ভয়ংকর ভাইরাসের হানা বাড়ছে ভার্চুয়াল জগতে; আপনার সিস্টেমও এর শিকার নয় তো?

মারণ ভাইরাস করোনার প্রভাবে যেমন বিপর্যস্ত সমস্ত মানবজাতি, তেমনি কম্পিউটারের উত্তরোত্তর বাড়েছে দুর্ধর্ষ সব ভাইরাস অর্থাৎ ম্যালিশিয়াস সফ্টওয়্যারের প্রভাব। বিগত কয়েক মাস ধরে মহামারির কারণে…

মারণ ভাইরাস করোনার প্রভাবে যেমন বিপর্যস্ত সমস্ত মানবজাতি, তেমনি কম্পিউটারের উত্তরোত্তর বাড়েছে দুর্ধর্ষ সব ভাইরাস অর্থাৎ ম্যালিশিয়াস সফ্টওয়্যারের প্রভাব। বিগত কয়েক মাস ধরে মহামারির কারণে অধিকাংশ মানুষই এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম সার্ভিসের ওপর নির্ভরশীল; আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে, হালফিল সময়ে বহুগুণ বেড়েছে ম্যালওয়্যার বা র‌্যানসমওয়ারের মত বিভিন্ন কম্পিউটার ভাইরাসের আধিপত্য। এই বিপজ্জনক ভাইরাসগুলির সংক্রমণে সিস্টেম ফাইলগুলির ক্ষতি তো হয়ই, পাশাপাশি এগুলি ইন্টারনেট সংযোগও স্লো করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে র‌্যানসমওয়ার, ম্যালওয়্যার বা সাধারণ ভাইরাসের চেয়ে আরও বেশী ক্ষতিকারক। কারণ, এটি ইউজারের সিস্টেমের ফাইলগুলিকে লক করে দেয় এবং তা আনলক করতে প্রয়োজনীয় ‘ডিক্রিপশন কী কোডের’ বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করে। এদিকে সম্প্রতি একটি সাংঘাতিক র‌্যানসমওয়ার স্ট্রিং-এর সন্ধান পাওয়া গেছে যা শুধু ফাইলগুলিকেই এনক্রিপ্ট করে না, পাশাপাশি ইউজারকে তাদের কম্পিউটার থেকেই সম্পূর্ণ লগ আউট করে দেয়।

প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট টেকর‌্যাডার (TechRadar)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, রিভিল (REvil) র‌্যানসমওয়ারের একটি নতুন স্ট্রিং এখন সোডিনোকিবি (Sodinokibi) গ্রুপের দ্বারা অভিযোজিত হচ্ছে, যারা কম্পিউটারের ফাইলগুলি এনক্রিপ্ট তো করছেই, একই সাথে Windows 10 ওএসের লগ ইন পাসওয়ার্ডও পরিবর্তন করে দিচ্ছে। যা আপাতভাবে শুনতে এরকম সাধারণ লাগলেও এর ফল অতি মারাত্মক।

আসলে, নতুন স্ট্রিংটি সিস্টেমের লগ ইন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে সিস্টেমটিকে ‘সেফ মোডে’ নিয়ে চলে আসে, যেখানে কেবলমাত্র কোর উইন্ডোজ সিস্টেম পরিষেবাগুলি চালানোর সুযোগ থাকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত সুরক্ষা ব্যবস্থা যেমন অ্যান্টি-ভাইরাস সফ্টওয়্যার বা কোনো ডেটা সুরক্ষা পদ্ধতিগুলি এই অবস্থায় কার্যকর হয় না। আর এই সুযোগে ম্যালওয়্যারটি, ইউজার মেশিনটি পুনরায় বুট করার আগেই ফাইল এনক্রিপশন প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্নে সেরে ফেলে। ফলে যা ক্ষতি হবার তা হয়ে যায়!

উক্ত রিপোর্টে আরো দাবি করা হয়েছে যে, রিভিল র‌্যানসমওয়ার স্ট্রিংটি ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ডকে “DTrump4ever”-এ পরিবর্তন করে রিবুট প্রক্রিয়াটিকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলে। ফলে ম্যালওয়্যারটিকে, ইউজার কর্তৃক সিস্টেম ম্যানুয়ালি রিবুট করা বা ডিভাইস সেফ মোডে পৌঁছানোর আনার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, রিভিল র‌্যানসমওয়ার স্ট্রিংটি এই “DTrump4ver” পাসওয়ার্ডটিকেই ধারাবাহিক ভাবে ব্যবহার করে যাবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এদিকে, সোডিনোকিবি খুল্লামখুল্লা হুমকি দিয়েছে যে তাঁদেরকে আক্রান্ত সিস্টেমের র‌্যানসম বা মুক্তিপণের অর্থ প্রদান না করা হলে চুরি করা ডেটা তাঁরা ইমেইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে এবং এই সমস্ত ইউজারের ওপর তাঁরা DDoS (ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনাইয়াল অফ সার্ভিস) আক্রমণ করবে। অতএব, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির অগ্ৰগতির ফলে আমাদের জীবনযাপন যথেষ্ট সহজসাধ্য হলেও, হ্যাকার ও প্রতারকদের আধিপত্যে আমাদের জীবন যে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠছে, তার জন্য প্রযুক্তির অফুরান ব্যবহারের পাশাপাশি আমাদের চোখ কান খোলা রাখা অত্যন্ত জরুরি।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন