Cryptocurrency: ৬১১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়েও ফেরত দিতে হচ্ছে হ্যাকারদের, কিন্তু কেন

চুরির পরে হুঁশ ফিরল চোরের! লুটতরাজের পরের দিনই বাধ্য ছেলের মতো চুরির মাল ফিরিয়ে দিল তারা। অবশ্য ব্যাপারটাকে ডাকাতি বললেও ভুল হয়না। বিশেষ করে ডিজিটাল…

চুরির পরে হুঁশ ফিরল চোরের! লুটতরাজের পরের দিনই বাধ্য ছেলের মতো চুরির মাল ফিরিয়ে দিল তারা। অবশ্য ব্যাপারটাকে ডাকাতি বললেও ভুল হয়না। বিশেষ করে ডিজিটাল সম্পদের দুনিয়ায় যখন এটা সবথেকে বড় চুরি। ডিজিটাল সম্পদ হিসেবে এখানে ক্রিপ্টোকারেন্সির কথা বলছি। আজ্ঞে হ্যাঁ, নগদ টাকায় নয় বরং বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে মোট ৬১১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে হ্যাকারেরা বড় বড় বিশেষজ্ঞদের মাটি ধরিয়ে দেয়। যদিও ঘটনার একদিন পরেই তাদের অর্থ ফেরানোর পথে হাঁটতে হয়েছে।

ব্যাপারটা বিশদে বলা যাক। বুধবার, ব্লকচেন (Blockchain) নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা পলি নেটওয়ার্ক (Poly Network) জানিয়ে দেয় যে হ্যাকারেরা বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ৬০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী অর্থ চুরি করে গা ঢাকা দিয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবে একথা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয়। কিভাবে চোরকে ধরা সম্ভব তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোচনা চলতে থাকে।

চুরির পরে পলি নেটওয়ার্কের (Poly Network) পক্ষ থেকে হ্যাকারদের বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সিতে হলেও এই বিরাট টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা যে কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না, সেটা বার্তায় জানিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘটনাটিকে ‘মূল ধারার অর্থনৈতিক অপরাধ’ বলে গণ্য করবে বলেও, পলি নেটওয়ার্ক স্পষ্ট করে। ফলে উপযুক্ত সমাধান না পেলে হ্যাকারদের খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া জোর পাবে বলেও সংস্থাটি জানায়।

আর উপরের এই হুমকি কিন্তু বেশ কাজ করে! একদিন পেরোতে না পেরোতেই হ্যাকারেরা বিভিন্ন ক্রিপ্টো ঠিকানায় অর্থ ফেরত দিতে শুরু করে। আপাতত ৬১১ মিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ অর্থসম্পদ (২৬০ মিলিয়ন ডলার) চোরেরা ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

ফিরিয়ে দেওয়া ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে ৩.৩ মিলিয়ন ইথেরিয়াম (Etherium), ২৫৬ মিলিয়ন বিনান্স স্মার্ট চেন (BSC) এবং ১ মিলিয়ন পলিগন (Polygon) থেকে লুন্ঠিত। এছাড়া ইথেরিয়াম (Etherium) এবং পলিগনে (Polygon) যথাক্রমে ২৬৯ এবং ৮৪ মিলিয়ন ক্রিপ্টোকারেন্সি ফিরিয়ে দেওয়া বাকি বলে পলি নেটওয়ার্ক জানিয়েছে।

আসলে অর্থ ফিরিয়ে না দিয়ে চোরদের অন্য উপায় ছিলোনা। সিকিউরিটি ফার্ম স্লোমিস্ট (SlowMist) হ্যাকারদের মেইলবক্স, আইপি(IP) অ্যাড্রেস এবং ডিভাইস ফিঙ্গারপ্রিন্ট খুঁজে নেওয়ার মাধ্যমে খোয়া যাওয়া মোট অর্থের পরিমাণ নির্ণয় করে। এরপর অ্যাটাকারের পরিচয় খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়ে যায়। এজন্য খানিকটা বাধ্য হয়েই চোরদের টাকা ফেরাতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হ্যাকারেরা সমস্ত অর্থ ফিরিয়ে দিলে তা যে ক্রিপ্টোকারেন্সি ও সক্রিয় ব্লকচেন প্রযুক্তির স্বচ্ছতা এবং সার্থকতাকে তুলে ধরবে, বিশেষজ্ঞেরা অন্তত তেমনটাই মনে করছেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন