পারফরম্যান্সে মন ভরছে না? বাইকে এই 5 পরিবর্তন করতে পারলেই কেল্লাফতে

প্রবল প্রতিযোগিতার মধ্যে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বাইক নির্মাতাকেই আকর্ষণীয় দাম বজায় রাখতে নানা ধরনের “কস্ট কাটিং” করতে বাধ্য হয়। তাই অনেক সময়ই নিজের পছন্দের বাইক কিনতে…

প্রবল প্রতিযোগিতার মধ্যে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বাইক নির্মাতাকেই আকর্ষণীয় দাম বজায় রাখতে নানা ধরনের “কস্ট কাটিং” করতে বাধ্য হয়। তাই অনেক সময়ই নিজের পছন্দের বাইক কিনতে গেলে তার প্রত্যেকটি অংশ ভালো হওয়া সত্ত্বেও কোনো একটি কিংবা দুটি খারাপ অংশ নজরে আসে আমাদের। খেয়াল করলে দেখবেন সবকটি মডেলের ক্ষেত্রেই এই বিষয়টি প্রযোজ্য। তবে এই সমস্যার সমাধানের হাজারো সুযোগ রয়েছে আপনার হাতে। নিজের শখের বাইকটির দুই-চারটি পার্টস সহজেই বদলে তার পারফরম্যান্স অনেকটা বাড়িয়ে ফেলা সম্ভব। এই ভাবনা থেকে জন্ম নিয়েছে বাইক মডিফিকেশনের। কেবলমাত্র এর মধ্যে বাইরের ডিজাইনের পরিবর্তন হয় এমন নয় সাথে বদলায় মোটরসাইকেলের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু যন্ত্রাংশ। আপনার শখের বাইকটিতে কোন কোন মডিফিকেশন করলে তা হয়ে উঠবে অনবদ্য সেগুলি দেখে নিন এখানে।

সাসপেনশন

সাধারণত দুই ধরনের সাসপেনশন দেখতে পাওয়া যায় বাইকে- একটি প্রিলোড অ্যাডজাস্টেবল আর অন্যটি রিবাউন্ড অ্যাডজাস্টেবল। সাধারণত এর ফলে বাইকের সাসপেনশন শক্ত হবে নাকি নরম তা স্থির করা যায়। একটি উন্নত মানের সাসপেনশন যেমন আপনার বাইকটির আয়ু বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে তেমনই দীর্ঘ রাস্তা চলার সময় আপনার ক্লান্তি অনেকটাই কম অনুভব করাবে। অন্যান্য কোনো মডেলের সাসপেনশন কিংবা আফটার মার্কেট বিভিন্ন রকমের দামি সাসপেনশন লাগাতে পারেন আপনার বাইকটিতে। তবে মনে রাখবেন অত্যাধিক নরম সাসপেনশন লাগানো থাকলে ঝাঁকুনি কম হলেও বাইকের স্টেবিলিটি অনেকটাই কমে আসে। তাই অবশ্যই এই বিষয়টি খেয়াল রেখে দক্ষ মেকানিক দ্বারা বাইকের সাসপেনশন পরিবর্তন করুন।

ব্রেকিং সিস্টেম

আধুনিক দিনের বাইকগুলিতে ব্রেকের মধ্যে থাকে মোট তিনটি অংশ- ক্যালিপার, ডিস্ক এবং ব্রেক ফ্লুইড। অতি সহজে বাইকের ব্রেকিং সিস্টেমকে উন্নত করতে চাইলে পুরাতন ব্রেক ফ্লুইড বদলে নামি সংস্থার তৈরি ফ্লুইড ব্যবহার করতে পারেন। এই নতুন ফ্লুইডের সান্দ্রতার পরিবর্তনের ফলে ব্রেকের পারফরম্যান্স যথেষ্ট উন্নত হবে। তাছাড়াও বাইকের সঙ্গে লাগানো সাধারণ কোম্পানির ব্রেকের ক্যালিপার বদলে আফটার মার্কেট দামি ক্যালিপার লাগালে ব্রেকের থামানোর ক্ষমতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও প্রয়োজনে ব্রেকের ডিস্কটিকেও পাল্টাতে পারেন। এর পাশাপাশি সাধারণ ব্রেক ও ক্লাচ লিভার এর পরিবর্তে বিভিন্ন সংস্থার তৈরি উন্নত এডজাস্টেবল লিভার লাগানো যেতে পারে।

