Auto Expo 2023: দূষণ নিয়ন্ত্রণে নয়া দিশা, দেশের প্রথম হাইড্রোজেন ইঞ্জিন চালিত গাড়ির আত্মপ্রকাশ
ভারতে প্রত্যহ যে হারে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। যে...ভারতে প্রত্যহ যে হারে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। যে কারণে দেশের সমস্ত গাড়ির দূষণ নির্গমনের বিধিতে আনা হয়েছে সংশোধন। আগের চাইতে যা বহুলাংশে কঠোর। গাড়ি থেকে যত কম কার্বন বাতাসে মিশবে, পরিবেশের জন্য ততই কল্যাণকর। সেদিকে নজর দিয়ে অটো এক্সপো ২০২৩-এ দেশের প্রথম হাইড্রোজেন ইন্টার্নাল কম্বাশন ইঞ্জিন বা আইসিই (ICE) ভেহিকেলের প্রদর্শন করল ভারতের অন্যতম ট্রাক নির্মাতা অশোক লেল্যান্ড (Ashok Leyland)। ইঞ্জিনে তেলের বদলে হাইড্রোজেনের দহন ঘটিয়ে চলার শক্তি অর্জন করবে গাড়িটি।
২০২৩-এর এপ্রিল থেকে ভারতের সকল যানবাহনের আরও কঠোর নির্গমন বিধি বা দ্বিতীয় পর্যায়ের বিএস৬ নীতি বলবৎ হতে চলেছে। এহেন পরিস্থিতিতে দেশীয় সংস্থাটি তাদের নতুন প্রযুক্তি এনে পরিবেশ দূষণ রোধে নয়া দিশা দেখালো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ H2-ICE বা হাইড্রোজেন ইন্টার্নাল কম্বাশন ইঞ্জিন হল প্রচলিত পেট্রল-ডিজেল পাওয়ারট্রেনের থেকে কম দূষণ নির্গত করে। এটি থেকে উৎপন্ন বর্জ্যে প্রধান গ্রীন হাউস গ্যাস – কার্বন ডাই অক্সাইড বা CO2 অনুপস্থিত।
H2-ICE ইঞ্জিন, কেবলমাত্র হাইড্রোজেন জ্বালানি হিসেবে গ্রহণ করার ফলে এই জাতীয় যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড এবং হাইড্রোকার্বনের মত ক্ষতিকর গ্যাস উৎপন্ন হয় না। ফলে এটিকে বৈদ্যুতিক যানবাহনের মতোই পরিবেশবান্ধব গাড়ি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। বহু চেষ্টার পর অশোক লেল্যান্ড আইসি ইঞ্জিনে হাইড্রোজেনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে সফল হয়েছে।
এই জাতীয় গাড়ি আইসিই মডেলপ্রেমীদের পাশাপাশি পরিবেশ সচেতকদেরও হৃদয় হরণ করবে। কারণ এতে জীবাশ্ম জ্বালানি গাড়ির বেশি ক্ষমতার স্বাদ যেমন মিলবে, আবার দূষণের দিক থেকেও নিশ্চিন্ত থাকা যাবে। ভারত সরকার গ্রীন হাইড্রোজেন এবং এর প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সুর চড়িয়ে আসছে। ভবিষ্যতে কার্বন নির্গমন শূন্য করার লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে এটি একটি অন্যতম পদক্ষেপ হবে বলেই বিশ্বাস কেন্দ্রের।
বিকল্প জ্বালানির মধ্যে হাইড্রোজেনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে বিদেশের ওপর পেট্রোল-ডিজেলের ক্ষেত্রে নির্ভরশীলতা কমবে। বর্তমানে দেশের ৯৫ শতাংশ জ্বালানি জন্য বিদেশের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় ভারতকে। প্রসঙ্গত, মাইক্রো টারবাইন ইলেকট্রিক ভেহিকেল যেগুলি সিএনজি, এলএনজি, বায়োগ্যাস, ডিজেল, পেট্রল, হাইড্রোজেন ইত্যাদি জ্বালানিতে চলতে পারে, এমন যানবাহন তৈরির জন্য গত বছর অশোক লেল্যান্ড আইআইটি মাদ্রাজের সাথে গাঁটছড়া বেঁধেছিল। এখন তারা হাইড্রোজেন ইন্টার্নাল কম্বাশন ইঞ্জিন হাজির করল।
H2-ICE ইঞ্জিন ছাড়াও অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সংস্থাটি তাদের ব্যাটারি ইলেকট্রিক ভেহিকেল, ফুয়েল সেল ইলেকট্রিক ভেহিকেল, লিকুইফায়েড নিউট্রাল গ্যাস ভেহিকেল, ইন্টারসিটি সিএনজি বাস এবং একটি মিনি প্যাসেঞ্জার বাসের ওপর থেকে পর্দা সরিয়েছে।