বড় বিপদে Facebook, Instagram ইউজাররা, ভাইরাল এই পোস্ট এড়িয়ে না চললেই বিপদ

ভুয়ো ভ্যারিফায়েড প্রোফাইল থেকে করা পোস্টটিতে প্রায় ৯৫০টি লাইক পড়েছে এবং ১৪০টিরও বেশি কমেন্ট করা হয়েছে। আর ৯২বার শেয়ার করা হয়েছে

স্ক্যামাররা জালিয়াতি করার নিত্যনতুন উপায় হামেশাই বের করে। যেমন এখন ভ্যারিফায়েড প্রোফাইল ব্যবহার করে Facebook ব্যবহারকারীদের অর্থ চুরি করার নতুন পন্থা খুঁজে পেয়েছে প্রতারকরা। Facebook এবং Instagram -এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি এখনো ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল ভেরিফাই করার জন্য পুরানো পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল। এই প্রক্রিয়ায় – ব্যবহারকারীদের একটি লিঙ্কে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিতে হয়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ ম্যাট নাভারা (Matt Navara) -একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে বলেছে, সম্প্রতি একটি র‌্যান্ডম প্রোফাইল ব্লু টিক পেতে সক্ষম হয়েছে এবং এই ফেক ভ্যারিফায়েড প্রোফাইল থেকে বিভিন্ন ধরণের সন্দেহজনক লিঙ্ক শেয়ার করা হচ্ছে। মূলত Facebook ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং অর্থ চুরি করার অভিপ্রায়ে এই ধরণের পোস্ট ও মেসেজ করা হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।

টুইটারে ম্যাট নাভারার শেয়ার করা স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, স্ক্যামাররা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ‘নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা’ (security issues) সম্পর্কে সতর্ক করছে। সাথে দাবি করা হয়েছে, তথাকথিত নিরাপত্তা সমস্যার কারণে ব্যবহারকারীরা তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টগুলি পরিচালনা করতে বিদ্যমান টুলগুলি আর ব্যবহার করতে পারবেন না। তাই আরো নিরাপদ এবং পেশাদার টুলে স্যুইচ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তাদের৷

‘মেটা অ্যাডস’ (Meta Ads) নামক একটি ভুয়ো প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা বিজ্ঞাপনে লেখা – “নতুন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারে নয়া ফিচার লঞ্চ করা হয়েছে, যা আপনাকে টার্গেটেড অডিয়েন্স -এর কাছে আরও ভালভাবে পৌঁছাতে সাহায্য করবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজ্ঞাপনগুলিকে আরো ভালভাবে অপ্টিমাইজ করতে সক্ষম হবে।” বলাই বাহুল্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের যে নতুন টুলটি ডাউনলোড করতে বলা হচ্ছে তা একটি ম্যালিশিয়াস অ্যাপ্লিকেশন, যা ডিভাইসে ইনস্টল করলে, যাবতীয় তথ্য স্ক্যামারের কাছে পৌঁছে যাবে।

ম্যাট আরও জানিয়েছে, ভুয়ো ভ্যারিফায়েড প্রোফাইল থেকে করা পোস্টটিতে প্রায় ৯৫০টি লাইক পড়েছে এবং ১৪০টিরও বেশি কমেন্ট করা হয়েছে। আর ৯২বার শেয়ার করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে ‘মেটা অ্যাডস’ নামক এই প্রোফাইলের নামের পাশে ব্লু টিক চিহ্ন থাকায় এর থেকে করা পোস্টটি বৈধ বলে মনে হচ্ছে। তবে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এই প্রোফাইলটি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। কেননা এটি ফিশিং প্রোফাইল, যা মূলত স্ক্যামিং বিজ্ঞাপন পোস্ট করছে। এই বিজ্ঞাপন সত্যি মেনে কোনো ব্যবহারকারী যদি প্রদত্ত লিঙ্কে ক্লিক করেন, তবে তাকে ততক্ষনাৎ ম্যালওয়্যার যুক্ত অ্যাপ ডাউনলোডিং পেজে রিডাইরেক্ট করে দেওয়া হবে। একবার যদি এই ম্যালওয়্যার অ্যাপটি ডিভাইসের সিস্টেম দখল করে নেয়, তবে ডেটা চুরি করতে শুরু করবে।

‘মেটা অ্যাডস’ নামক প্রোফাইলটি কিভাবে ভ্যারিফিকেশন ব্যাজ পেতে সক্ষম হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও ফেসবুকের ভ্যারিফিকেশন পদ্ধতিটি যে খুব অ্যাডভান্স এমনটা একদমই নয়। তাই সম্ভাবনা আছে, স্ক্যামারা একটি ভ্যারিফাইড প্রোফাইল হ্যাক করে তার প্রোফাইল পিকচার এবং ইউজার নেম পরিবর্তন করে দিয়েছে। দেখতে গেলে, অতীতে হ্যাকাররা ক্রিপ্টো-স্ক্যামিং করার উদ্দেশ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতাদের প্রোফাইলের অ্যাক্সেস পেতে সক্ষম হয়েছিল। ফলে যেকোনো সাধারণ ভ্যারিফায়েড প্রোফাইল হ্যাক করা হ্যাকারদের কাছে জল-ভাত।

বর্তমানে ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা (Meta), টুইটারের (Twitter) -এর অনুরূপ অর্থপ্রদান করে ভ্যারিফায়েড ব্যাজ পাওয়ার ফিচার নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে। তবে এক্ষেত্রেও স্ক্যামের ঘটনা বাড়বে বই কমবে না। আর এই কারণেই কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ টুইটারের অর্থপ্রদত্ত যাচাইকরণ ব্যবস্থার বা পেইড ভ্যারিফিকেশন প্রসেস সিস্টেমের বিরোধিতা করছে।