ECU

বর্তমান দিনের ফুয়েল ইনজেক্টটেড বাইক কিংবা স্কুটার এর মধ্যেই লাগানো থাকে একাধিক সেন্সর। আর এই সবকটি সেন্সরকে প্রতি মুহূর্তে কন্ট্রোল করার জন্য লাগানো থাকে ইঞ্জিন কন্ট্রোল ইউনিট বা ইসিইউ। আপনি প্রয়োজনে এই ইউনিটটিকে বদলে ফেলে বাইকের ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্যই অনেকখানি পাল্টে ফেলতে পারে। চনমনে স্পোর্টস বাইকের পরিবর্তে আপনার বাইকটি হয়ে উঠতে পারে একটি আদর্শ ট্যুরিং মডেল। এই ইসিইউ আদতে একটি সার্কিট বোর্ডের মতই দেখতে যা সাধারণত কম্পিউটারের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থা এই চিপসেট সরবরাহ করছে।

টায়ার

গাড়ি হোক কিংবা মোটরসাইকেল সব ক্ষেত্রেই টায়ারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিভিন্ন রাস্তায় চলাচলের জন্য প্রয়োজন নানা ধরনের টায়ারের। যেমন শহরের রাস্তায় চলতে গেলে সাধারন টায়ার ব্যবহৃত হলেও পাহাড়ি রাস্তায় চালানোর জন্য প্রয়োজন অফ-রোড টায়ারের। তাই অতি সহজেই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার চলতি বিভিন্ন জনপ্রিয় সংস্থার টায়ার ব্যবহার করতে পারেন আপনি। তবে কোনোভাবেই অধিক চওড়া টায়ার লাগানোর চেষ্টা করবেন না এর ফলে ইঞ্জিনের উপর অত্যাধিক চাপ পড়ায় মাইলেজ যথেষ্ট কমে আসে।

চেন ও স্প্রকেট

যত শক্তিশালী ইঞ্জিন সমৃদ্ধ বাইক হোক না কেন তার পিছনের চাকায় সমস্ত শক্তি পৌঁছে দিতে ভরসা করতে হয় চেন ও স্প্রকেটের উপর। নিয়মিত ভাবে এই চেনের যত্ন নিলে অবশ্যই সারা বছর ধরেই আপনার বাইকের থেকে নিজের মন মত পারফরম্যান্স পেতে পারবেন। তবে যদি দ্রুত অনেক বেশি গতিবেগ অর্জন করার প্রয়োজন পড়ে তবে অবশ্যই বেশি দাঁত যুক্ত স্প্রকেট লাগানো ভালো। সাধারণত সাধারণত ক্রুজার সেগমেন্টের বাইকগুলিতে কম দাঁত যুক্ত স্প্রকেট ব্যবহার করা হয়।

সর্বোপরি একটি বিষয় মাথায় রাখবেন বিভিন্ন মোটরসাইকেল নির্মাণকারী সংস্থাগুলি তাদের প্রতিটি মডেল বাজারে আনার আগে তার সব ধরনের পরীক্ষা সম্পন্ন করে। এমনকি এর ডিজাইন এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশগুলি দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা নির্ধারিত করা হয়েছে। তাই অত্যাধিক মাত্রায় মডিফিকেশন অনেক সময়ই বাইকটির জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকারক। ফলে ইঞ্জিন এবং অন্যান্য পার্টসগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মডিফাই করা উচিত।