নামী সংস্থার গাড়ি কিনে চরম হয়রানি, ক্রেতাকে 61 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ আদালতের

কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পছন্দের গাড়ি কেনার স্বপ্ন দেখেন বহু মানুষ। এজন্য অনেকেই ব্যাপক গবেষণার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করে থাকেন। কোন গাড়ি কিনলে আশা পূরণের…

কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পছন্দের গাড়ি কেনার স্বপ্ন দেখেন বহু মানুষ। এজন্য অনেকেই ব্যাপক গবেষণার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করে থাকেন। কোন গাড়ি কিনলে আশা পূরণের পাশাপাশি ভালো পারফর্ম্যান্স মিলবে এই চিন্তা সকলের। কিন্তু অতি পছন্দের মডেলটি কেনার পর যদি ক্রমাগত গোলযোগ দেখা দিতে থাকে, সে ক্ষেত্রে মনের অবস্থা কেমন হয়, আশা করি তা বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই! এমনই ঘটনা ঘটেছিল চন্ডিগড়ের এক বাসিন্দার সাথে। জল এত দূর গড়ায় যে, অবশেষে বাধ্য হয়েই তাঁকে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল। সুবিচার পেয়ে আপাতত স্বস্তিতে তিনি।

ইন্দরজিৎ কউর নামক এক চন্ডিগড় নিবাসী মহিলা Jeep-এর লাক্সারি এসইউভি কিনেছিলেন। এরপর থেকেই চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। গাড়ির গোলযোগ যেন পিছুই ছাড়ছিল না তাঁর। অবশেষে বাধ্য হয়েই ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। গাড়ির দাম সহ ৬১ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

জানা গিয়েছে, চন্ডিগড়ের সেক্টর ৩৩-বি নিবাসী ইন্দরজিৎ কউর গত ২০১৮-র ১৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় জিপ ডিলার KAS Cars-এর থেকে Jeep Grand Cherokee SUV কিনেছিলেন। তিনি জানান, ৮০ লক্ষ টাকা এক্স-শোরুম মূল্যের গাড়িটিতে ডিসকাউন্ট দেওয়ার জন্য ডিলারের কাছে অনুরোধ করেন তিনি। সেই অনুযায়ী তাকে ১৭ লক্ষ টাকা ছাড় দেওয়ার জন্য রাজি হয় ডিলার। কারণ হিসেবে বলা হয়, এটি ২০১৬-র নভেম্বরে তৈরি হয়েছিল। তাই পুরনো স্টক খালি করতেই এতো ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এত ডিসকাউন্ট পেয়ে দিকপাশ না ভেবে মনের আনন্দে গাড়িটি কিনে ফেলেন কউর। তিনি গাড়ির দাম বাবদ ৬১.৬১ লাখ টাকা দেন।

কিন্তু ব্র্যান্ড নিউ গাড়িটি বাড়ি আনার পর থেকে দেখা দেয় সমস্যা। তার অভিযোগ ছিল, চলতে চলতে মাঝ রাস্তায় হঠাৎই বন্ধ হয়ে যেত গাড়িটি। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা মাথা চাড়া দেয়। অগত্যা এই বিলাসবহুল এসইউভি গাড়িটি নিয়ে ডিলারশিপের সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে মেরামত করে ফেরত দেওয়া হয়। আশ্বস্ত করা হয় আর কোন সমস্যা নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও একাধিকবার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে।

শেষমেষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে ডিলারের কাছে গাড়ির পাল্টে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এমনকি গাড়ি নিয়ে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। কিন্তু ডিলারের তরফে এটি আইন মোতাবেক নয় বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। অগত্যা আদালতের দ্বারস্থ হন কউর। গাড়িটিতে গোলযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় আদালত। তাতে অভিযোগকারীর দাবি সত্য প্রমাণিত হয়।

সেই অনুযায়ী আদালত গাড়ির দাম বাবদ সম্পূর্ণ অর্থ (৬১.৬১ লাখ টাকা) জিপ কোম্পানি ও ডিলারশিপকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এছাড়াও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার কারণে ৫০,০০০ টাকা এবং কেস চালানোর খরচ বাবদ ১৫,০০০ টাকা রায়ের কাগজ হাতে পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অনাদায়ে বিপক্ষকে সুদ গুনতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয় আদালত।

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন