চার্জ হবে মাত্র পাঁচ মিনিটে! স্পেস স্টেশনে থাকা Nasa-র প্রযুক্তি বদলে দেবে ইলেকট্রিক গাড়ির দুনিয়া

বৈদ্যুতিক যানবাহন আজ আর মানুষের কাছে নতুন নয়। জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত গাড়ির মতোই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছাচ্ছে। কিন্তু গণহারে ব্যবহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় চার্জ হওয়ার সময়। যেখানে পেট্রল-ডিজেল চালিত যানবাহনে কয়েক মুহূর্তে ফুল ট্যাঙ্ক জ্বালানি ভরা যায়, সে জায়গায় একটি ব্যাটারি চালিত যানবাহনের ক্ষেত্রে ঘন্টা খানেক বা তারও বেশি সময় লেগে যায় ফুল চার্জ হতে। যদিও এই সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যেই বিশ্বের একাধিক সংস্থা গবেষণা শুরু করে দিয়েছে। তবে এবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA)-র দাবিকে ঘিরে যুগান্তর আসতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বৈদ্যুতিক যানবাহনের গাড়ির ব্যাটারি যাতে ৫ মিনিটে সম্পূর্ণ চার্জ করা যায়, তার সমাধান সূত্র পেতে এবারে হাত লাগালো নাসা।

বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম চার্জিং প্রযুক্তির গাড়ি হল Hyundai Ioniq 5। যা এখনও ভারতে লঞ্চ হয়নি। এর ব্যাটারিটি মাত্র ১৮ মিনিটে ১০-৮০% চার্জ হয়ে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে কেবলমাত্র ৩৫০ কিলোওয়াট ডিসি ফাস্ট চার্জারে চার্জ দিলেই এটি একমাত্র সম্ভব। এদিকে টেসলা সুপার চার্জার গাড়ির ব্যাটারিকে সম্পূর্ণ চার্জ হতে ৪০ মিনিট সময় নেয়। কিন্তু পাঁচ মিনিটে ফুল চার্জ করা মুখের কথা নয় বলেই জানিয়েছে নাসা। কারণ এতে উচ্চ তাপমাত্রা উৎপন্ন হয়। কারণ পাঁচ মিনিটে চার্জ করতে হলে ১৪০০ অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। ফলে ঘটে যেতে পারে বিপত্তি।

বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম চার্জারে সর্বোচ্চ ৫২০ অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তাই যত বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে, উৎপন্ন তাপের পরিমাণও ততই বাড়বে। যার সমাধান পেতে নাসার বায়োলজিক্যাল এবং ফিজিক্যাল বিভাগ একটি নতুন দল গঠন করেছে। যারা বৈদ্যুতিক গাড়ির আলট্রা-ফাস্ট চার্জিংয়ের সমাধানের পথ খুঁজে বের করবে। বর্তমানে তারা যেই প্রযুক্তির উপর কাজ করছে তার নাম – ‘ফ্লো বয়েলিং অ্যান্ড কনডেন্সেশন এক্সপেরিমেন্ট’ বা এফবিসিই (FBCE)। যেটি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনটিতে বসানো হয়েছে। এটি অত্যাধিক তাপ পরিবহণের সময় উৎপন্ন উচ্চ তাপমাত্রা সম্পর্কে অবগত করবে নাসাকে।

এফবিসিই কীভাবে কাজ করবে?

এফবিসিই একাধিক মডিউল নিয়ে গঠিত যাদেরকে বলা হয় ফ্লো বয়েলিং মডিউল বা এফবিএম। যখন ভেতরে কোন শীতল তরল প্রবেশ করানো হবে তখন এই এফবিএম মডিউলটি ফুটতে আরম্ভ করবে। ফুটন্ত তরলের বুদবুদ ফ্লো চ্যানেলের তলানির তরলকে যন্ত্রের দেওয়ালের সংস্পর্শে আনবে।

এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাপের আদানপ্রদান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। এতে যেমন তাপমাত্রা কমে গেলে হদিশ মিলবে, আবার তরলের বাষ্পীভবন ঘটলেও জানান দেবে। একে বলা হচ্ছে ‘সাবকুল্ড ফ্লো বয়েলিং’। এটি বর্তমানে দ্রুততম ইভি চার্জারে ব্যবহৃত বিদ্যুতের ৪.৬ গুণ বৃদ্ধি ঘটাবে। যার পরিমাণ প্রায় ২৬০০ অ্যাম্পিয়ার। যা চার্জিং টাইম ৫ মিনিটে কমিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট।