করোনা সংক্রমণ রুখতে পণ্য উৎপাদন বন্ধ! ই-কমার্স পরিষেবার ওপরও বিধি নিষেধ জারি মহারাষ্ট্র সরকারের

দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ এই মারণব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। গোটা দেশেই ক্রমশ ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণ। যে রাজ্যগুলো…

দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ এই মারণব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। গোটা দেশেই ক্রমশ ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণ। যে রাজ্যগুলো সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ, তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। দেশের মোট ১৩.৫ মিলিয়ন করোনা আক্রান্তের প্রায় এক-চতুর্থাংশই এই রাজ্যের বাসিন্দা। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে ৬০,২১২ টি নতুন COVID-19 সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। তাই এদিনই, ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্যটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা কমাতে ১৫ দিনের জন্য শিল্প ও ই-কমার্সের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার কথা ঘোষণা করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। ফলে এই অঞ্চলের উৎপাদন এবং অন্যান্য ব্যবসা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিন ঠাকরে নির্দেশ দিয়েছেন যে, মুদির দোকান, হাসপাতাল, ব্যাংক এবং স্টক এক্সচেঞ্জ সহ প্রয়োজনীয় তথা অত্যাবশ্যকীয় জায়গা ছাড়া রাজ্যের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান, অপ্রয়োজনীয় পরিষেবা এবং পাবলিক প্লেস বন্ধ থাকবে। বৈধ কারণ ছাড়া জনসাধারণ পাবলিক প্লেসে চলাফেরা করতে পারবে না। একটি সরকারী বিজ্ঞপ্তিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, কিছু রপ্তানি-ভিত্তিক ইউনিট এবং অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করা ছাড়া সমস্ত কারখানা/শিল্পকে “অবশ্যই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে”। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য ই-কমার্স ডেলিভারির অনুমতি দেওয়া হবে। ফলে টাটা মোটরস লিমিটেড, বাজাজ অটো লিমিটেড এবং মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেডের মতো অটো সংস্থাগুলির সাথে সাথে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মগুলির ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ার চরম সম্ভাবনা রয়েছে।

মহারাষ্ট্র ইতিমধ্যেই গত সপ্তাহে রেস্তোঁরা, বার, জিম, থিয়েটার এবং অপ্রয়োজনীয় দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারতের বলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের প্রাণকেন্দ্র মুম্বাইয়ে সমস্ত সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনের শুটিংও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রই নয়, এই কঠোর বিধিনিষেধগুলির প্রভাবে ভারতীয় অর্থনীতিও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের প্রায় ১৫% এই রাজ্যটি সরবরাহ করে, যা কয়েক মাসের মন্দার পরে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কিছু শিল্প গোষ্ঠী সতর্ক করেছিল যে, এই পদক্ষেপের ফলে কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। প্রসঙ্গত ঠাকরে জানিয়েছেন, “জীবিকা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু জীবন আরও গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রয়োজনে আমাদের বিদ্যমান বিধিনিষেধগুলি বাড়াতে হবে”।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন