পেট্রল-ডিজেলের দাম দিনকে দিন যে হারে বাড়ছে, তাতে বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারে পরামর্শ দিচ্ছে অনেকেই। ব্যাটারিতে চলে বলে জ্বালানি তেল ভরার ব্যাপার থাকে না। ফলে চালানোর খরচ কম বলে এই ধরনের গাড়ি বর্তমানে বিকল্প হয়ে উঠে আসছে। কীন্তু জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে বৈদ্যুতিক যানবাহনের চালাতে কতটা কম খরচ হয়, তার স্পষ্ট ধারণা সবার নেই। তাই সম্প্রতি একটি সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে মুম্বইয়ের পরিবহণ দপ্তর বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রকারভেদে খরচের বিষয়টি সবিস্তার বর্ণনা করেছে৷
তারা জানিয়েছে, মুম্বইয়ে স্কুটার, বাস, এসইউভি, বা যে কোনও ধরণের বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি কিলোমিটারে জ্বালানি (বিদ্যুৎ ব্যয়) খরচ এখন দু’অঙ্কের ঘরে পৌঁছয়নি৷ ই-স্কুটারের ক্ষেত্রে সেটা ৬০ পয়সা৷ এবং শহরে ইলেকট্রিক বাস চালাতে খরচ সর্বোচ্চ ৯ টাকা৷
পরিবহন দপ্তরের সূত্র বলছে, একটি ইলেকট্রিক স্কুটারের প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয় এক টাকারও কম (৬০ পয়সা)৷ তুলনাস্বরূপ পেট্রোল চালিত স্কুটারে এক কিলোমিটারে ১.৮ টাকার জ্বালানি লাগে। যা বৈদ্যুতিক স্কুটারের তিন গুন। আবার একটি বৈদ্যুতিক বাসের প্রতি কিলোমিটারে চলতে লাগে বড়জোর ৯ টাকা। পেট্রোল-ডিজেল যানবাহনের চাইতে প্রতিমাসে বৈদ্যুতিক গাড়িতে জ্বালানির খরচ ৭৫% কম পড়তে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে।
তবে বৈদ্যুতিক যানবাহনের খরচ যে কেবল পেট্রোল-ডিজেলের গাড়ির তুলনায় কম তাই নয়, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে একটি সিএনজি গাড়ির থেকেও ব্যাটারি চালিত গাড়ি কম ব্যয়বহুল। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় এক কিলোমিটার যেতে যেখানে ২.৪ টাকা ব্যয় হয়, সেখানে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় খরচ ১.৩ টাকা।
অন্য দিকে, পেট্রল চালিত প্রাইভেট গাড়িতে এক কিলোমিটার চলতে ৭ টাকার বেশি খরচ হয় (পেট্রলের দাম ১১৬ টাকা/লিটার ধরে)। একটি ডিজেল গাড়িতেও খরচ ৫ টাকার বেশি। কারণ মেট্রোপলিটন শহরগুলিতে পেট্রলের সাথে পাল্লা দিয়ে ডিজেলও সেঞ্চুরি করেছে। আবার বিকল্প জ্বালানি হিসেবে পরিচিত সিএনজি-র মূল্য প্রতি কেজিতে ১৮ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬৬ টাকা/কেজি। কোনও গাড়ির সিএনজিতে চলতে প্রতি কিলোমিটারে গড়ে খরচ ৩.৫০ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমানে মহারাষ্ট্রে ৭,০০০-এর বেশি গাড়ি (মুম্বইয়ে ২,৫০০) গাড়ি বৈদ্যুতিক ভার্সনে রূপান্তরিত হয়েছে এবং ব্যবহারকারীরাএবং জ্বালানি সাশ্রয়ের সুবিধা ভোগ করছেন। এই প্রসঙ্গে আদিত্য ঠাকুর নামে এক এক ই-স্কুটার ব্যবহারকারী জানান, “আগে জ্বালানির জন্য প্রতি মাসে আমার প্রায় ৪০০ টাকা খরচ হতো, বর্তমানে যা কমে ১৫০ হয়েছে। আমি প্রতিদিন রাতে ব্যাটারিটি খুলে বাড়িতে চার্জে বসিয়ে দিই, এবং দিনে আরামের সাথে পুরো শহর চষে বেড়াই।”