা দেখেছেন বাড়িতে রাত্রে ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করে দেওয়ার পর ছোট বাচ্চারা ওয়াইফাই কানেকশন খোঁজার জন্য মাঝরাতে বাড়ি থেকে পালিয়েও গেছে।

আবার তিনি এমন বাচ্চাও দেখেছেন, যারা মনে করেছে যে, তারা যদি গেম না খেলে তাহলে তারা মারা যেতে পারে। কিছু কিছু বাচ্চা আবার রাগের কারণে বাড়ির দরজা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভেঙে ফেলেছে। আর যার ফলে অনেক সময় তারা নিজেও আহত হয়েছে এবং অন্য ব্যক্তিকেও আহত করেছে।

তাই Gaming-এর প্রতি আসক্তি একটি গুরুতর বিষয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এর মাধ্যমে বিনোদন পাওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত এটি ঠিক আছে। কিন্তু একবার এটি আসক্তিতে পরিণত হলে অবিলম্বে এর চিকিৎসা করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। বর্তমানে ভারতবর্ষেও শিশুদের মধ্যে গেমিং-এর প্রতি আকর্ষণ দেখা যাচ্ছে। আর এই গেমিং শুধু শিশুদেরই নয়, শিশুর পাশাপাশি তার পরিবারেরও গুরুতর ক্ষতি করে চলেছে।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন