Facebook: দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুক ব্যবহার করেন? মেটার কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে মেটা -কে ৭২৫ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ৫,৯৫৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

গত ১৬ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০০৭ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে যারা ফেসবুকে (Facebook) অ্যাকাউন্ট তৈরী করেছেন তাদের অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে। ভাবছেন কীভাবে? আসলে ২০১৮ সালে কেমব্রিজের একটি তথ্য সংগ্রহকারী থার্ড-প্রার্থী অ্যাপ্লিকেশন পার্সোনালিটি বা ব্যক্তিত্ব নির্ভর কুইজ পরিচালনার নাম করে কয়েক কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছিল। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই Facebook (Meta)-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সম্প্রতি আমেরিকার একটি আদালত এই মামলার রায় দিয়েছে। বিচারপতি কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে মেটা -কে ৭২৫ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ৫,৯৫৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তাই কোনো মার্কিন বাসিন্দারা যদি মনে করেন তাদের ফেসবুক ডেটা অপব্যবহার করা হয়েছে তবে তারা অর্থের দাবি করতে পারেন।

জানা গেছে ২০১৮ সালে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামক ব্রিটিশ কনসাল্টিং ফার্ম প্রায় ৮৭ মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটা তাদের সম্মতি ছাড়াই হাতিয়ে নিয়েছিল। এই খবর কিছুদিন বাদে প্রকাশ্যে আসার পর যথেষ্ট রুষ্ট হয়েছিলেন মার্কিন নাগরিকরা। তৎকালীন সময়ে সন্দেহ করা হয়েছিল যে, মানুষের ডেটা ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্যাম্পাইন চালানো হচ্ছে।

অভিযোগ সামনে আসার পরই মেটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গকে স্বয়ং মার্কিন কংগ্রেসের সামনে সাক্ষ্য দিতে হয়। যেখানে তিনি স্বীকার করেন যে, তাদের পরিচালিত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষিত রাখার জন্য আশানুরূপ সক্রিয়তার সাথে কাজ করেনি।

এর চার বছর পর অর্থাৎ ২০২৩ সালে এসে ক্যালিফোর্নিয়ার একজন বিচারক এই মামলা নিষ্পত্তির করার জন্য প্রাথমিক রায় দেন। যেখানে তিনি বলেন, মার্কিন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা একটি ডেডিকেটেড ওয়েবসাইটে ভিজিট করে বা সেটেলমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের কাছে ই-মেল পাঠিয়ে সেটেলমেন্ট অর্থের একটি অংশ দাবি করতে পারবে।

ডেডিকেটেড ওয়েবসাইটে এরপর জানানো হয়েছে – “প্রতি সেটেলমেন্ট ক্লাস সদস্য শুধুমাত্র একটি দাবি (ক্লেম) করতে পারবে।” যেহেতু এই মামলার চূড়ান্ত রায়দান আগামী ৭ই সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা, সেহেতু ভুক্তভোগী ফেসবুক ব্যবহারকারীরা “আদালতের চূড়ান্ত রায় দেওয়ার পরে” এবং বিবাদীর অর্থাৎ ফেসবুকের পক্ষ থেকে আপিল নিষ্পত্তি হওয়ার পরই একমাত্র ক্ষতিপূরণের অর্থ পাবেন৷ এক্ষেত্রে “ক্লেম ফর্ম” জমা দেওয়ার সময়সীমা ২৫শে আগস্ট অবধি নির্ধারিত করা হয়েছে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি দ্বারা প্রভাবিত আমেরিকার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এই ফর্মে তাদের নাম সহ অন্যান্য ব্যক্তিগত বিবরণ লিখে জমা দিতে হবে। যদি তারা প্রমাণ করতে পারেন যে, ২০০৭ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে তবে ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার যোগ্য হবেন। এমনকি যেসকল ব্যক্তি সম্প্রতি তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছেন তারাও মেটা -এর কাছ থেকে নিষ্পত্তির অর্থ দাবি করার অধিকার রাখবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিচারক।

বিপরীতে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা মামলায় ফেসবুক এখনও নিজেদের ভুল স্বীকার করেনি। যদিও এই মামলা দায়ের পর থেকে প্ল্যাটফর্মটি অধিক সক্রিয়তার সাথে তাদের ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসি নিশ্চিত করার কাজ করছে এবং প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থাও নিচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে।