বিনামূল্যে ২৩৮টি অঞ্চলে মিলছে Jio ও Airtel এর 5G পরিষেবা, বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর
গত বছরের অক্টোবর মাসের গোড়ার দিকে এদেশে 5G পরিষেবার আগমন ঘটেছে। ইতিমধ্যেই ভারতের নির্বাচিত কয়েকটি শহরে এই সার্ভিস রোলআউট করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই টেলিকম কোম্পানি Reliance Jio এবং Bharti Airtel। শুধু তাই নয়, সংস্থা দুটি আপামর দেশবাসীকে নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ২০২৪ সালের মধ্যেই গোটা ভারতের বাসিন্দারা পঞ্চম প্রজন্মের দুরন্ত গতির নেটওয়ার্ক সার্ভিস ব্যবহারের মজা উপভোগ করতে পারবেন। আর টেলিকম অপারেটর দুটি যেভাবে দুর্বার গতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলেই আশা করা যায়। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, কেন্দ্রীয় যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী দেবুসিংহ চৌহান (Devusinh Chauhan) গত বুধবার সংসদে জানিয়েছেন যে, ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষে ভারতের ২৩৮ টি শহরে 5G পরিষেবা উপলব্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে উপরিউক্ত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা যে প্রবল, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।
4G রিচার্জ প্ল্যান মারফতই পাওয়া যাবে আনলিমিটেড 5G সার্ভিস
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, জিও বর্তমানে ইউজারদেরকে স্ট্যান্ডঅ্যালোন (SA) নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৫জি পরিষেবা অফার করছে। অর্থাৎ, সংস্থার নেটওয়ার্কটি একটি ৫জি কোরে চলবে এবং এটি বিদ্যমান এলটিই (LTE) কোরের ওপর নির্ভর করবে না। আবার, এই মুহূর্তে নন-স্ট্যান্ডঅ্যালোন (NSA) ৫জি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইউজারদেরকে সার্ভিস প্রদান করছে এয়ারটেল, যা ৪জি (4G) কোরের ওপর নির্ভরশীল। উভয় টেলিকম কোম্পানির তরফেই ঘোষণা করা হয়েছে, যে সমস্ত ব্যবহারকারীদের কাছে ৫জি স্মার্টফোন আছে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্থাদ্বয়ের পক্ষ থেকে কোনো ৫জি প্ল্যান লঞ্চ না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিদ্যমান ৪জি রিচার্জ প্ল্যান মারফতই সম্পূর্ণ নিখরচায় পঞ্চম প্রজন্মের দুরন্ত গতির নেটওয়ার্ক সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে ভারতের ডিজিটাল অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রায় একটি স্বর্ণযুগ চলে এসেছে বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।
5G স্পেকট্রামের নিলামের রথের রশি ছিল Jio-র হাতে
উল্লেখ্য যে, গত বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে ভারতে ৫জি স্পেকট্রামের নিলামের আয়োজন করা হয়েছিল। এই নিলামপর্বে অংশগ্রহণকারীদের তালিকার শীর্ষে ছিল রিলায়েন্স জিও, আদানি গ্রুপ (Adani Group), ভারতী এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea) বা ভিআই (Vi)। হাইভোল্টেজ এই নিলাম থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘরে এসেছিল প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা, যা নিঃসন্দেহে এক অভূতপূর্ব ব্যাপার। সেক্ষেত্রে মোট ৪০ রাউন্ডের নিলামে বাকি সকলকে টেক্কা দিয়ে নিজেদের দাপট অক্ষুণ্ন রেখেছিল রিলায়েন্স জিও। বলে রাখি, ৫জি স্পেকট্রাম নিলামে সামগ্রিক কেনাকাটায় জিও মোট ৮৮,০৭৮ কোটি টাকা খরচ করেছিল। অর্থাৎ সহজে বললে, নিলামে সংগৃহীত মোট অর্থের ৫১ শতাংশই এসেছিল তাদের তরফ থেকে। ফলে বছর ছয়েক আগে এদেশে ৪জি পরিষেবা রোলআউট করে রীতিমতো ইতিহাস সৃষ্টি করার পর এবার ৫জি-র ক্ষেত্রেও সংস্থাটি নিঃসন্দেহে বাকি সকল কোম্পানিকে জোর টক্কর দেবে বলেই আশা করা যেতে পারে।
Airtel-ও কিন্তু খুব পিছিয়ে নেই
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হালফিলে Airtel-ও কিন্তু মোটেই পিছিয়ে নেই। ক্রমাগত একের পর এক শহরে 5G সার্ভিস রোলআউট করে Jio-র সঙ্গে ইদানীংকালে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। জানিয়ে রাখি, Jio ছাড়া উক্ত নিলামে Airtel ও Vi যথাক্রমে ৪৩,০৮৪ ও ১৮,৭৯৯ কোটি টাকা খরচ করেছিল। যদিও Vi এখনও পর্যন্ত এদেশে 5G পরিষেবা নিয়ে আসতে পারেনি, তবে বর্তমানে ভারতের নির্বাচিত কিছু শহরের Airtel গ্রাহকরা কিন্তু চুটিয়ে নিজেদের 5G হ্যান্ডসেটে সংস্থার বিদ্যুৎ গতির নেট পরিষেবা ব্যবহারের মজা উপভোগ করছেন। এক্ষেত্রে বলে রাখি, Airtel এবং Jio উভয়েই দাবি করেছে যে, এই মুহূর্তে ভারতে সংস্থাদ্বয়ের পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক পরিষেবার দৌলতে ব্যবহারকারীরা 4G-র তুলনায় প্রায় ২০-৩০ গুণ দ্রুতগতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে পারবেন। তদুপরি, এর জন্য ইউজারদের কোনো 5G সিম কার্ডেরও প্রয়োজন পড়বে না।