বছরের সেরা গাড়ি Hyundai Ioniq 5 ভারতে আসছে কাল, এক ফোঁটা তেল ছাড়াই ছুটবে 480 কিমি

প্রতীক্ষার অবসান ঘটে অবশেষে আগামীকালই ভারতে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে Hyundai Ioniq 5। Kona Electric SUV এর পর যা এ দেশে হুন্ডাইয়ের দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক গাড়ি । যদিও ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে উপলব্ধ Ioniq 5। কাল অর্থাৎ ডিসেম্বরের ২০ তারিখ থেকেই গাড়িটির বুকিং নেওয়া শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে আগামী মাসেই অফিসিয়াল ভাবে লঞ্চ হতে চলেছে এটি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের “ওয়ার্ল্ড কার অফ দ্যা ইয়ার” পুরস্কার জিতেছে এটি। তাই স্বাভাবিকভাবেই Ioniq 5-কে নিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে উন্মাদনা আকাশছোঁয়া। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে অটো এক্সপো। এই অনুষ্ঠানেও আমরা এবার দেখা পেতে পারি Ioniq 5 এর। এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী বিশেষত্ব রয়েছে এই নতুন বৈদ্যুতিক গাড়িটিতে।

Ioniq 5 সংস্থার প্রথম ব্যাটারি চালিত গাড়ি যেখানে হুন্ডাই প্রথমবারের জন্য লেটেস্ট প্রযুক্তি e-GMP অর্থাৎ ইলেকট্রিক গ্লোবাল মডিউলার প্লাটফর্ম ব্যবহার করেছে। চলতি বছরেই এদেশে লঞ্চ হওয়া Kia EV6 মডেলটিতে ব্যবহার হওয়া একই প্লাটফর্ম এর উপরেই নির্মিত Ioniq 5। এই প্লাটফর্মটি আসলে একটি স্কেটবোর্ডের মত, যার চার কোনায় রয়েছে চারটি চাকা এবং মাঝখানে ফ্ল্যাট ফ্লোরের নিচে অবস্থিত ব্যাটারি প্যাক।

এর মধ্যেই হুন্ডাই জানিয়েছে যে তাদের এই বৈদ্যুতিক গাড়ি Ioniq 5-এ গ্রাহকরা তাদের পছন্দমত গাড়ির ইন্টেরিয়র সিট এবং স্টোরেজ স্পেসকে কাস্টমাইজ করতে পারেন। এতে সামনের সারিতে রয়েছে এক বিশেষ ধরনের প্রিমিয়াম রিলাক্সেশন সিট, যেখানে কাফ (calf) সাপোর্ট দেওয়া রয়েছে। এর পাশাপাশি ইলেকট্রিক অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং লাম্বার সাপোর্ট সিস্টেম উপলব্ধ রয়েছে এখানে। এর স্লিম ডিজাইন কেবিনের ভেতরে অনেকটা জায়গা পেতে সাহায্য করে।

গাড়িটির দ্বিতীয় সারিতেও রয়েছে একগুচ্ছ বৈশিষ্ট্য। পেছনে বসা প্যাসেঞ্জার তার নিজের সুবিধামতো ড্রাইভারের পাশে থাকা সিটকে পিছন থেকে পুস বাটনের মাধ্যমে অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন। এছাড়াও এই সিটগুলিতে তিন ধরনের সিটিং পজিশন সেট করার পাশাপাশি মেমরি ফাংশন দেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের কাস্টমাইজেশন অপশন দেওয়ার জন্য হুন্ডাই এক এমন ধরনের স্লাইডিং সেন্টার কনসোল এনেছে যা ১৪০ মিমি পর্যন্ত সরানো যায়।

আরামদায়ক সিট ও কাস্টমাইজযোগ্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনের পাশাপাশি Ioniq 5 গাড়িটিতে রয়েছে ১২.৩ ইঞ্চির এইচডি টাচ স্ক্রিন মেইন ডিসপ্লে এবং ১২.৩ ইঞ্চির ড্রাইভার ডিসপ্লে। উপরন্তু ওয়্যারলেস ফোন চার্জিং, হেড আপ ডিসপ্লে, সানরুফ সহ আরো অনেক কিছু রয়েছে এতে।

মডেলটির সুরক্ষার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে এটি ভারতের রাস্তায় চলার জন্য অন্যতম নিরাপদ গাড়ি। এর ২০২১ সালের ইউরোপে লঞ্চ হওয়া মডেলটি Euro NCAP ক্র্যাশ টেস্টে ফাইভ স্টার সেফটি রেটিং পেয়েছিল। এর পাশাপাশি Hyundai SmartSense Level 2 ADAS ফাংশন সহ আরো একগুচ্ছ সেফটি ফিচার রয়েছে এই ইলেকট্রিক গাড়িতে। এই ধরনের মোট ২১ টি ফিচারের মধ্যে রয়েছে লেন কিপ অ্যাসিস্ট, অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল, ফরওয়ার্ড কলিশন ওয়ার্নিং এবং ড্রাইভার অ্যাটেনশন ওয়ার্নিং। এর মধ্যে বেশকিছু বৈশিষ্ট্য চলতি বছরে লঞ্চ হওয়া Tucson-র নতুন জেনারেশনে দেওয়া হয়েছে।

তবে Ioniq 5-র ভারতীয় সংস্করণে ব্যবহার করা ব্যাটারির সাইজ সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি এখনো পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক বাজারে এই মডেলটিতে রয়েছে দুই ধরনের ব্যাটারি প্যাক। একটি ৩৮৫ কিমি রেঞ্জ প্রদানকারী ৫৮ কিলোওয়াট আওয়ারের ব্যাটারি প্যাক। আর অন্যটি ৭২.৬ কিলোওয়াট আওয়ারের ব্যাটারী প্যাক যা একবার চার্জে ৪৮০ কিমি পথ চলতে পারে। ৩৫০ কিলোওয়াটের ডিসি ফার্স্ট চার্জার দিয়ে এই ব্যাটারী ৮০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ করতে সময় লাগে মাত্র ১৮ মিনিট।

Hyundai Ioniq 5 ভারতের মাটিতে আসা এখনো পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার এই সংস্থার সবচেয়ে দামি মডেল হতে চলেছে। Kia EV6-র দাম থেকে আন্দাজ করা যায় যে Ioniq 5-র মূল্য মোটামুটি ভাবে ৫০ লাখ টাকার আশেপাশেই থাকবে। এদেশে লঞ্চ করার পর Ioniq 5-র প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে রয়েছে Kia EV6 এবং Volvo XC40 Recharge।