পরিবেশের কোনও ক্ষতি করে না, দেশের সবচেয়ে সস্তা 5 বৈদ্যুতিক গাড়ির নাম জানতেন?

আজ ৫ই জুন সারা পৃথিবী জুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে ৫০তম বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে আমাদের এই গ্রহকে বাঁচাতে নানা ধরনের পরিবেশবান্ধব পন্থার অবলম্বনের কথা প্রতি বছর স্মরণ করাতেই এই দিনটি উদযাপিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশেই পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যানবাহন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ পেট্রোল-ডিজেল ইঞ্জিনের বদলে সম্পূর্ণভাবে বৈদ্যুতিক শক্তির উপরেই আস্থা রেখেছে। এদেশেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইলেকট্রিক ভেহিকেলের (ইভি) সংখ্যা। ইভি মাত্রই দামী এমন ধারণা প্রচলিত থাকলেও দেশে এমন কিছু মডেল রয়েছে, যাদের দাম সাধ্যের মধ্যে। এই প্রতিবেদনে তেমনই দেশের সবচেয়ে সস্তা পাঁচটি বৈদ্যুতিক গাড়ির নাম জেনে নেওয়া যাক।

দেশের সবচেয়ে সস্তা 5টি ইলেকট্রিক গাড়ি

MG Comet EV
(দাম: ৭.৯৮ লাখ – ৯.৯৮ লাখ টাকা)

ভারতের এন্ট্রি লেভেলের ইলেকট্রিক গাড়ির তকমা কিছুদিন আগে পর্যন্ত ও টাটা টিয়াগো ইভি এর হাতে থাকলেও সম্প্রতি সেই শিরোপা অর্জন করেছে এমজি কমেট ইভি। ব্যাটারি চালিত এই গাড়িটির এক্স শোরুম মূল্যের রেঞ্জ ৭.৯৮ লাখ টাকা থেকে ৯.৯৮ লাখ টাকার মধ্যেই। এতে শক্তি ভান্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ১৭.৩ কিলোওয়াট আওয়ার এর লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি প্যাক। ব্রিটিশ এই নির্মাতার দাবি মত একবার চার্জ দিলে কমেট প্রায় ২৩০ কিমি পথ পাড়ি দিতে পারে। একে চালিকাশক্তি যোগায় ৪২ বিএইচপি শক্তি এবং ১১০ এনএম টর্ক উৎপাদনকারী একটি বৈদ্যুতিক মোটর, যা পিছনের অ্যাক্সেলের উপর অবস্থিত।

Tata Tiago EV

(দাম: ৮.৬৯ লাখ – ১২.০৪ লাখ টাকা)

টাটা মোটরসের সবচেয়ে সস্তা বৈদ্যুতিক গাড়ি হল টিয়াগো ইভি। ১৯.২ কিলোওয়াট আওয়ার এবং ২৪ কিলোওয়াট আওয়ার এই দুই ধরনের ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে এতে। প্রথমটিতে ৬০ বিএইচপি ও দ্বিতীয়টিতে ৭৪ বিএইচপি শক্তি উৎপাদনকারী ইলেকট্রিক মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যাটারি ভেদে রাইডিং রেঞ্জ প্রায় ২৫০ কিমি এবং ৩১০ কিমি । টিয়াগো ইভি এর বেস ভ্যারিয়েন্টের এক্স শোরুম মূল্য ৮.৬৯ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২.০৪ লাখ টাকা পর্যন্ত গিয়েছে।

Citroen eC3

(দাম: ১১.৫০ লাখ – ১২.৭৬ লাখ টাকা)

জীবাশ্ম জ্বালানি দ্বারা পরিচালিত হ্যাচব্যাক মডেল Citroen C3 এর বৈদ্যুতিক সংস্করণ হল Citroen eC3। এই গাড়িটির মধ্যে ২৯.২ কিলোওয়াট আওয়ার এর লিথিয়াম ফেরো ফোসফেট (LFP) ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ চার্জে প্রায় ৩২০ কিমি পর্যন্ত ছুটতে সাহায্য করে। Citroen eC3 এর সামনের অ্যাক্সেলের উপরেই বসানো রয়েছে ইলেকট্রিক মোটর, যা থেকে উৎপন্ন হওয়া পাওয়ার এবং টর্ক যথাক্রমে ৫৬ বিএইচপি এবং ১৪৩ এনএম। দাম ১১.৫০ লাখ- ১২.৭৬ লাখ টাকা (এক্স শোরুম)।

Tata Tigor EV

(দাম: ১২.৪৯ লাখ – ১৩.৭৫ লাখ টাকা)

দেশীয় গাড়ি নির্মাতা টাটা মোটরসের তৈরি আরও একটি অন্যতম সেরা ইলেকট্রিক সেডান হল টিগর ইভি। এর বেস ভার্সনের এক্স শোরুম মূল্য ১২.৪৯ লাখ টাকা। টপ ভার্সনের ক্ষেত্রে দাম পড়বে ১৩.৭৫ লাখ টাকা। ২০ লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে ভারতের একমাত্র বৈদ্যুতিক সেডান হল এটি। ২৬ কিলোওয়াট আওয়ারের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির সৌজন্যে একবার চার্জ দিলে ৩১৫ কিমি রাস্তা পাড়ি দিতে পারে টিগর ইভি। এর মধ্যে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক মোটর সর্বোচ্চ ৭৪ বিএইচপি শক্তি এবং সর্বাধিক ১৭০ এনএম টর্ক উৎপন্ন করতে পারে।

Tata Nexon EV

(দাম: ১৪.৪৯ লাখ – ১৯.৫৪ লাখ টাকা)

আমাদের দেশের ব্যাটারি চালিত চার চাকা গাড়ির বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মডেল হল টাটা নেক্সন ইভি। এক কথায় বলতে গেলে এখনও পর্যন্ত ভারতে ইলেকট্রিক গাড়ি যতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছে তার সিংহভাগ কৃতিত্বই এর দখলে। বর্তমানে প্রাইম এবং ম্যাক্স ভার্সনে বাজারে উপলব্ধ টাটা নেক্সন টিভি। এর প্রাইম মডেলে ৩০.২ কিলোওয়াট আওয়ারের ব্যাটারি প্যাক থাকলেও ম্যাক্স ভার্সনে ৪০.৫ কিলোওয়াট আওয়ার ব্যাটারি উপস্থিত। এই দুই ধরনের ব্যাটারি প্যাকের ঘোষিত রাইডিং রেঞ্জ যথাক্রমে ৩১২ কিমি ও ৪৫৩ কিমি।