বয়স 18 পেরিয়ে গিয়েছে? এই ভাবে ঘরে বসে ফোনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করুন

ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড কিংবা পাসপোর্ট এর মত যে কয়টি পরিচয় পত্র সরকারি ভাবে ব্যবহৃত হয় তাদের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স…

ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড কিংবা পাসপোর্ট এর মত যে কয়টি পরিচয় পত্র সরকারি ভাবে ব্যবহৃত হয় তাদের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স অন্যতম। ১৮ বছর বেরোনোর পর থেকেই যুবক-যুবতীরা দুই চাকা, তিন চাকা কিংবা চার চাকার গাড়ি চালানোর জন্য আইনি ছাড়পত্র পায় এই ড্রাইভিং লাইসেন্সের কল্যাণে। এ দেশের রাস্তায় বাইক কিংবা গাড়ি চালাতে গেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা একান্ত প্রয়োজন। নচেৎ তা দণ্ডনীয় অপরাধ। জানেন কি এই ড্রাইভিং লাইসেন্স বানাবেন কিভাবে?

একটা সময় ছিল যখন আরটিও(RTO) অফিসে গিয়ে হাতে লেখা ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হতো। এমনকি তখন কোনো প্রয়োজনীয় নথি ভুলে গেলে পুনরায় বাড়িতে এসে তা নেওয়ার প্রয়োজন পড়তো। অনেক সময় তো আবার মোটর ভেহিকেল দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের তোষামোদ করে তবেই মিলত ড্রাইভিং লাইসেন্স। এছাড়াও বিগত দিনে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে দালালের মারফত লাইসেন্স বানিয়েছেন অনেকেই।

কিন্তু এই ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত ঝামেলা থেকে পাবেন চিরতরে মুক্তি। বর্তমান দিনে ড্রাইভিং লাইসেন্স বানানো অত্যন্ত সহজে একটি কাজ। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে করা হয়। উপরন্ত আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সেগুলিকেও অনলাইনের মাধ্যমেই জমা দেওয়া সম্ভব। যদিও এই সমস্ত ডকুমেন্টের ভেরিফিকেশন হওয়ার সময় আরটিও অফিসে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে সহজেই বাড়িতে বসে বানাবেন আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স।

এক্ষেত্রে প্রথমেই প্রয়োজন হবে মোটর ভেহিকেল দপ্তরের নিজস্ব ওয়েবসাইট- “পরিবহন” এর। এই ওয়েবসাইটে গিয়ে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স বানানোর জন্য নির্ধারিত অপশনে ক্লিক করুন। তারপর নিজের রাজ্য বেছে নিন। নতুন লার্নার লাইসেন্স তৈরি করার জন্য অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করতে হবে তারপর। সঙ্গে সঙ্গেই খুলে যাবে একটি গোটা এপ্লিকেশন ফর্ম। সেখানে আপনার সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে ইনপুট করুন। মনে রাখবেন এক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের ভুল-ভ্রান্তি না হয়। ফাইনাল সাবমিট করার আগে বারংবার প্রদান করা তথ্যগুলি মিলিয়ে নিন।

তথ্য প্রদানের কাজ সম্পন্ন হলেই এর পরের ধাপে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, আপনার ফটো, স্বাক্ষর সমস্ত কিছুই স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। এই ডকুমেন্টগুলোর জন্য বরাদ্দ ফাইলের সাইজ এর দিকে নজর দেবেন। এর পরেই লাইসেন্স বানানোর জন্য বরাদ্দ সরকারি মূল্য অনলাইনে জমা দিয়ে লার্নার লাইসেন্স পরীক্ষার জন্য স্লট বুক করুন।

মনে রাখবেন যে সমস্ত আবেদনকারীর কাছে আধার কার্ড রয়েছে তারা প্রথম এমসিকিউ পরীক্ষাটি তৎক্ষণাৎ অনলাইনে দিতে পারবেন। আর তার সাথেই ই-লার্নার লাইসেন্স সিস্টেম মারফত জেনারেট হবে। আর যাদের আধার কার্ড নেই তাদেরকে নির্দিষ্ট সেন্টারে গিয়ে স্বয়ং এই পরীক্ষা দিয়ে আসা বাধ্যতামূলক। লার্নার লাইসেন্স হাতে পেলেই আপনি নিজের গাড়ি চালানোর ছাড়পত্র পাবেন। যদিও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে লার্নার লাইসেন্সধারী গাড়ি চালকের পাশের আসনে একজন লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যক্তির বসে থাকা আবশ্যক। তাছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যভিত্তিক কিছু আলাদা নিয়ম কার্যকর থাকতে পারে, সেই বিষয়টি জেনে নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা।

লার্নার লাইসেন্স একবার হাতে পেয়ে গেলেই এর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যেই আরটিও অফিসে গিয়ে আপনাকে ড্রাইভ টেস্ট দিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে কিন্তু মোটর ভেইকেল দপ্তরের আধিকারিকের সামনেই আপনি গাড়ি কিংবা বাইক (যার জন্য আবেদন করেছেন) সঠিকভাবে চালাতে পারছেন কিনা তার পরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষায় পাশ করলেই স্থায়ী লাইসেন্স পাওয়ার অনুমতি মিলবে। নচেৎ আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে আপনাকে। সম্পূর্ণই প্রক্রিয়াটি রাজ্য বিশেষে খানিক পরিবর্তন হলেও মোটামুটি এই কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতেই হবে লাইসেন্স পেতে গেলে।