নতুন বাইক কিনবেন? মাথায় ঘুরছে সেকেন্ড হ্যান্ড মডেলের কথাও? কোনটায় বেশি সুবিধা জেনে রাখুন
প্রতিদিনের যাতায়াত কিংবা ছুটিতে কাছাকাছি কোথাও সহজে ভ্রমণের জন্য মোটরসাইকেল বা স্কুটারের জুরি মেলা ভার। এবার একটি...প্রতিদিনের যাতায়াত কিংবা ছুটিতে কাছাকাছি কোথাও সহজে ভ্রমণের জন্য মোটরসাইকেল বা স্কুটারের জুরি মেলা ভার। এবার একটি টু-হুইলার নেওয়ার জন্য আপনার হাতে দুটি উপায়- হয় শোরুম থেকে নতুন মডেল কেনা, নয়তো হাত-ফেরতা পুরনো কোনো মডেল কেনা। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় অপশনটি অনেক বেশি বাস্তবিক ও অর্থ সাশ্রয়ী। বলা ভালো নতুন কিংবা পুরনো যে কোনো ধরনের দু'চাকা কিনতে গেলেই ভালো ও খারাপ দুটি দিককেই সমানভাবে জেনে নিতে হবে।
নতুন মডেল কেনার ভালো দিক
প্রথমেই বলি শোরুম থেকে ঝাঁ চকচকে নতুন বাইক কেনার আনন্দটা আর অন্য কোনোভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়। এছাড়াও নতুন মডেলের ক্ষেত্রে নির্মাণকারী সংস্থার একদম লেটেস্ট সংস্করণ পাওয়া সম্ভব। এর পাশাপাশি নতুন বাইক বা স্কুটারটির সাথে নির্মাতার ওয়ারেন্টি থাকে। এর ফলে ওই নির্দিষ্ট ওয়ারেন্টির মধ্যে যে বাইকের কোনোরকম সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সেই সংস্থার উপর বর্তায়।
উপরন্তু যদি আপনি মোটরসাইকেলটি ঋণ নিয়ে কিনতে চান সেক্ষেত্রে বহু ঋণ প্রদানকারী সংস্থা সেকেন্ড হ্যান্ড মডেলের তুলনায় নতুন মডেলে কম হারে সুদের বন্দোবস্ত করে দেয়। তাছাড়াও এক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দমত যে কোনো ব্যাংক বা সংস্থা থেকে সহজেই ঋণ পেতে পারবেন।
নতুন মডেল কেনার খারাপ দিক
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় খারাপ দিক হলো এর উচ্চ দাম। বর্তমানে BS6 ইঞ্জিন যুক্ত সমস্ত মোটরসাইকেলের মূল্য বৃদ্ধির পথে হেটেছে সংস্থাগুলি। তাই এক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হবে। উপরন্তু নতুন বাইকে অতিরিক্ত কিছু খরচ যেমন রেজিস্ট্রেশন, রোড ট্যাক্স ইত্যাদি আপনাকে বহন করতে হবে। মডেলের দাম অনুসারে হাজার থেকে লাখ অব্দি ছাড়িয়ে যেতে পারে এই জাতীয় খরচ। এর পাশাপাশি নতুন মোটরসাইকেলের ক্ষয়প্রাপ্ত মূল্যের হার অনেকটাই বেশি। অর্থনীতিবিদদের মতে এর ফলে নতুন বাইক কেনার পাঁচ বছরের আগেই তার দাম প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়।
সেকেন্ড হ্যান্ড মডেল কেনার ভালো দিক
হাত-ফেরতা মডেল কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দিক হলো এর কম দাম। একই মডেলের নতুন বাইকের তুলনায় পুরনো বাইক কিনতে অনেকটাই কম টাকা লাগে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা প্রায় নতুন দামের অর্ধেক হয়ে যায়। তাই প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বাইক কেনার ক্ষেত্রে সেকেন্ড হ্যান্ড মডেলকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
উপরন্তু এই পুরনো মডেলগুলিতে ইন্সুরেন্স করার জন্য বার্ষিক প্রিমিয়াম বাবদ খরচা অনেকটাই কম। কারণ একটি মোটরসাইকেলের প্রকৃত দাম প্রত্যেক বছরেই খানিকটা করে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আর সেই কারণেই ইনসিওরেন্সের প্রিমিয়ামের মূল্যও কমতে থাকে।
সেকেন্ড হ্যান্ড মডেল কেনার খারাপ দিক
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যে মোটরসাইকেলটি আপনি কিনছেন তার অতীত সম্পর্কে আপনি সম্পূর্ণ অন্ধকারে। মূলত অপরিচিত বিক্রেতার থেকে কিনতে গেলে এই সমস্যায় বেশি পড়তে হয়। অনেক সময় বাইরে থেকে দেখতে সুন্দর অনেক বাইক কেনার কয়েকদিনের মধ্যেই বিভিন্ন রকম যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে আপনার চেনা পরিচিত মেকানিক দিয়ে বাইক বা স্কুটারটি সম্পূর্ণ যাচাই করে তবেই কিনবেন।
আরেকটি সমস্যার ব্যাপার হলো মডেলের রং এবং ফিচার্স। অনেক সময় আপনি যে রঙের বা যে বৈশিষ্ট্যযুক্ত মডেলটি খুঁজছেন বাস্তবে তা না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এক্ষেত্রে আপনাকে বিষয়টা খানিকটা মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে। এছাড়াও অন্য আরেকটি বড় সমস্যা হল ওয়ারেন্টি। পুরনো মডেল কেনার পর তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অন্য কেউ নেবে না। তা আপনাকেই পয়সা খরচা করে করতে হবে। যদিওবা সেকেন্ড হ্যান্ড বাইকের ডিলাররা নির্দিষ্ট কিছু মডেলের উপর ছয় মাসের নামমাত্র ওয়ারেন্টি দেয়, তবে তা কতদূর প্রযোজ্য হবে সন্দেহ।