গাড়ি ডেলিভারি নেওয়ার আগে এই 5 জিনিস পরীক্ষা করে নিন, নাহলে সারা জীবন ভুগবেন

প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন অর্থাৎ নতুন গাড়ি কেনার প্রাক মুহূর্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অর্থাৎ একটি নতুন গাড়ি ডেলিভারি নেওয়ার আগে তার বেশ কিছু বিষয় খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন।…

প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন অর্থাৎ নতুন গাড়ি কেনার প্রাক মুহূর্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অর্থাৎ একটি নতুন গাড়ি ডেলিভারি নেওয়ার আগে তার বেশ কিছু বিষয় খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন। অনেকেই হয়তো বলবেন নতুন গাড়ি কিনতে গেলে আবার কিসের পরীক্ষা? চোখ বুজে ঘরে নিয়ে এলেই তো হয়। কিন্তু অনেক সময়তেই নতুন গাড়িতে ছোটখাটো কোনো খুঁত থাকলে সেটা ঠিক করে গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। তাই সচেতনতা অবশ্যই প্রয়োজন। এছাড়াও একটি গাড়িতে বিভিন্ন রকম ইলেকট্রনিক্স ফিচার্স থাকে, কেনার পূর্বে যেগুলি অবশ্যই দেখে নেওয়া প্রয়োজন। তবে আর সময় নষ্ট না করে দেখে নেওয়া যাক গাড়ি ডেলিভারি পাওয়ার পূর্বে কোন কোন বিষয়গুলি আপনাকে নজরে রাখতে হবে।

এক্সটেরিয়র-

একটি গাড়িতে বিন্দুমাত্র অন্য কিছুর সঙ্গে ঘষা খেলে সবার প্রথমেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাইরের রঙের আস্তরণ। আর অভিঘাত যদি জোরে হয় তবে এক্সটেরিয়র প্যানেল দুমড়ে যাওয়া কিংবা ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার মত পরিস্থিতি দেখা যায়। সেই কারণে নতুন গাড়ির বাইরের দিকের সমস্ত অংশ, দরজার আশপাশ, সামনের ফেন্ডার, এমনকি ছাদের বাইরের অংশটিও মনোযোগ সহকারে পরখ করে নিন। মনে রাখবেন নতুন গাড়ির বাইরের অংশে রঙের উপর আলোর প্রতিফলন সব ক্ষেত্রেই সমানভাবে পরিলক্ষিত হবে। রঙের মধ্যে কোথাও কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করলে সেই বিষয়ে সতর্ক হোন। এমনকি উইন্ডশিল্ড ও জানালার কাঁচ সঠিক আছে কিনা তাও দেখে নিন।

ইন্টেরিয়র-

একটি নতুন গাড়ির অন্দরমহল সঠিকভাবে থাকবে এইটুকু আশা করতে পারি আমরা। আপনি যে ভ্যারিয়েন্ট পছন্দ করেছেন কোম্পানি কর্তৃক প্রকাশিত সেই গাড়ির ব্রোশারে উল্লিখিত ফিচারগুলি ইন্টিরিয়রে রয়েছে কিনা সেই বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। এছাড়াও গাড়ির সিট, ড্যাশবোর্ডের অংশ, বাতানুকূল যন্ত্র, হিটার, মিউজিক সিস্টেম, বিভিন্ন সুইচ, বোতাম, পোর্ট, লাইট সমস্ত কিছু সঠিকভাবে কার্যকর রয়েছে কিনা তা সুনিশ্চিত হয়ে নেওয়া একান্ত কর্তব্য।

ইঞ্জিন-

যেকোনো গাড়ির প্রাণভোমরা হলো তার ইঞ্জিন। শুরুর থেকেই যদি এই ইঞ্জিনের সমস্যা সৃষ্টি হয় তবে আপনার গাড়ি কেনার আনন্দ কার্যত মাঠেমারা যাবে। নতুন গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল সঠিক পরিমাণে রয়েছে কিনা তা পরখ করার জন্য ডিপস্টিক ব্যবহার করুন। এছাড়াও ইঞ্জিনে কিংবা লিকুইড কুলিং সিস্টেম এবং উইন্ডশিল্ড ডিসপেন্সারে কোথাও লিক রয়েছে কিনা সেই বিষয়েও নজর দেওয়া প্রয়োজন। সামনের ইঞ্জিনের আশেপাশে লাগানো বিভিন্ন নাটবোল্টগুলি যদি একেবারে নতুন অবস্থায় থাকে তবে সেখানে আশেপাশে কোথাও কোনো রেঞ্জের মাধ্যমে খোলার চিহ্ন দেখতে পাওয়া যাবে না। তাই শুরুতেই গুরুত্ব দিন এদিকে।

সাসপেনশন-

আপনার পছন্দের মডেলটি বুক করার আগে অবশ্যই সেটির টেস্ট রাইড সম্পাদন করবেন। এর ফলে সাসপেনশনে কোথাও থেকে অদ্ভুত শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে কিনা কিংবা সাসপেনশন পারফরম্যান্স সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা এই সমস্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন আপনি। প্রয়োজনে সামনের বনেটের ভেতর লাগানো সামনের সাসপেনশন কভার সরিয়ে দেখে নিন তা সুরক্ষিত রয়েছে কিনা।

টায়ার ও ব্রেক-

ডেলিভারির আগে গাড়ির চারটে টায়ারের দিকেই মনোযোগ সহকারে নজর দিন। চারটি টায়ার একই সংস্থার তৈরি বা নির্মাতা কর্তৃক উল্লিখিত নির্দিষ্ট সেকশনের টায়ার এক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা সেই বিষয়টি পরখ করে নিন। ব্রেকের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। চাকার পিছনের দিকে লাগানো ব্রেকিং ক্যালিপার একেবারে নতুন অবস্থায় রয়েছে নাকি বদল করা হয়েছে সেই বিষয়টিও দেখে নেওয়া প্রয়োজন। চারটি চাকাতেই ব্রেকের সঠিক প্রয়োগ সম্পর্কেও নিশ্চিত হয়ে নিন প্রথমেই।