Realme 11 5G Vs Infinix GT 10 Pro 5G: বর্তমানে বাজারের সেরা দুই ফোনের মধ্যে কোনটি বেছে নেবেন
গত ২৩শে আগস্ট ভারতে লঞ্চের মুখ দেখে Realme 11 5G। এই ফোনে - ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটের ডিসপ্লে প্যানেল, ৮ জিবি র্যাম, ২৫৬ জিবি স্টোরেজ, ১০৮ মেগাপিক্সেলের প্রাইমারি সেন্সর এবং ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি পাওয়া যাবে। আর এটি লো-মিড রেঞ্জ অর্থাৎ ২০,০০০ টাকারও কম দামে এসেছে। দেখতে গেলে চলতি মাসের ৩ তারিখ প্রায় অনুরূপ ফিচার এবং বিক্রয় মূল্যের সাথে এদেশে পা রাখে Infinix GT 10 Pro 5G।
সর্বোপরি উভয় মডেলই 5G কানেক্টিভিটি অফার করে। যদিও ডিজাইনের দিক থেকে Infinix হ্যান্ডসেটটি এগিয়ে থাকছে। কেননা এই বাজেট-ফ্রেন্ডলি গেমিং মোবাইল সাইবারপাঙ্ক-স্টাইলড ট্রান্সপারেন্ট রিয়ার শেল ডিজাইনের সাথে এসেছে, যাতে আবার কাস্টমাইজযোগ্য মিনি-এলইডি ইন্ডিকেটরও বিদ্যমান। এই সম্পূর্ণ বিষয়টি ডিভাইসটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় লুক প্রদান করেছে। বিপরীতে Realme মডেলে তথাকথিত স্টাইলের ব্যাক প্যানেল লক্ষ্যণীয়। তবে ডিজাইনের থেকেও ফিচার অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, Realme 11 5G নাকি Infinix GT 10 Pro 5G, কোন ফোনটি এগিয়ে আছে চলুন তা এবার দেখে নেওয়া যাক।
Realme 11 5G Vs Infinix GT 10 Pro 5G এর দাম
ভারতে রিয়েলমি ১১ ৫জি স্মার্টফোনকে দুটি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টে লঞ্চ করা হয়েছে। যার মধ্যে ৮ জিবি র্যাম + ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম ১৮,৯৯৯ টাকা। আর উচ্চতর ৮ জিবি র্যাম + ২৫৬ জিবি স্টোরেজ অপশনকে পাওয়া যাবে ১৯,৯৯৯ টাকায়। এটি – গ্লোরি গোল্ড এবং গ্লোরি ব্ল্যাক কালার বিকল্পে উপলব্ধ।
ভারতের বাজারে ইনফিনিক্স জিটি ১০ প্রো ৫জি স্মার্টফোনের দাম ১৯,৯৯৯ টাকা রাখা হয়েছে। এই বিক্রয় মূল্য ফোনটির ৮ জিবি র্যাম + ২৫৬ জিবি স্টোরেজ যুক্ত একক ভ্যারিয়েন্টের। এটি – সাইবার ব্ল্যাক এবং মিরাজ সিলভার কালার বিকল্পে উপলব্ধ। যার মধ্যে ‘মিরাজ সিলভার’ বিকল্পটি UV লাইট রূপান্তরিত করতে সক্ষম।
Realme 11 5G Vs Infinix GT 10 Pro 5G : ডিসপ্লে, সেন্সর
ডুয়াল সিমের (ন্যানো) রিয়েলমি ১১ ৫জি স্মার্টফোনে রয়েছে ৬.৭২-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস (১,০৮০x২,৪০০ পিক্সেল) Samsung AMOLED ডিসপ্লে, যা ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট এবং ২৪০ হার্টজ টাচ স্যাম্পলিং রেট সমর্থন করে। আর নিরাপত্তার জন্য সাইড-মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর মিলবে।
ইনফিনিক্স জিটি ১০ প্রো স্মার্টফোনে ৬.৬৭-ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস AMOLED ডিসপ্লে দেখা যাবে। এই ডিসপ্লের ডিজাইন পাঞ্চ-হোল (কেন্দ্রীভূত) স্টাইলের এবং এটি ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট, ৩৬০ হার্টজ টাচ স্যাম্পলিং রেট, ৯০০ নিট পিক ব্রাইটনেস, ১০০% DCI-P3 ওয়াইড কালার গ্যামেট এবং ৯৩% স্ক্রিন-টু-বডি রেশিও সাপোর্ট করে। সিকিউরিটি ফিচার হিসাবে আন্ডার-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার উপলব্ধ থাকছে।
Realme 11 5G Vs Infinix GT 10 Pro 5G : প্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, র্যাম, স্টোরেজ
