Toyota আনছে দেশের প্রথম ফ্লেক্স-ফুয়েল গাড়ি, চলবে জৈব জ্বালানিতে, 28 সেপ্টেম্বর পর্দাফাঁস

ভারত সরকার দীর্ঘদিন ধরেই বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোতে সুর চড়িয়ে আসছে। দেশে পেট্রোল ডিজেলের আমদানি কমিয়ে রাজকোষ বৃদ্ধি করতেই এই সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের খরচ সামলাতে দেশের নাগরিকদের পকেটের টান কমাতেও এই বিকল্প জ্বালানিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই পথে কয়েকধাপ এগিয়ে এবার নতুন ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। বুধবার তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জাপানি অটোমোবাইল সংস্থা টয়োটা (Toyota) এদেশে ফ্লেক্স-ফুয়েল (Flex-Fuel) ইঞ্জিন চালিত গাড়ি উন্মোচন করবে। এটিই হতে চলেছে ভারতের প্রথম ফ্লেক্স-ফুয়েল চালিত গাড়ির।

এদিন অটোমোবাইল কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (ACMA)-এর দ্বিতীয় বার্ষিক সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা করেন গডকড়ী। কোন মডেল উন্মোচিত হবে, সে সম্পর্কে মুখ খোলেননি মন্ত্রী। কেবল নতুন দিল্লিতে সেই ফ্লেক্স-ফুয়েল গাড়িটির উপর থেকে যে তিনি পর্দা সরাতে চলেছেন, সেটুকুই জানানো হয়েছে।

ফ্লেক্স-ফুয়েল আদতে কী?

ফ্লেক্স-ফুয়েল হল ‘ফেক্সিবেল ফুয়েল’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। গাড়িতে পেট্রোলের বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। তবে তার জন্য প্রয়োজন বিশেষ ইঞ্জিন। ফ্লেক্স-ফুয়েল বলতে পেট্রোলের সাথে ইথানল অথবা মিথানলের মিশ্রণকে বোঝানো হয়। পেট্রোলের চাইতে ইথানল অথবা মিথানললের দহন ভালোভাবে ঘটায় এটি পরিবেশবান্ধব হিসেবেই বিবেচিত হয়। কারণ এটি দহনের পর দূষণ হয় না বললেই চলে।

আখ এবং ভুট্টা থেকে তৈরি হয় ইথানল। তাই এটি গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের ফলে পেট্রোলের আমদানি অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব, এমনটাই মনে করছেন গডকড়ী। ব্রাজিল, জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো বেশ কিছু দেশ ফ্লেক্স-ফুয়েল এবং ফ্লেক্স-ফুয়েল ইঞ্জিনের ব্যবহার ব্যাপক হারে শুরু করে দিয়েছে।

ফ্লেক্স-ফুয়েল জ্বালানি জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের ইঞ্জিন, যা ফ্লেক্স-ফুয়েল ইঞ্জিন হিসেবে খ্যাত। বাজার চলতি কোন যানবাহনের ইঞ্জিনে যদি ফ্লেক্স-ফুয়েল ঢালা হয়, তবে তা বিকলের সম্ভাবনা রয়েছে। এই জাতীয় ইঞ্জিন পেট্রোলের সাথে ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত মিশ্রিত ইথানলে চলতে সক্ষম। যা একটি চিরাচরিত ইঞ্জিনে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

কেন ভারত ফ্লেক্স-ফুয়েল প্রযুক্তিকে পাখির চোখ করেছে?

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য ভারতকে কয়েকটি দেশের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। এদিকে ফ্লেক্স-ফুয়েলের ব্যবহার বাড়লে কার্বনের নির্গমন কমিয়ে ভারতের অর্থনীতি জোরদার করা সম্ভব। কারণ ইথানল এদেশেই তৈরি হবে, আবার দেশের নাগরিকরাই সেটি কিনবেন। এতে সর্বোপরি বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠা যাবে।