ট্র্যাক স্পর্শ না করেই ছুটবে ৬০০ কিমি প্রতি ঘন্টায়, চীনের নতুন বিস্ময় ম্যাগলেভ ট্রেন
সাধারণ বুলেট ট্রেনের থেকেও জোরে ছুটবে এই ট্রেন, নাম ম্যাগলেভ (Maglev)। গতকাল, শানডং প্রদেশের কিংডাও শহরের রেলওয়ে...সাধারণ বুলেট ট্রেনের থেকেও জোরে ছুটবে এই ট্রেন, নাম ম্যাগলেভ (Maglev)। গতকাল, শানডং প্রদেশের কিংডাও শহরের রেলওয়ে অ্যাসেম্বলি লাইন থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে বেরিয়েছে বিশ্বমানের এই ম্যাগলেভ ট্রেন। চীনের সংবাদ সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, প্রতি ঘন্টায় ৬০০ কিমির সর্বোচ্চ গতিসীমা ম্যাগলেভ ট্রেনকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী স্থলযানের শিরোপা এনে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদেশী কারিগরির সাহায্য ছাড়াই চীন তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে ম্যাগলেভ ট্রেনের ডেভেলপমেন্ট ও ম্যানুফ্যাকচারিং করেছে।
বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় শক্তি ব্যবহার করে ম্যাগলেভ ট্রেন লাইনের ওপর লেভিটেট করে বা ভাসমান থাকে৷ অর্থাৎ ট্রেনের সঙ্গে ট্র্যাকের কোনো সংযোগ থাকে না।
চীনের পরিবহন ব্যবস্থায় ম্যাগলেভ ট্রেন অবশ্য একেবারেই নতুন নয়। চীন প্রায় দুই দশক ধরে খু্ব সীমিত পর্যায়ে ম্যাগলেভ ট্রেনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে। সাংহাইয়ে বিমানবন্দর ও শহরের মধ্যে চলাচলের জন্য একটি ছোট ম্যাগলেভ লাইনও চালু আছে।
যদিও এত উচ্চ গতির সুবিধা নেওয়ার জন্য চীনে দুই শহর বা দুই প্রদেশের মধ্যে ম্যাগলেভ লাইনের অস্বিত্ব নেই। তবে সাংহাই এবং চেংদু-সহ বেশ কিছু শহর এই পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করার জন্য সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
বলা হচ্ছে, ৩৫০ কিমি/ঘন্টা গতিতে চলা বর্তমান হাই-স্পিড ট্রেন এবং ৮০০ কিমি/ঘন্টা গতিতে ওড়া বিমান - স্থলযান ও আকাশযানের মধ্যে এই বিপুল গতির ফাঁরাক ভরাট করবে এই ম্যাগলেভ ট্রেন।
ম্যাগলেভ ট্রেনে চেপে বেজিং থেকে সাংহাইয়ের মধ্যে ৬২০ কিমি দূরত্ব সফর করতে সময় লাগবে ২.৫ ঘন্টা। যেখানে এতটা পথ যেতে চীনের প্রচলিত হাই-স্পিড ট্রেন সময় নেয় ৫.৩০ ঘন্টা আর বিমানে যেতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা। এই ৬০০ কিমি/ঘন্টার ম্যাগলেভ পরিবহন ব্যবস্থা সর্ব প্রথম গুয়াংঝাও-শেনঝেন-হংকং এবং সাংহাই-হাংঝাই হাই-স্পিড ম্যাগলেভ চ্যানেলে ব্যবহার হতে পারে।
বেইজিংয়ের জিয়াওটাং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ঝাও জিয়ান গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, সুদূর ভবিষ্যতে চিনের ম্যাগলেভ ট্রেন এবং এই সর্ম্পকিত প্রযুক্তি বাইরের দেশে রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, ম্যাগলেভ ট্রেনকে লাভজনক করে তোলার জন্য অন্যান্য দেশগুলিতে পরিকাঠামোর অভাব। ম্যাগলেভ লাইনের মাধ্যমে তখনই অর্থ উপার্জন সম্ভব হবে যখন হাই-স্পিড পরিবহন ব্যবস্থার একটা বড় নেটওয়ার্ক নির্মাণ করা হবে। সেইসঙ্গে একে লাভজনক করে তোলার জন্য বিপুল পরিমাণে যাত্রী সমাগমের দরকার।
তবে উচ্চ ব্যয় ও বিরাজমান রেল অবকাঠামোর সঙ্গে অসঙ্গতি থাকা সত্বেও জাপান এবং জার্মানির মতো দেশ ম্যাগলেভ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে আগ্রহ দেখিয়েছে।