ইলেকট্রিক গাড়ির যত্ন কীভাবে নেবেন? সাধারণ গাড়ির মতোই কি, আসল সত্যিটা জানুন

ইন্টার্নাল কম্বশন ইঞ্জিন অর্থাৎ পেট্রোল কিংবা ডিজেল চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার্ভিসিং করা প্রয়োজন। এতে যেমন মাঝপথে ব্রেক ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা কমে তেমনই…

ইন্টার্নাল কম্বশন ইঞ্জিন অর্থাৎ পেট্রোল কিংবা ডিজেল চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার্ভিসিং করা প্রয়োজন। এতে যেমন মাঝপথে ব্রেক ডাউন হওয়ার সম্ভাবনা কমে তেমনই পারফরম্যান্স হয় উন্নত। একথা সত্যি যে এই জাতীয় চার চাকার তুলনায় ইলেকট্রিক গাড়িতে যন্ত্রাংশের সমাহার থাকে অনেক কম। সেই কারণেই জীবাশ্ম জ্বালানি দ্বারা পরিচালিত গাড়ির তুলনায় ইলেকট্রিক ভেহিকেলের রক্ষণাবেক্ষণ কিছুটা কম করলেও চলে। তবে এর মানে কিন্তু এমন নয় যে এই সমস্ত বৈদ্যুতিক গাড়িগুলির জন্য দিনের পর দিন কোনো ধরনের পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না।

অগ্নিমূল্য পেট্রোল ডিজেলের ছ্যাঁকার হাত থেকে বাঁচতে শখ করে আপনি কিনেছেন একটি ইভি। পরিবেশকে কম দূষিত করে স্বল্প খরচায় আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সর্বত্র। কিন্তু আপনার এই ব্যাটারি চালিত গাড়ির মধ্যে মেকানিক্যাল পার্টস কম থাকলেও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রয়েছে অনেক। সবচেয়ে বড় কথা এর হার্ট অর্থাৎ ব্যাটারি সর্বদা সুস্থ রাখতে না পারলে কিন্তু সঞ্চয়ের পরিবর্তে খসবে বিপুল পরিমাণ অর্থ। সে জন্যই এই অতিরিক্ত খরচ বাঁচাতে আপনার ইলেকট্রিক গাড়ির নির্দিষ্ট কিছু মেইনটেনেন্স প্রয়োজন। এই প্রতিবেদনে তেমনই পাঁচটি টিপস রইল।

ইলেকট্রিক গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের টিপস

ব্যাটারির খেয়াল রাখা

পেট্রোল-ডিজেলের ইঞ্জিন সমৃদ্ধ গাড়ির মধ্যে ব্যাটারির ভূমিকা নগণ্য হলেও ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে এটিই কিন্তু আসল চালিকাশক্তি। আজকালকার দিনের অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক গাড়িগুলিতে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ব্যাটারির স্বাস্থ্য সঠিক রয়েছে কিনা সেই বিষয়টি মাঝেমধ্যেই পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। তবে এই কাজটি কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে করা বেশ চাপের। গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থার নির্দিষ্ট সার্ভিস সেন্টারে তাই কিছুদিন পরপরই এই বিষয়টি দেখিয়ে নেওয়া শ্রেয়। তাছাড়াও আচমকা যদি গাড়ির ব্যাটারির চার্জ দেওয়ার সময় কিংবা রেঞ্জ এর কোনো ধরনের পরিবর্তন নজরে আসে তবে সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত সম্ভব সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যান।

বিভিন্ন রকম ফ্লুইডের পরিবর্তন

ব্যাটারি চালিত গাড়িগুলির মধ্যে পেট্রোল কিংবা ডিজেল ব্যবহার করা না হলেও বিভিন্ন অংশে নানা ধরনের ফ্লুইড এবং লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন ব্রেক অয়েল, উইন্ড ফিল্ড ওয়াশাংর ফ্লুইড ইত্যাদি। গাড়ির ব্রেকের কাজ উন্নততর করার জন্য ব্রেক ফ্লুইড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যখনই এই ব্রেক ফ্লুইডের পরিমাণ নির্দিষ্ট দাগের নিচে নেমে আসে তখন একে আবারও পরিপূর্ণ করে দেওয়া উচিত।

টায়ার রোটেশন

যে সকল ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি ব্যবহার করে আসছেন তারা জানেন নির্দিষ্ট কয়েক মাস পর পর গাড়ির চারটে চাকায় লাগানো টায়ারগুলি একটি অন্যটির সঙ্গে অদল বদল করে দেওয়া প্রয়োজন। এর ফলে কোনো একটি চাকা খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। এই একই নিয়ম বলবত ব্যাটারি চালিত চার চাকার ক্ষেত্রেও। দক্ষ মেকানিক দিয়ে এই কাজটি অতি অবশ্যই করিয়ে নিতে হবে।

সাসপেনশনের যত্ন

জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যে কোনো গাড়ির মতোই নানারকম খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে ছুটতে হয় বৈদ্যুতিক গাড়িগুলিকে। এমন রাস্তা দিয়ে সচ্ছলভাবে চলার জন্য সাহায্য করে গাড়ির সাসপেনশন। তাছাড়াও এমন উঁচু-নিচু রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তৈরি হওয়া ঝাকুনিকে গাড়ির মূল কাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার কাজটিও দক্ষ হাতে সামলায় এই চারটি সাসপেনশন। সেজন্যই আপনার গাড়িতে লাগানো সাসপেনশন গুলি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেই বিষয়টি তীক্ষ্ণ নজর সহকারে দেখতে হবে।

কেবিন এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন

ইলেকট্রিক গাড়ি হোক কিংবা সাধারণ চার চাকা, সবেতেই কিন্তু আজকালকার দিনে ব্যবহার করা হয় বাতানুকূল যন্ত্র। এই যন্ত্রের মধ্যে লাগানো এয়ার ফিল্টার প্রতিমুহূর্তে কেবিনের ভেতরে থাকা বাতাসের মধ্যের ধূলিকণাকে ছেঁকে ফেলছে। সেজন্যই এই ফিল্টারের গায়ে কিছুদিন পর পরই জমে মোটা ধুলোর আস্তরণ। এই বিষয়টি নজর না দিলে গাড়ির কেবিন পর্যাপ্তভাবে ঠান্ডা হওয়া মুশকিল। প্রয়োজনে বদলাতে হবে পুরানো এয়ার ফিল্টার। এছাড়াও যে কোন ধরনের গাড়ির সামনের কাঁচ পরিষ্কার রাখতে উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার এর ব্যবহার করতে হয়। সাধারণত রোদ্দুর কিংবা ঝড়,জল এই সমস্ত প্রাকৃতিক অভিঘাত সরাসরি এসে লাগে ওয়াইপার ব্লেডে। এর ফলে এই রবারের অংশগুলি ফেটে গিয়ে কার্যকারিতা হারায়। এমন ক্ষেত্রে বদল করতে হবে পুরনো ওয়াইপার।