Realme 11 5G স্মার্টফোনে ৬এনএম প্রসেসিং নোড ভিত্তিক মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৬১০০+ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক রিয়েলমি ইউআই ৪.০ (Realme UI 4.0) কাস্টম স্কিনে রান করে। আবার স্টোরেজ হিসাবে ডিভাইসে ৮ জিবি র্যাম এবং ২৫৬ জিবি পর্যন্ত রম মিলবে। যদিও এই হ্যান্ডসেটে ৮ জিবি পর্যন্ত ডায়নামিক র্যাম এক্সপেনশন (DRE) ফিচার সাপোর্ট করায়, ইউজাররা মোট ১৬ জিবি পর্যন্ত র্যাম ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে এর স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ২ টেরাবাইট পর্যন্ত সম্প্রসারণযোগ্য।
Infinix GT 10 Pro 5G স্মার্টফোনটি মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৮০৫০ ৫জি প্রসেসরের সাথে এসেছে, যা সর্বোচ্চ ৩.০ গিগাহার্টজ রেটে ক্লক করে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভিত্তিক এক্সওএস ১৩ (XOS 13) কাস্টম স্কিন দ্বারা চালিত, যা ব্লোটওয়্যার-ফ্রি অভিজ্ঞতা প্রদান করে। আর স্টোরেজ হিসাবে ৮জিবি LPDDR4x র্যাম এবং ২৫৬ জিবি UFS 3.1 রম পাওয়া যাবে। যদিও মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করে এর স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বাড়ানো সম্ভব।
Realme 11 5G Vs Infinix GT 10 Pro 5G : ক্যামেরা সেটআপ
ক্যামেরা বিভাগের কথা বললে, রিয়েলমি ১১ ৫জি স্মার্টফোনে ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা ইউনিট বর্তমান। এই ক্যামেরাগুলি হল – এফ/১.৭৫ অ্যাপারচার সহ ১০৮ মেগাপিক্সেল Samsung ISOCELL HM6 প্রাইমারি সেন্সর এবং ২ মেগাপিক্সেল সেকেন্ডারি লেন্স। এদিকে সেলফি এবং ভিডিও চ্যাটিংয়ের জন্য রয়েছে এফ/২.৪৫ অ্যাপারচার সহ ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা।
ফটো ও ভিডিওগ্রাফির জন্য ইনফিনিক্স জিটি ১০ প্রো ৫জি ফোনে কোয়াড-এলইডি ফ্ল্যাশ সহ ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ দেওয়া হয়েছে। এই ক্যামেরাগুলি হল – ১০৮ মেগাপিক্সেল Samsung HM6 প্রাইমারি সেন্সর, ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ সেন্সর, এবং ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো শ্যুটার। ডিভাইসের সামনে ডুয়াল-এলইডি ফ্ল্যাশ সহ ৩২-মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা লক্ষ্যণীয়।
Realme 11 5G Vs Infinix GT 10 Pro 5G : ব্যাটারি, চার্জিং ক্যাপাসিটি
কানেক্টিভিটির জন্য Realme 11 5G ফোনে – ডুয়াল সিম স্লট, ডুয়াল স্ট্যান্ডবাই ৫জি, ৪জি এলটিই, ডুয়াল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ৫.২, জিপিএস, এ-জিপিএস, এবং একটি ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট অন্তর্ভুক্ত থাকছে৷ এই হ্যান্ডসেট ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি সহ এসেছে, যা ৬৭ ওয়াট সুপারভুক চার্জিং সমর্থন করে। সংস্থার দাবি অনুসারে, এই ব্যাটারি মাত্র ১৭ মিনিটে ফোনকে ৫০% পর্যন্ত চার্জ করতে সক্ষম।
কানেক্টিভিটি অপশন হিসাবে ইনফিনিক্স জিটি ১০ প্রো ৫জি ফোনে – ডুয়াল সিম স্লট, ৫জি, ওয়াই-ফাই ৮০২.১১এএক্স, ব্লুটুথ ৫.২, জিপিএস, এনএফসি, ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট এবং একটি ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক সামিল রয়েছে৷ আর পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি থাকছে, যা ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি সমর্থন করে। ডিভাইসটি বাইপাস চার্জিং ফিচারও সমর্থন করে, যা ধারাবাহিক গেমিং সেশনের সময় ওভারহিটিংয়ের সমস্যা কমায়।