ফের কর ফাঁকি সংক্রান্ত চাপের মুখে Xiaomi, Oppo, Vivo, গরমিল 8 হাজার কোটি টাকার

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত, চীন দুই পাশাপাশি দেশের মধ্যে সম্পর্ক বেশ তিক্ত হয়েছে। ২০২০ সালের জুনের সীমান্ত উত্তেজনা দিয়ে এর সূত্রপাত হলেও জল গড়িয়েছে বহুদূর –…

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত, চীন দুই পাশাপাশি দেশের মধ্যে সম্পর্ক বেশ তিক্ত হয়েছে। ২০২০ সালের জুনের সীমান্ত উত্তেজনা দিয়ে এর সূত্রপাত হলেও জল গড়িয়েছে বহুদূর – চীনা অ্যাপ ব্যান, চীনা প্রোডাক্ট আমদানির ওপর বিধি-নিয়ম জারি ইত্যাদি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে মোদী সরকার। শুধু তাই নয়, এদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলিও কেন্দ্রের নজরে এসেছে। বিগত প্রায় এক দশক ধরে Xiaomi, Oppo, Vivo-র মতো যে কোম্পানিগুলির বিভিন্ন হ্যান্ডসেট সাধারণ মানুষের রোজদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে, সেই চীনা মোবাইল নির্মাতাদের বিরুদ্ধেই উঠেছে কর ফাঁকির অভিযোগ। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে যে এইসব সংস্থা সবার অগোচরে ভারতে উপার্জিত টাকা ভুলভাবে বিদেশে পাঠাচ্ছে। এমনকি এই কারণে বেশ কিছু মাস ধরে এদের বিরুদ্ধে তদন্তও চালানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে Xiaomi, Oppo-রা বারবার এই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও, এবার এই বিষয়টি নিয়ে আবার চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি সরকার, সংসদে এই কোম্পানিগুলির কর ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি আবার তুলে ধরেছে; একইসাথে কর সংক্রান্ত একটি পরিসংখ্যানও পেশ করা হয়েছে।

ট্যাক্স না দিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করছে চীনা সংস্থাগুলি?

সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে বলা যায়, শাওমি, ওপ্পোর মতো কোম্পানিগুলি ভারতে ব্যবসায়িক লোকসান দেখিয়ে বা তাদের লাভ-আয়ের সঠিক অঙ্ক প্রকাশ না করে ট্যাক্স সাশ্রয় করছে। এছাড়াও তারা কোনোভাবে বিদেশে সেই সাশ্রয় করা টাকা পাঠাচ্ছে। এমতাবস্থায় চীনা কোম্পানিগুলি এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, সরকার এই বিষয়ে সংসদকে জানিয়েছে যে শাওমি, ওপ্পো এবং ভিভো – তিনটি কোম্পানি ভারত সরকারকে ৬ বছরে প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে। যদিও এর মধ্যে প্রায় ১,০২৫ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

সরকার প্রদত্ত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বলা যায়, শাওমি, ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৬৫৩ কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে, যেখানে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এবং ২০২২ সালে এই পরিমাণ যথাক্রমে ২৩.৯৯ কোটি টাকা এবং ৪.৬১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে ওপ্পো, গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মোট ৪,৪০৩ কোটি টাকার
কর ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। একই দোষে দোষী ভিভো, ওয়ানপ্লাস (OnePlus), রিয়েলমি (Realme), টেকনো (Tecno), ইনফিনিক্স (Infinix)-এর মতো ব্র্যান্ডও। তবে জানিয়ে রাখি, বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ব্র্যান্ডের জায়গা দখলকারী শাওমি এক্ষেত্রে ১৩,৩০,১৪৩ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।

সরকারি তদন্তের প্রভাব পড়েছে Xiaomi-দের ব্যবসায়

চাইনিজ মোবাইল কোম্পানিগুলি কর ফাঁকির অভিযোগ নস্যাৎ করে বারবার এটাই বলে আসছে যে, তাহলে তারা সম্পূর্ণরূপে ভারতের স্থানীয় নিয়ম-কানুন মেনে চলে। সেক্ষেত্রে সরকারি রিপোর্ট তো অন্য কথা বলছেই, পাশাপাশি এই বিষয়টির জেরে সংস্থাগুলির এদেশের ব্যবসাতেও বেশ বড়রকম প্রভাব পড়েছে। যেমন, ৫জি (5G) ফোন শিপিংয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতারা চীনা স্মার্টফোনগুলির ওপর ভরসা অনেকটাই কমিয়েছেন, এমনকি পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দীর্ঘ সময় পর ভারতের এক নম্বর স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের সম্মান হাতছাড়া হয়েছে শাওমির!

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন