Revolt RV400 নাকি নতুন লঞ্চ হওয়া Hop Oxo, দেখুন কোন ইলেকট্রিক বাইক কিনলে ফায়দা বেশি
আমাদের দেশে ব্যাটারি চালিত স্কুটারের সংখ্যা যথেষ্ট হলেও সে তুলনায় ভাল ইলেকট্রিক বাইকের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। বলতে গেলে...আমাদের দেশে ব্যাটারি চালিত স্কুটারের সংখ্যা যথেষ্ট হলেও সে তুলনায় ভাল ইলেকট্রিক বাইকের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। বলতে গেলে ২০১৯ সালে আত্মপ্রকাশ করা Revolt Motor এর RV400 মডেলটি ছিল একমাত্র অন্ধের যষ্টি। এই কয়েক বছর চুটিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা করেছে তারা। কিন্তু "চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়" এই উক্তিকে সত্য প্রমাণ করে কিছুদিন আগেই বাজারে এসেছে Hop Oxo নামে আরও এক ইলেকট্রিক বাইক। আজকের আলোচনায় এই দুই বাইকের তুলনামূলক আলোচনা রইল।
Hop Oxo vs Revolt RV400 ডিজাইন
ডিজাইনের দিক থেকে বিচার করলে দুটি বাইক তার নিজের স্থানে সেরা। হপ অক্সো মডেলটি ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিন যুক্ত কমিউটার বাইকগুলির ডিজাইন থেকে অনুকরণ করে বানানো। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ইয়ামাহা FZ -F1 Version 2.0 সদৃশ হেড লাইট রয়েছে এর। যদিও তাতে এলইডি লাইট ব্যবহার করা হয়েছে।
অন্যদিকে রিভোল্ট আরভি৪০০ অনেক বেশি স্পোর্টি লুকস নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। এতে আর্বান স্ট্রিট ফাইটারের মতো শার্প বডি প্যানেল এবং ফুয়েল ট্যাঙ্কের মতো অংশে তীক্ষ্ণ এক্সটেনশন রয়েছে। ডিজাইন অনেক বেশি ছিমসাম ও ফিউচারিস্টিক। সামনে এলইডি ডিআরএল যুক্ত ডায়মন্ড আকৃতির এলইডি হেডলাইট লাগানো রয়েছে।
Hop Oxo vs Revolt RV400 মোটর:
হপ অক্সোকে চলার শক্তি যোগায় ৫.২ কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক মোটর যা সর্বক্ষণ ৩ কিলোওয়াট আওয়ার আউটপুট দিতে সক্ষম। এটি ১৮৫ নিউটন মিটার টর্ক উৎপাদন করতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। আবার ই-বাইকটির টপ ভ্যারিয়েন্টে ৬.৩ কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক মোটর সহযোগে এসেছে, যাও একটানা ৩ কিলোওয়াট আউটপুট দিতে সক্ষম। অক্সোর এক্স নামে টপ ভ্যারিয়েন্টে অতিরিক্ত টার্বো মোড দেওয়া রয়েছে যার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৯৫ কিমি। অবশ্য বেস ভ্যারিয়েন্টের টপ স্পিড ৯০ কিমি/ঘণ্টা।
অন্যদিকে রিভোল্ট আরভি৪০০ বৈদ্যুতিক বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে ৩ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক মোটর। সাথে শক্তি ভান্ডার হিসেবে রয়েছে ৩.২৪ কিলোওয়াট আওয়ার ক্যাপাসিটির বদলযোগ্য লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। ঘন্টা প্রতি সর্বোচ্চ ৮৫ কিমি গতি তুলতে সক্ষম এটি।
Hop Oxo vs Revolt RV400 রেঞ্জ:
হপ অক্সোতে থাকা ব্যাটারিটি ইকো মোডে একবার চার্জে ১৫০ কিমি পথ পাড়ি দিতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে। আবার পাওয়ার ও স্পোর্ট মোডে এক চার্জে যথাক্রমে ১০০ কিমি ও ৭০ কিমি রাস্তা দৌড়াতে পারবে এটি। বাইকটি চার্জ দেওয়ার জন্য রয়েছে ১৬ অ্যাম্পিয়ার চার্জার। সংস্থার দাবি, এই চার্জার দিয়ে চার ঘণ্টারও কম সময়ে ০-৮০% চার্জ করা সম্ভব। অবশ্য সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘন্টা।
আশ্চর্যজনকভাবে, রিভোল্টের বাইকটিও ইকো মোডে একচার্জে ১৫০ কিমি পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। তবে নর্মাল ও স্পোর্টস মোডে রেঞ্জ যথাক্রমে ১০০ কিমি ও ৮০ কিমি। এর ব্যাটারি ১৫ ওয়াট চার্জার দিয়ে সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় নেয় ৪.৫ ঘন্টা।
Hop Oxo vs Revolt RV400: ফিচার্স
হপ অক্সোরতে ৫ ইঞ্চির এলসিডি ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল ব্লুটুটের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে কানেক্ট করা যায়। জিপিএস নেভিগেশন, ক্রুজ কন্ট্রোল, জিও ফেন্সিং অ্যান্টি থেফ্ট অ্যালার্ট-সহ নানা ফিচার্স উপলব্ধ। এছাড়াও বৈদ্যুতিক বাইকটিতে ডায়নামিক রিজেনারেটিভ ব্রেকিং সিস্টেম আছে। রিভোল্ট আরভি৪০০ মডেলের এলসিডি ডিসপ্লেতেও অবশিষ্ট রেঞ্জ ও পারিপার্শ্বিক উষ্ণতা দেখা সম্ভব। এতে ইন-বিল্ট ফোর-জি সিম কার্ড আছে। অক্সোর মতো ব্লুটুথের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে কানেক্ট করে বহু ফিচার্স অ্যাক্সেস করা সম্ভব।
Hop Oxo vs Revolt RV400: হার্ডওয়ার
Hop Oxo এর সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পিছনে ডুয়েল শক অ্যাবজরভার লাগানো রয়েছে। ব্রেকিং সিস্টেমের জন্য রয়েছে সিঙ্গেল ডিস্ক। তবে সেফটি ফিচার হিসাবে কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম বর্তমান। বাইকটির সামনে ১৮ ইঞ্চির চাকা ব্যবহার করা হলেও পিছনে রয়েছে ১৭ ইঞ্চির চাকা। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৮০ মিমি। তুলনাস্বরূপ, RV400 এর সামনে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ৩৭ মিমি ইউএসডি ফর্ক সামনে ব্যবহার করা হয়েছে। পিছনের রয়েছে আরামদায়ক মনোশক সাসপেনশন। বাইকটির সামনে ও পিছনে ২৪০ মিমি ডিস্ক লাগানো রয়েছে। এর উভয়দিকেই অ্যালয় যুক্ত ১৭ ইঞ্চির চাকা দেওয়া রয়েছে। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ২১৫ মিমি।
Hop Oxo vs Revolt RV400: দাম
Oxo এর বেস ভ্যারিয়েন্টটির মূল্য ১,২৪,৯৯৯ টাকা। আর X সংস্করণটির এক্স শোরুম মূল্য ১,৩৯,৯৯৯ টাকা। অন্যদিকে রিভোল্ট RV400 এর দাম ১,৩২,৪৯৯ টাকা। এই সবকটি মূল্যই কেন্দ্রীয় সরকারের ফেম টু প্রকল্পের সাবসিডি ধরে। যদি আপনি স্পোর্টি দেখতে ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল চান, তাহলে Revolt আদর্শ। আর বাজেট একটু টাইট থাকলে Oxo এর বেস মডেলটি কেনার পরামর্শ দেব আমরা। উল্লেখ্য, অক্সোর রাইড রিভিউ এখনও আসা বাকি।