অ্যাপল (Apple) যে প্রজেক্ট টাইটান (Project Titan) কোডনামের একটি প্রকল্পের অধীনে তাদের প্রথম ইলেকট্রিক ভেহিকেল তৈরির কাজ চালাচ্ছে, তা বিশ্ববাসীর কাছে অজানা নেই। আইফোন, আইপ্যাড, এবং ম্যাকবুকের বাইরেও আলাদা পরিচিতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে অটোমোবাইল সেক্টরে পা রাখার কথা ভেবেছিল অ্যাপল। কিন্তু গাড়ির প্রকল্প হাতে নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমস্যায় জর্জরিত হয়েছে মার্কিন টেক জায়ান্টটি। মাঝে জল্পনা চলছিল, সংস্থার বৈদ্যুতিক গাড়ির উদ্যোগ বিশ বাঁও জলে। তবে ১৩ বছর পর অবশেষে অ্যাপলের নিজস্ব গাড়ির সেই স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে বলে খবর সামনে এসেছে। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া প্রজেক্ট টাইটান ২০২৮ সালে প্রথম অ্যাপল কার (Apple Car) বা অ্যাপলের প্রথম গাড়ি লঞ্চের লক্ষ্য নিয়েছে।
সংস্থার প্রথম থেকেই টার্গেট ছিল, স্টিয়ারিংহীন অর্থাৎ ড্রাইভার ছাড়াই চলবে এমন সম্পূর্ণ অটোনোমাস (স্বয়ংক্রিয়)গাড়ি লঞ্চ। তবে প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা বা আরও বাস্তবসম্মত কৌশলের কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠবে না বলেই ব্লুমবার্গ-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। অ্যাপলের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাওমি (Xiaomi) সম্প্রতি তাদের ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে এনে হইচই ফেলে দিয়েছে। তাই অ্যাপলও চুপ করে বসে থাকতে চাইছে না। ২০২১ থেকে প্রজেক্ট টাইটান-এর নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন সংস্থার সহ-সভাপতি কেবিন লিঞ্চ। তাঁর তত্ত্বাবধানেই কোম্পানি বর্তমানে বিদ্যুৎলিত গাড়ি বাজারে আনার স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে চলেছে।
পুরোদস্তুর অটোনোমাস গাড়ি আনার বদলে টেসলার মতো একাধিক স্বয়ংক্রিয় ফিচার সমেত আসবে এটি। স্বয়ংচালিত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে এতে। যা লেভেল টু অটোনোমাস ড্রাইভিং নামেই পরিচিত। এটি অনেকটা টেসলার অটোপাইলট সিস্টেমের মতো। স্টিয়ারিং-এর বেশি ভূমিকা না থাকলেও দুর্ঘটনা এড়াতে তাতে চালককে হাত রাখতে হবে। চতুর্থ পর্যায়ের অটোনোমাস গাড়ি আনার লক্ষ্য থেকে সরে যাওয়া অ্যাপেলের স্বীকৃতির ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ভবিষ্যতে সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে গাড়িতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা বাড়ানোর চেষ্টা চলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ব্লুমবার্গ-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অ্যাপল কোম্পানির বোর্ড সিইও টিম কুকের উপর গত বছর চাপ সৃষ্টি করেছিল যাতে প্রজেক্ট টাইটানের কাজ সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য সঠিক পরিকল্পনা করতে, নতুবা এর কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে। শেষমেষ প্রকল্পের কাজ জারি রাখার সিদ্ধান্তে সবাই সহমত হয়েছে। যদিও অ্যাপল এখনও পর্যন্ত প্রটোটাইপ মডেল বানিয়ে উঠতে পারেনি।