গাড়ির ব্যাটারি না পাল্টালে বিপদ, এই সব লক্ষণ চোখে পড়লে এক্ষুণি সতর্ক হয়ে যান
পেট্রোল হোক কিংবা ডিজেল যে কোনো ধরনের জ্বালানি চালিত গাড়ির মধ্যে ব্যাটারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। গাড়ির মধ্যে থাকা ইঞ্জিনের স্টার্টার থেকে শুরু করে অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ সচল রাখতে প্রয়োজন পরে ব্যাটারির। এমনকি লাইট, মিউজিক সিস্টেম, ওয়াইপারকেকে ইঞ্জিন বন্ধ অবস্থায় চালু রাখতে পারে গাড়ির ব্যাটারি। তাই গাড়ির মধ্যে থাকা এই ব্যাটারি যদি কোনো কারণে খারাপ হয়ে যায় তবে গাড়িটিকে চালু করা প্রায় অসম্ভব। অনেকজন মিলে জোরে ধাক্কা দিয়ে চালু করা যায় ঠিকই তবে তা বেশ কঠিন কাজ।
অতএব ব্যাটারির তাৎপর্য কতটা তা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এই কারণেই একে বিশেষভাবে যত্ন করা প্রয়োজন। সাধারণভাবে তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত সঠিক সক্ষমতা বজায় রেখে চলতে পারে এগুলি। তবে অযত্ন, অতিরিক্ত ব্যবহার কিংবা উচ্চ তাপমাত্রার জন্যই অনেক সময় অতি দ্রুত ব্যাটারির আয়ু ক্ষয় হতে দেখা যায়। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতেই নিয়মিত আপনার গাড়ির ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা একান্ত কর্তব্য। ব্যাটারি ভালো নাকি খারাপ? বুঝবেন কী করে? এই পাঁচ লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন।
খারাপ ব্যাটারির লক্ষণ-
চাবি অন করার পরেও ড্যাশবোর্ডের সিগন্যাল বন্ধ থাকা
সাধারণভাবে গাড়ির চাবির সঙ্গেই থাকে ইগনিশন অন/অফ করার সিস্টেম। অর্থাৎ চাবিটি একবার মোচড় দিলেই ব্যাটারির কানেকশন সরাসরি এসে পৌঁছায় গাড়ির ড্যাশবোর্ডে। আর তারপরেই সেখান থেকে যায় ইঞ্জিন স্টার্টারে। তাই যখন চাবি অন করার পরেও ড্যাশবোর্ডে যদি কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখতে পাওয়া যায় তবে এটি ব্যাটারি খারাপ হওয়ার লক্ষণ। অতি শীঘ্রই ব্যাটারিটি বদলে ফেলতে হবে। যদিও কোনো কোনো সময় ব্যাটারির প্লাগ কিংবা গাড়ির ফিউজের সমস্যাতেও এমন ঘটনা দেখা যেতে পারে।
ইঞ্জিন স্টার্টার এর অদ্ভুত শব্দ
আজকালকার দিনের অনেক উন্নত গাড়িতেই সাইলেন্ট স্টার্টার লাগানো থাকে। তবে কয়েক বছর আগের মডেলেও ইঞ্জিন চালু করার সময় স্টার্টার মোটর থেকে শুরুতেই এক বিশেষ ধরনের শব্দ তৈরি হয়। যদি কোনো মুহূর্তে সেই শব্দ স্বাভাবিকের তুলনায় আস্তে শোনায় কিংবা স্টার্টার মোটর খানিকটা আটকে আটকে চালু হয় তবে তা ব্যাটারি খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত। এই বিষয়টি তাই নজর রাখা উচিত।
ব্যাটারি কিংবা চার্জিং সিস্টেমের ওয়ার্নিং লাইট
আজকালকার দিনের আধুনিক চারচাকা কিংবা বাইকেও থাকার ড্যাশবোর্ডে একটি ব্যাটারি এবং চার্জিং সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত ওয়ার্নিং লাইট লাগানো থাকে। এটি আদতে ব্যাটারির চার্জিং সিস্টেমে কোনো ধরনের সমস্যা বুঝতে পারলে তৎক্ষণাৎ সেই আলো জ্বলে ওঠে চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই এমন পরিস্থিতিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সার্ভিস সেন্টারে আপনার গাড়িটি পরীক্ষা করানো উচিত। এছাড়াও এখনকার দিনে ড্যাশবোর্ডে লাগানো ডিসপ্লেতে ব্যাটারির ভোল্টেজ প্রতিমুহূর্তে প্রদর্শিত হয়। কোনো কারনে আজমকা ভোল্টেজ কমে এলে তা নিশ্চিতভাবে ব্যাটারির সমস্যার আগাম সতর্কবার্তা।
হেডলাইটের আলো কমে আসা
অনেক গাড়িতেই যখন ইঞ্জিন বন্ধ অবস্থায় থাকে তখন হেডলাইট কিংবা অন্যান্য আলো জ্বলার জন্য ব্যাটারি থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ গ্রহণ করা হয়। তাই এমন পরিস্থিতিতে যদি হেডলাইটের আলোর উজ্জ্বলতা কম বলে মনে হয় তবে তা ব্যাটারির খারাপ স্বাস্থ্যের ইঙ্গিত বহন করে।
ব্যাটারির বডি নষ্ট হয়ে যাওয়া
আমরা প্রত্যেকেই জানি যে কোন ব্যাটারির মধ্যেই রাসায়নিক শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এর মধ্যে থাকে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান বা সহজ ভাবে বললে অ্যাসিড। তাই কোনো কারণে যদি ব্যাটারির গায়ের অংশ ফেটে গিয়ে ভেতরের রাসায়নিক পদার্থ বেরিয়ে আসে তবে তা এক মুহূর্তের জন্যও ব্যবহার করা বিপদজনক। গাড়ির ভেতরের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি সাধন করতে পারে এই রাসায়নিক। তখন মুহূর্ত সময় অপেক্ষা না করে পুরনো ব্যাটারি বদলে ফেলা আবশ্যক।