এই লক্ষণগুলোই বলে দেয় আপনার বাইকের ইঞ্জিনের তেল বদলানোর সময় এসে উপস্থিত

যে কোনো পেট্রোল চালিত বাইক বা স্কুটারের প্রধান অংশ বলা হয়ে থাকে তার ইঞ্জিনকে। কার্যত একে টু-হুইলারের হৃদপিণ্ড বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। ইঞ্জিনকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে যেমন প্রয়োজন পর্যাপ্ত জ্বালানি, তেমনই প্রয়োজন ইঞ্জিন অয়েলের। একটি ইঞ্জিনের মধ্যে থাকে বিভিন্ন রকমের ধাতবাযন্ত্রাংশ। যন্ত্রাংশগুলির মধ্যে ঘর্ষণ বল কমানোর জন্যই প্রয়োজন হয় ইঞ্জিন অয়েলের। ঘর্ষণ বল যত কম হবে ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স হবে তত বেশি, আর তার সাথেই বাড়বে ইঞ্জিনের কার্যকাল। তবে সময়ের সঙ্গে ইঞ্জিনের ভিতরের প্রকোষ্ঠে থাকা ইঞ্জিন অয়েল তার রাসায়নিক গুণাগুণ হারায় এবং তার মধ্যে জমে নানা রকম নোংরা।

তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই ইঞ্জিন অয়েলের গুণগতমান পরীক্ষা করে দেখা উচিত। অনেকেই ভুল ধারণার বসবর্তী হয়ে কেবলমাত্র কিছুদিন পরপর খানিকটা অতিরিক্ত ইঞ্জিন অয়েল ঢেলে দিয়ে এর পরিমাণ বজায় রাখেন। কিন্তু মনে রাখবেন প্রতিনিয়ত ইঞ্জিনে তৈরি হওয়া প্রচন্ড উত্তাপ এবং নানা কারণে এই অয়েল দীর্ঘস্থায়ী ভাবে তার কার্যকারিতা বজায় রাখতে পারে না। সেই কারণেই মোটরসাইকেলের মালিক হলে আপনাকে এই কয়েকটি সংকেত দেখে ইঞ্জিনের মধ্যে থাকা ইঞ্জিন অয়েলের অবস্থা নির্ণয় করতে হবে।

পূর্বের তুলনায় ইঞ্জিনের শব্দ বেশি হওয়া

যদি আচমকাই আপনার বাইকের ইঞ্জিনটি অপ্রত্যাশিতভাবে অতিরিক্ত শব্দ তৈরি করে তবে অবশ্যই এটি ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার একটি সংকেত। নতুন অবস্থায় ইঞ্জিন অয়েলটি বাইকের ইঞ্জিনের মধ্যে থাকা ধাতব অংশগুলির উপর একটি আস্তরণ তৈরি করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই তেলের আস্তরণের কার্যকারিতা কমে আসে এবং তার সাথেই এই ধাতব ও যন্ত্রাংশগুলি একটির সঙ্গে অন্যটি অতিরিক্ত ঘর্ষণ সৃষ্টি করে। তার থেকেই তৈরি হয় এই বিকট শব্দ।

তেলের রং কালো হয়েছে কিনা যাচাই করা

বেশ কিছু মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে গাড়ির মতোই ইঞ্জিনের মধ্যে তেলের গুণগত মান এবং পরিমাণ যাচাই করার জন্য এক ধরনের প্লাস্টিকের তৈরি কাঠির ন্যায় অংশ থাকে। আবার কোনো কোনো ইঞ্জিনে একটি ছোট ছিদ্র দিয়ে ইঞ্জিন অয়েলকে দেখতে পাওয়া যায়। এই দুই রকম ভাবেই ইঞ্জিন অয়েলের বর্তমান রং সঠিকভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব। যখন এই তেল নতুন অবস্থায় থাকে তখন তা খানিকটা হালকা বাদামি রঙের এবং স্বচ্ছ হয়। ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে এর রং পরিবর্তিত হয়ে কালো এবং বেশ ঘন অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। তাই প্রয়োজনে ইঞ্জিন অয়েল এর খানিকটা অংশ আঙুলে নিয়ে ঘষে দেখুন। এর ফলে যদি আপনি সেই তেলের মধ্যে মোলায়েম ভাব অনুভব না করেন এবং তার মধ্যে সূক্ষ্ম অংশ দেখতে পান তবে তৎক্ষণাৎ ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন।

তেলের উচ্চতা কমে আসা

ইঞ্জিনের পাশের থাকা ছোট অংশ দিয়ে এর ভেতরের প্রকোষ্ঠের ইঞ্জিন অয়েলের পরিমাণ দেখতে পাওয়া যায়। যদি তা সর্বনিম্ন দাগের নিচে নেমে আসে তবে অবশ্যই এই ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার সময় আসন্ন।

ড্যাশবোর্ডের ওয়ার্নিং লাইট

গাড়ির মতো আজকালকার দিনের অনেক বাইকেই ইঞ্জিনের সঙ্গে লাগানো সেন্সরের মাধ্যমে তার তেলের গুণগত মানের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ওয়ার্নিং লাইট লাগানো থাকে ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারে। যখনই ইঞ্জিন অয়েলের পরিবর্তন করার সময় হবে তখনই এই ওয়ার্নিং লাইট অন হয়ে আপনাকে তার জানান দেবে।