Decathlon অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক সাইকেল লঞ্চ করে চমকে দিল, এক চার্জেই চলবে 100 কিমি

ক্রীড়াসরঞ্জাম বিক্রির জন্য পরিচিত সংস্থা ডিক্যাথলন (Decathlon) স্বাস্থ্য সচেতন ভারতীয়দের জন্য তাদের প্রথম ইলেকট্রিক সাইকেল লঞ্চ করেছে। Rockrider E-ST 100 নামের ই-সাইকেলটি আজ থেকেই সংস্থার রিটেল আউটলেটে উপলব্ধ হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে বেঙ্গালুরুর তিনটি দোকানে ১৫০টি ইউনিট গ্রাহকদের জন্য নিয়ে আসা হবে। প্যাডেল অ্যাসিস্ট ইলেকট্রিক মাউন্টেন সাইকেলটি সর্বোচ্চ ২৫ কিমি/ঘন্টা গতিবেগ নিয়ে চলতে পারবে। ভারতীয় বিধিব্যবস্থা অনুযায়ী এর উপরে স্পিড তোলার চেষ্টা করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈদ্যুতিক মোটরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

Rockrider E-ST 100 সাইকেলটিতে ২৫০ ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ইলেকট্রিক মোটর ব্যবহার করা হয়েছে যা থেকে সর্বাধিক ৪২ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন হয়। এছাড়াও স্যামসাংয়ের তৈরি বদলযোগ্য লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি প্যাক দেওয়া হয়েছে এতে। ব্যাটারির ক্যাপাসিটি ১০.৫ অ্যাম্পিয়ার আওয়ার। এটি সম্পূর্ণ ব চার্জ দিয়ে পরিপুষ্ট করতে সময় লাগবে মাত্র ছয় ঘন্টা এবং প্যাডেল সহযোগে সমতল রাস্তায় এক চার্জে প্রায় ১০০ কিমি পর্যন্ত ছুটতে পারবে।

সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে স্যামসাংয়ের এই ব্যাটারীটি ভারত সরকারের ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড (BIS)এর থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এছাড়াও, ARAI কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও পেয়েছে ই-সাইকেলটি। বিভিন্ন উচ্চতার রাইডারের কথা ভেবে মিডিয়াম এবং লার্জ এই দুই ধরনের ফ্রেমে মিলবে এটি।

ডিক্যাথলন স্পোর্টস ইন্ডিয়ার ই-সাইকেল প্রজেক্ট লিডার এবিন ম্যাথিউ লঞ্চ প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমরা ডিক্যাথলন এর সক্রিয় সাইকেল কমিউনিটির প্রধান কেন্দ্র ব্যাঙ্গালুরুতে প্রাথমিক পর্যায়ে Rockrider E-ST 100 লঞ্চ করেছি। চড়াইয়ের রাস্তায় চলার ক্ষমতার পাশাপাশি প্রতিদিনের ব্যবহারের উপযোগী সক্ষমতা এবং কাঠিন্য থাকায় অতি সহজেই গ্রাহকদের জনপ্রিয় হয়ে উঠবে তা আমরা একপ্রকার নিশ্চিত। অতি শীঘ্রই অন্যান্য শহর গুলিতেও এটিকে আনার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।”

Rockrider E-ST 100 খুঁটিনাটি

প্যাডেল অ্যাসিস্ট

ডিক্যাথলন এর ঝুলিতে থাকা তাদের এই প্রথম বৈদ্যুতিক সাইকেলটিতে প্যাডেল সহযোগে তিন ধরনের রাইডিং মোড দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল ইকো মোড, স্ট্যান্ডার্ড মোড এবং বুষ্ট মোড। ইকো মোডে সর্বোচ্চ গতিবেগ নিয়ন্ত্রিত থাকলেও সর্বোচ্চ দূরত্ব চলবে। অন্যদিকে বুষ্ট মোডে সর্বাধিক গতিবেগ অর্জন করা সম্ভব।

মেকানিক্যাল কম্পোনেন্ট

সাইকেলটিতে 6061 অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোফর্ম টিউব দিয়ে তৈরি ফ্রেম ব্যবহার করা হয়েছে, যার ঘাত প্রতিঘাত সহন করার ক্ষমতা অনেক বেশি। সামনের দিকে রয়েছে ১০০ মিমি লম্বা Suntour XCT30 ফর্ক যুক্ত সাসপেনশন। এর পাশাপাশি Tektro এর ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে এতে। Microshift এর তৈরি 1×8 স্পিড যুক্ত গিয়ার বক্স সাইকেলটিতে বাড়তি সুবিধা জুগিয়েছে। এর পাশাপাশি সামনে ও পিছনে দুদিকেই ২৭.৫ ইঞ্চি চাকার সঙ্গে ২.৩৫ ইঞ্চি চওড়া পাংচার প্রুফ টায়ার দেখতে পাওয়া যাবে।

ইলেকট্রিক্যাল কম্পোনেন্ট

আগেই বলা হয়েছে একে চালিকাশক্তি যোগাবে ২৫০ ওয়াটের ইলেকট্রিক মোটর যা থেকে ৪২ এনএম টর্ক উৎপন্ন হবে। স্যামসাংয়ের তৈরি ৩৮০ ওয়াট আওয়ারের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি প্যাক সাইকেলটিতে শক্তি ভান্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকা এলসিডি ডিসপ্লে প্যাডেল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর লেভেল, স্পিড, ডিসটেন্স, ব্যাটারি লেভেল এবং বাকি ব্যাটারির চার্জে কতদূর চলা সম্ভব এই সমস্ত রকম তথ্যই পরিবেশন করবে।

পাশাপাশি এক বিশেষ ধরনের ইন্টেলিজেন্ট ক্যাডেন্স সেন্সর অতি সহজেই প্যাডেল করার সময় তা নির্ণয় করতে পারবে এবং সেই মতোই মোটরের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করবে। তাছাড়াও ঢালু রাস্তায় রাইডারকে খানিক সুবিধা দেওয়ার জন্য ডিক্যাথলন এর ইলেকট্রিক সাইকেলে ওয়াক মোড দেওয়া থাকছে।

আফটার সেল সার্ভিস এবং ওয়ারেন্টি

সাইকেলটিতে উপলব্ধ থাকা এক বিশেষ ধরনের ডায়াগনস্টিক স্মার্ট সফটওয়্যার এর মাধ্যমে বিক্রির পরবর্তী সময়ে সার্ভিস করতে সুবিধা হবে। এর ফলে সংস্থার নিজস্ব সার্ভিস সেন্টারে ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা অতি সহজেই যাবে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে ব্যবহৃত ফ্রেম, চ্যাসিস এবং হ্যান্ডেল বারের উপর লাইফটাইম ওয়ারেন্টি প্রদান করবে ডিক্যাথলন। সর্বশেষে ব্যাটারিটির উপর ৫০০ চার্জিং সাইকেল কিংবা দুই বছর পর্যন্ত (যেটি আগে হবে) গ্যারান্টি মিলবে সংস্থার তরফে।

কেনার খরচ

ডিক্যাথলন Rockrider E-ST 100 ইলেকট্রিক সাইকেলটি আধুনিক দিনের সমস্ত রকমের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির দ্বারা পরিপূর্ণ। ৮৪,৯৯৯ টাকা খরচ করেই আপনি ঘরে আনতে পারেন এই অসাধারণ সাইকেলটি।