5G ফোন বিক্রিতে পিছিয়ে গেছে Xiaomi, Realme-র মতো চীনা ব্র্যান্ডগুলি, কেন হল এই বদল?
বর্তমানে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক বা 5G পরিষেবা ভারতের প্রায় প্রতিটি কোণায় পৌঁছেছে। আর এই কারণে এদেশের বাজারে ২০২২-২৩ সালে 5G প্রযুক্তিযুক্ত স্মার্টফোনের রেকর্ড হারে বিক্রি হয়েছে। আর এই চক্করে মানে ব্যাপক স্মার্টফোন শিপিংয়ের দরুনই কিন্তু ইন্ডিয়ান মোবাইল মার্কেটে বড় বদল ঘটেছে। আসলে বিগত কয়েক বছরে ভারতে 4G স্মার্টফোন (বিশেষ করে বাজেট রেঞ্জে) বিক্রিতে আধিপত্য কায়েম রেখেছিল চীনা স্মার্টফোনগুলি। কিন্তু এখন তারা সেই জায়গা হারিয়েছে। ঠিক কী হয়েছে বাজারে? আর কেনই বা হয়েছে? আসুন জেনে নিই সমস্ত তথ্য।
ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং 5G স্মার্টফোনের রেকর্ড শিপিং
এই বছরের মে মাসে ভারতে ৫জি স্মার্টফোনের শিপিংয়ের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ছুঁয়েছে, যা একটি নতুন রেকর্ড। কিন্তু এরই সাথে ৫জি স্মার্টফোন বিক্রিতে চীনা ব্র্যান্ডের শেয়ার কমেছে। এর আগে চীন ভিত্তিক কোম্পানি শাওমি (Xiaomi), ভিভো (Vivo), রিয়েলমি (Realme) এবং ওপ্পো (Oppo) ভারতে ফোন বিক্রি এবং শিপিংয়ে শীর্ষস্থানে ছিল। অথচ দেখা যাচ্ছে যে ৫জি চালুর পর থেকে বাজারে নিজের পুরোনো জায়গা ফিরে পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি স্যামসাং (Samsung) – তারা এই মুহূর্তে সবাইকে পেছনে ফেলে দেশের এক নম্বর স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে উঠে এসেছে।
মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম সাইবারমিডিয়া রিসার্চ বা সিএমআর (CMR)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরুতে ৫জি স্মার্টফোনের শিপমেন্ট ২৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ সাধারণ মানুষ নতুন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে নতুন ফোন কিনছেন। সেক্ষেত্রে যদি মে মাসের কথা বলা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে স্যামসাং কোম্পানি ৫জি শিপিংয়ে শীর্ষে রয়েছে। এরপরে আসছে ওয়ানপ্লাস (OnePlus) এবং ভিভোর মতো ব্র্যান্ডের নাম। তিনটি সংস্থার সম্মিলিত মার্কেট শেয়ার ৬০ শতাংশ। এদিকে বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে ব্যবসা করা শাওমি অনেক পিছিয়ে গেছে।
কেন 5G স্মার্টফোন শিপিংয়ে চীনা ব্র্যান্ডের শেয়ার কমেছে?
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন হচ্ছে যে কীভাবে হল বাজারের এই পরিবর্তন? আর কীভাবেই চীনা সংস্থাগুলি ফোন বিক্রিতে পিছিয়ে গেল? সেক্ষেত্রে বলি, শাওমি, ভিভো, ওপ্পোর মতো চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলির বিরুদ্ধে হালফিলে কর ফাঁকি দেওয়া এবং ভুলভাবে বিদেশে অর্থ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এই কারণে, ব্র্যান্ডগুলির ওপর তদন্ত চালাচ্ছে ভারত সরকার, এমনকি এদের কিছু অ্যাকাউন্ট সিল করে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলির কার্যক্রম সীমিত ছিল – তাদের নতুন স্মার্টফোন লঞ্চ, প্রচার ও বিপণনে বিলম্ব হয়েছে। তাছাড়াও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, বাজেট রেঞ্জে চাইনিজ ফোনগুলির পারফরম্যান্স আগের মত নেই, সম্ভবত এই জন্যও অনেকেই সংস্থাগুলির থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন।