মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন নিয়ে চিন্তার কারণ নেই, জানালো টেলিযোগাযোগ দফতর

বর্তমান সময়ে সবারই চাই দ্রুত, ভরসাযোগ্য নেটওয়ার্ক পরিষেবা। কিন্তু দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মোবাইল টাওয়ার থেকে রেডিয়েশন বা বিকিরণের মাত্রা কতটা ক্ষতিকর হতে পারে – সেই…

বর্তমান সময়ে সবারই চাই দ্রুত, ভরসাযোগ্য নেটওয়ার্ক পরিষেবা। কিন্তু দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মোবাইল টাওয়ার থেকে রেডিয়েশন বা বিকিরণের মাত্রা কতটা ক্ষতিকর হতে পারে – সেই নিয়েও মানুষের মধ্যে আশঙ্কার কমতি নেই! সময় ও প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে নেটওয়ার্ক পরিষেবা যত উন্নত হয়েছে কিংবা যত সেল টাওয়ারের সংখ্যা বেড়েছে, ততই অভিযোগ উঠেছে যে স্থানীয় অঞ্চলে পাখির সংখ্যা কমে যাওয়া, শারীরিক সমস্যা, গাছের নানা ধরণের রোগ দেখা দেওয়ার মত ঘটনার পিছনে রয়েছে মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন। যদিও বিশেষজ্ঞরা আগে বহুবার বলেছেন যে, দেশের টাওয়ার রেডিয়েশন নিরাপদ মাত্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, যার থেকে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাতেও সাধারন মানুষের মনে ভীতি খুব একটা কমেনি। সেক্ষেত্রে আজ, ভারতের টেলিযোগাযোগ অধিদফতর (DoT)-এর কর্ণাটক লাইসেন্স সার্ভিস এরিয়া (LSA ) ভিত্তিক একটি শাখা জানিয়েছে যে মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণ নিয়ে অযথা চিন্তার দরকার নেই। মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন সংক্রান্ত এই ধরণের যাবতীয় উদ্বেগ এবং প্রচারের বেশির ভাগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

একটি বিবৃতিতে, দেশের টেলিকম ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রোভাইডার ক্যাটাগরি ১ (IP – 1) প্রতিনিধি TAIPA অর্থাৎ টাওয়ার অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে যে – বহু ক্ষেত্রেই, ব্যবসায়িক স্বার্থে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টেলিকম টাওয়ার বা মোবাইল ফোনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (EMF) সম্পর্কে ভ্রান্তিমূলক উদ্বেগ সৃষ্টি করা হয়েছে; বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই রেডিয়েশন থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার বিষয়ে যে প্রচার করা হয়েছে বা হচ্ছে তার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এক্ষেত্রে, এই প্রচলিত ‘মিথ’ বা জনশ্রুতি থেকে যাতে মানুষের মনে ভীতি উৎপন্ন না হয় সেজন্য একটি অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন শুরু করেছে কর্ণাটক এলএসএ (LSA)।

এছাড়াও বলা হয়েছে, ভারতের নেটওয়ার্ক পরিষেবার জন্য নির্ধারিত ইএমএফ (EMF) রেডিয়েশনের সীমা বা নিয়ম, ইন্টার-ন্যাশনাল আয়নাইজড রেডিয়েশন প্রোটেকশন (ICNIRP) দ্বারা নির্ধারিত সীমা থেকে ১০ গুণ বেশি কঠোর এবং এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO)-এর নির্দেশনা মেনে চলে। কর্ণাটকের এলএসএ-এর উপদেষ্টা এইচ কে ভার্মা এই বিষয়ে বলেছেন যে, মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ থেকে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব পড়েছে এমন তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

এই কারণেই দেশের নাগরিকদের মোবাইল টাওয়ার সংক্রান্ত ইএমএফ বিকিরণের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই বলেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। তদুপরি, টেলিকম বিভাগের শাখাটি জানিয়েছে এই রেডিয়েশনের প্রভাব দেখার জন্য বারবার কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত প্রমাণে কোনোবারই স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়নি। আবার দেশের প্রাইভেট টেলকোগুলি নির্দিষ্ট এলাকায় টাওয়ার স্থাপনের সময় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মগুলি মেনে চলছে কিনা তা দেখার জন্যও বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উপদেষ্টা ডঃ টি কে জোশী। এই সমস্ত ভ্রান্ত ধারণার কারণে, ইনস্টলেশনের পরে বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে মোবাইল টাওয়ারগুলি সরানো হয়েছে এবং নেটওয়ার্ক পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, বিশ্বের অনেক দেশেই ২৫,০০০-এরও বেশি সমালোচক উক্ত বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা এবং গবেষণা করেছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন থেকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধনের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই অহেতুক আশঙ্কা করার আগে অবশ্যই এই ধরণের প্রচারের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি জানার চেষ্টা করা উচিত।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

WhatsApp Follow Button

লেটেস্ট খবর পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে

WhatsApp Logo যুক্ত হোন