নতুন Baja Pulsar P150 vs Pulsar N160, দুই ধুরন্ধর বাইকের লড়াইয়ে এগিয়ে কে, আপনার উপযুক্ত কোনটা

এদেশের বাইকের বাজার বরাবরই কমিউটার সেগমেন্ট প্রধান হওয়ায় সিংহভাগ বাইক নির্মাতারই লক্ষ্য এদিকে। তবে বিগত বেশ কয়েক বছর যাবত ১৫০ সিসি-১৬০ সিসি রেঞ্জের বাইকগুলির কদর বেড়েছে কয়েকগুণ। বাজাজ, টিভিএস, হোন্ডা কিংবা হিরো এদেশের এই চারটি জনপ্রিয় বাইক নির্মাতার প্রত্যেকের দখলেই রয়েছে একের বেশি এই সেগমেন্টের বাইক। বাজাজ অটো সম্প্রতি আরো একটি ১৫০ সিসির বাইক হাজির করেছে এই তালিকায়। নতুন Pulsar P150 এখন আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার প্রশ্ন পালসার N160 এর থেকে হাজার দশেক টাকা কম মূল্যে লঞ্চ হওয়া P150 কেনা কতটা যুক্তিসঙ্গত? কী কী পরিবর্তন রয়েছে এদের মধ্যে? চলুন দেখে নেওয়া যাক।

Bajaj Pulsar P150 vs Pulsar N160: ডিজাইন

যদিও যে কোন কিছুর ডিজাইন সম্পূর্ণভাবেই আপেক্ষিক, একজন মানুষের পছন্দ অন্যজনের সমতুল্য নাও হতে পারে। তবুও বাজাজের আইকনিক পালসার সিরিজের N160 ও P150 বাইক দুটি অত্যাধুনিক ডিজাইন সমৃদ্ধ হওয়ায় আপনার যথেষ্ট নজর কাড়বে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়। Pulsar P150 প্রসঙ্গে বলতে গেলে এটি যথেষ্ট স্পোর্টি লুক ও শার্প ডিজাইন নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। আন্ডার বেলি এগজস্ট সিস্টেম, মনোশক রিয়ার সাসপেনশন সবকিছুই নতুনত্বে ভরা। অন্যদিকে, Pulsar N160 খানিকটা একই ধরনের দেখতে হলেও এর ডিজাইন আরো বেশি স্পোর্টি লুকের দাবিদার। তাই এক কথায় বলতে গেলে যুব সম্প্রদায়ের কাছে বেশি সমাদর পাবে N160।

Bajaj Pulsar P150 vs Pulsar N160: ফিচার্স

১৫০ সিসি-১৬০ সিসির বাইকগুলি এতটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা যে আকর্ষণীয় দামের মধ্যে আধুনিক বৈশিষ্ট্যের সংযুক্তিকরণ ঘটানো বেশ কষ্টসাধ্য বাইক নির্মাতাদের কাছে। যদিও এই সেগমেন্টে প্রথম ডুয়েল চ্যানেল এবিএস এর মত সেফটি ফিচার্স নিয়ে এসে বাজার মাত করেছে N160। এর পাশাপাশি বাইকটিতে রয়েছে আন্ডার বেলি একজস্ট সিস্টেম, এলইডি প্রজেক্টর হেডল্যাম্প, স্প্লিট সিট, গিয়ার পজিশন ইন্ডিকেটর, ক্লক, ফুয়েল লেভেল মিটার সহ সবকিছুই। এর তুলনায় নতুন বাইক হওয়া সত্বেও পালসার P150-তে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস ছাড়া N160-র প্রায় সমস্ত বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান। এর স্ট্যান্ডার্ড সংস্করণে রয়েছে সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস।

Bajaj Pulsar P150 vs Pulsar N160: ব্রেক

পালসার N160-র ডুয়েল চ্যানেল এবিএস ভার্সনের সামনের চাকায় ৩০০ মিমি ডিস্ক দেওয়া হলেও সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস সংস্করণের সামনে রয়েছে ২৮০ মিমি ডিস্ক ব্রেক। যদিও দুটি ভ্যারিয়েন্টের মডেলেই পেছনের চাকায় একই ধরনের ২৩০ মিমি ডিস্ক বিদ্যমান। তুলনামূলকভাবে নতুন লঞ্চ হওয়া পালসার P150-তে সামনের চাকায় অপেক্ষাকৃত ছোট ২৬০ মিমি ডিস্ক ও পিছনের চাকায় ২৩০ মিমি ডিস্ক দেওয়া হয়েছে। যদিও এর বেস ভার্সনের পিছনের চাকায় ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক দেখতে পাওয়া যায়।

Bajaj Pulsar P150 vs Pulsar N160: ইঞ্জিন

সম্পূর্ণ নেকেড স্পোর্টস বাইক হওয়ায় বাজাজ পালসার N160 তে ১৬৪.৮২ সিসির সিঙ্গেল সিলিন্ডার, এয়ার কুল্ড SOHC ইঞ্জিন চলার শক্তি যোগায়। ৮,৭৫০ আরপিএম গতিতে সর্বোচ্চ ১৫.৭ বিএইচপি এবং ৬,৭৫০ আরপিএম গতিতে সর্বোচ্চ ১৪.৬এনএম টর্ক উৎপাদন করার ক্ষমতা রয়েছে এর। সাথে রয়েছে পাঁচ গতির গিয়ার বক্স।

অন্যদিকে, পালসার P150-র ক্ষেত্রে ১৪৯.৬৮ সিসির সিঙ্গেল সিলিন্ডার এয়ারকুল্ড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ফাইভ স্পিড গিয়ার বক্স যুক্ত এই ইঞ্জিনটি ৮,৫০০ আরপিএম গতিতে সর্বোচ্চ ১৪.৩ বিএইচপি ও ৬,০০০ আরপিএম গতিতে সর্বাধিক ১৩.৫ এনএম টর্ক জেনারেট করতে পারে।

Bajaj Pulsar P150 vs Pulsar N160: দাম

দামের দিক থেকে বিচার করলে P150 নিঃসন্দেহে অনেকটাই সস্তা। এর বেস সংস্করণের এক্স শোরুম মূল্য ১.১৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে N160-র সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস ভ্যারিয়েন্ট কিনতে খরচ হবে ১.২৭ লাখ টাকা(এক্স শোরুম)।

পরিশেষে বলা যায় দুটি বাইকেই অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য থাকলেও N160 খানিকটা বেশি স্পোর্টি স্টাইল নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। অপর হাতে থাকা P150 বাইকটি অবশ্যই যুব সম্প্রদায়ের কথা ভেবেই বাজারে আনা হয়েছে। এটি ভবিষ্যতে পালসার ১৫০-র পুরনো সংস্করণটির পরিবর্ত হিসেবে সুনাম কুড়োবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *