Tata, Mahindra-দের মতো দেশীয় সংস্থাদের টেক্কা ভারতে নয়া ইলেকট্রিক SUV আনছে বিশ্বের বৃহত্তম বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা BYD

এ বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) বিক্রির নিরিখে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলা (Tesla)-কে হারিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতার খেতাব পেয়েছে চীনের BYD (বিওয়াইডি)। এবার ভারতের মতো বড় বাজারে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে তারা। গত বছর নভেম্বরে তারা E6 ইলেকট্রিক এমপিভি গাড়ির হাত ধরে এ দেশে প্রবেশ করেছে। যা প্রথমে কমার্শিয়াল ইউজারদের কাছে উপলব্ধ হলেও, এখন প্রাইভেট ক্রেতাদের কাছেও বিক্রি করা হচ্ছে। এবার দেশের বাড়তে থাকা বৈদ্যুতিক এসইউভি মার্কেটে জাত চেনাতে নতুন মডেল লঞ্চের কথা ঘোষণা করল সংস্থাটি।

সংস্থার দ্বিতীয় ই-কার রূপে Atto 3 এসইউভি চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এদেশের বাজারে পা রাখতে চলেছে‌‌। খুব সম্ভবত দিওয়ালিতে। সংস্থার ভারতীয় শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় গোপালকৃষ্ণন আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, “আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই গাড়িটির ডেলিভারি দেওয়া শুরু হতে পারে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, এটি তাদের গ্লোবাল প্রোডাক্ট। BYD Atto 3 ইতিমধ্যেই সিঙ্গাপুর ও জাপানের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

Atto 3 এর পারফরম্যান্সের কথা বললে, এতে রয়েছে সংস্থার পেটেন্ট নেওয়া ব্লেড প্রযুক্তির ৬০.৪৮ কিলোওয়াট আওয়ারে ব্যাটারি। যা সম্পূর্ণ চার্জে ৪৮০ কিমি পথ চলতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে। গোপালকৃষ্ণন বলেন, ” BYD ইতিমধ্যেই ভারতবর্ষের অন্যতম প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। সংস্থার প্রথম গাড়ি E6 এর সফলতা সংস্থাকে নতুন উদ্যম যোগাতে সাহায্য করেছে।”

উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর মাসে লঞ্চ হওয়ার পর থেকে এ যাবৎ কাল পর্যন্ত E6 মডেলটির ৪৫০ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। গাড়িটির কর্মদক্ষতা, ব্যাটারির রেঞ্জ, স্টেবিলিটি ও সমগ্র ড্রাইভিংয়ের অভিজ্ঞতাকে সম্পূর্ণ অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। গোপালকৃষ্ণনের কথায় তারা এই ইলেকট্রিক মডেলটির সম্পর্কে গ্রাহকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছেন। এদিকে, ক’দিন আগেই বিওয়াইডি ভারতে তাদের প্রথম প্যাসেঞ্জার গাড়ির শোরুমটি কেরলে খুলেছে।

উল্লেখ্য, E6 এর মতই Atto 3 বৈদ্যুতিক গাড়িটিও চেন্নাইয়ের কারখানায় যন্ত্রাংশ জুড়ে তৈরি করা হবে। সংস্থার লক্ষ্য প্রতি মাসে দুটো শিফ্ট মিলিয়ে অন্তত ৮০০-৯০০টি গাড়ি প্রস্তুত করা। আর এভাবেই বছরে প্রায় ১০ হাজার ইউনিট উৎপাদন করা যাবে। তাদের ব্যাটারি চালিত গাড়ি কেনার পর গ্রাহকদের যাতে চার্জ দেওয়ার সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে চার্জজোন , ইন্ডিপ্রো-সহ নানা সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধেছে চীনা সংস্থাটি। বর্তমানে দেশজুড়ে ১২টি শহরে রয়েছে বিওয়াইডির ডিলারশিপ। চলতি বছরের মধ্যেই ১৬ থেকে ১৭টি শহরে ২৩ থেকে ২৪টি শোরুম খোলার পরিকল্পনা তাদের।

বিশ্ববাজারে এ বছরের প্রথম ছয় মাস অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ লাখ ৪১ হাজার ব্যাটারি চালিত গাড়ি বিক্রি করেছে‌ বিওয়াইডি। অন্য দিকে, বিশ্বজুড়ে টেসলা ৫ লাখ ৬৪ হাজার গাড়ি বেচতে পেরেছে। অর্থাৎ টেসলার তুলনায় বিওয়াইডির বিক্রি ১৩.৬৫% বেশি। আবার তারা দক্ষিণ কোরিয়ার LG Chem-কে টপকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাটারি প্রস্তুতকারী সংস্থায় পরিণত হয়েছে তারা।