AC ছাড়াই গাড়ির ভিতর থাকবে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব, এই সব সহজ টোটকায় পাবেন আরাম

একদিকে যখন আরব সাগরে তৈরি হয়েছে এক নতুন ঘূর্ণাবর্ত ঠিক তখনই বঙ্গোপসাগরেও মায়ানমার মুখী এক ঘূর্ণাবর্ত এগিয়ে চলেছে গুটি গুটি পায়। এই দুইয়ের জোড়া ফলায় ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে দিল্লির মৌসম ভবন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে দিল্লি কিংবা তামিলনাড়ু, সর্বত্রই একই চিত্র। সূর্যদেবের কৃপায় দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলেই তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই! কোনো জায়গায় ৪০ পেরিয়েছে কিছুদিন আগেই। এই ভয়ংকর তাপপ্রবাহের মধ্যে বাঁচতে কলকাতায় এসি রেকর্ড হারে বিক্রি হলেও কাজের প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে বাইরে বেরোতে হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কিভাবে নিজের গাড়ির অন্দরমহলকে ঠান্ডা রাখবেন? গাড়িতে এয়ার কন্ডিশনার না থাকলে এখন যাত্রী বা চালক ঘেমেনেয়ে একাকার অবস্থা। এসি না থাকলেও গাড়ির ভিতরের পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা রাখার কয়েকটি টিপস রইল আজকের প্রতিবেদনে।

গাড়ির কেবিন ঠান্ডা করার সহজ কিছু টিপস –

রিফলেক্টিভ কাঁচের ব্যবহার

গাড়ির জানালাতে সাধারণ কাঁচের পরিবর্তে এই সময় ব্যবহার করতে পারেন রিফ্লেক্টিভ গ্লাস। এগুলি যে শুধু কেবলমাত্র গাড়ির কেবিনের গোপনীয়তা রক্ষা করে তা নয় বরং বাইরের সূর্যরশ্মির প্রভাব থেকেও কিছুটা বাঁচানোর ক্ষমতা রয়েছে। ফলে গাড়ির অন্দরমহলের এর তাপমাত্রা খানিকটা হলেও নিম্নমুখী হয়। তবে প্রবল গরমের দিনগুলিতে এর কার্যকারিতা ততটা নাও হতে পারে।

ড্যাশবোর্ডকে তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখা

যদি প্রখর রোদ্দুরের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আপনার গাড়িকে পার্ক করতে হয় তবে অবশ্যই মোটা তোয়ালে দিয়ে ড্যাশবোর্ডের অংশটি ঢেকে দিন। আসলে ড্যাশবোর্ড সাধারণত প্লাস্টিক এবং এবিএস এর মাধ্যমে তৈরি হয় বলেই সূর্যের তাপ অতি সহজেই সামনের উইন্ডশিল্ড দিয়ে প্রবেশ করে একে উত্তপ্ত করে তোলে। তারপর উত্তপ্ত ড্যাশবোর্ড থেকেই কেবিনের সমস্ত অংশে উষ্ণ ভাব ছড়িয়ে পড়ে। সেই কারণেই তোয়ালে দিয়ে ড্যাশবোর্ড ঢেকে রাখলে তা সহজে উত্তপ্ত হয় না।

ছায়াযুক্ত স্থানে গাড়ি পার্ক করা

এমন গরমের দিনে সম্ভব হলে কোনো ছায়াযুক্ত স্থানে গাড়িটি পার্ক করতে পারলে ভালো। কোনো গাছের ছায়া বা মাথার উপরে ছাদ আছে এমন স্থানকে বেছে নিতে হবে এক্ষেত্রে। এর ফলে সরাসরি গাড়ির মধ্যে সূর্যের উষ্ণ রশ্মি প্রবেশ করতে পারে না বলে কেবিনের ভিতরের অংশের তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকে।

জানলার কাঁচ সামান্য খুলে রাখা

এই পদ্ধতি অবলম্বন করে কেবিনের তাপমাত্রাকে খানিকটা নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। যখনই রোদ্দুরের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি পার্ক করবেন তখন জানলার কাঁচ অতি সামান্য নামিয়ে রাখলে বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস সামান্য হলেও কেবিনে প্রবেশ করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত জানলার কাঁচ কোনোভাবেই যেন এক আঙুলের বেশি না নামানো থাকে। নচেৎ কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে থাকা ব্যক্তি ওই খোলা অংশ দিয়ে চোর্যবৃত্তি সম্পাদন করতে পারেন।

বাজার চলতি কিছু সামগ্রী

আজকালকার দিনে গাড়ির যন্ত্রপাতির বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রিক কিনতে পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রেই সৌরশক্তি দ্বারা পরিচালিত ছোট এগজস্ট ফ্যান লাগানো যেতে পারে যা কেবিনের ভিতরের গরম হাওয়া জানলা থেকে বাইরে ঠেলে বের করে দেয়। তাছাড়াও কুলিং প্যাড ব্যবহার করেও খানিকটা আরামদায়ক অনুভূতি পেতে পারেন আপনি।

দরজা জানলা সঞ্চালন করা

আরও একটি সহজ উপায় অবলম্বন করতে পারেন আপনি। এক্ষেত্রে গাড়ির দরজা এবং জানালাগুলিকে সঞ্চালন করে ভেতরের খানিকটা গরম হাওয়ার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। প্রথমেই ড্রাইভারের পাশের জানালা গুলি খুলে দিন। এরপর বাকি দুটি দরজা কিংবা পিছনের দরজাটিকে লোয়ারের মতো ব্যবহার করুন। মানে এই দরজাগুলি একটু জোরে সঙ্গে খুলে আবার বন্ধ করুন। বেশ কয়েকবার এমন করলেই কেবিনের ভিতরের গরম হওয়া অতি দ্রুতই বাইরে বেরিয়ে আসবে।