ঠান্ডা রাখবে মাথা, রক্ষা করবে বায়ু দূষণ থেকে, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই অত্যাধুনিক হেলমেট পরুন আজই

“বায়ু দূষণ”- এই মুহূর্তে আমাদের দেশ তথা পৃথিবীজুড়ে এই একটি মাত্র শব্দই যেন মাথা ব্যথার প্রধান কারণ। একদিকে বাড়তে থাকা দূষণের মাত্রা আর তার সঙ্গে…

“বায়ু দূষণ”- এই মুহূর্তে আমাদের দেশ তথা পৃথিবীজুড়ে এই একটি মাত্র শব্দই যেন মাথা ব্যথার প্রধান কারণ। একদিকে বাড়তে থাকা দূষণের মাত্রা আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলা দূষণ জনিত অসুখ। এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন সমীক্ষায় মাত্রাতিরিক্ত দূষণ বহুল শহর হিসেবে উঠে এসেছে দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাইয়ের নাম। পরিস্থিতি আরো ঘোরালো হয়ে ওঠে শীতের দিনগুলিতে। দিল্লী ও তার আশেপাশের অঞ্চল গুলিতে বেশিরভাগ বাড়িতেই তখন বাজার চলতি এয়ার পিউরিফায়ারের ব্যবহার বাড়ে। এমনকি এখন গাড়িতেও বায়ু পরিশোধক ডিভাইস দেওয়া শুরু করেছে নির্মাতারা।

কিন্তু এই সমস্ত কিছুই বাইক আরোহীদের ক্ষেত্রে খাটে না। ঝড়-জল-ঠান্ডা এসবের মতই বায়ু দূষণের বিষ বাষ্প মেখেই তাদের প্রতিদিনের যাতায়াত। ধুলোর মেঘ ঠেলেই এগিয়ে চলে তারা। তবে এবার সেই পরিস্থিতি কাটতে চলেছে। বাইক আরোহীদের দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে নতুন ধরনের হেলমেট নিয়ে এল এক সংস্থা। তাদের দাবি, এটি অন্ততপক্ষে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত দূষণকারী পদার্থ রোধ করতে সক্ষম।

Shellios Technolabs নামক সেই হেলমেট নির্মাণকারী সংস্থাকে ইতিমধ্যেই আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান। স্টার্টআপটির কর্ণধার অমিত পাঠক বিগত ছয় বছর ধরে থেকেই এই হেলমেট নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাঠক নিজে একজন ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার। তার কথায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বায়ু দূষণের মাত্রা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে এতটাই তীব্র হয় যে তা নিঃশ্বাস গ্রহণের যোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, একজন বাড়িতে কিংবা অফিসে এয়ার পিউরিফায়ার লাগানো থাকলেও যিনি বাইক চালাচ্ছেন তার কাছে এর থেকে বাঁচার কোন রক্ষাকবচ এযাবৎকাল পর্যন্ত ছিল না।

এই সমস্যার সুরাহার জন্যই পাঠকের হাত ধরে জন্ম নিয়েছেয এয়ার পিউরিফিকেশন সিস্টেম যুক্ত এক নতুন হেলমেট। এর মধ্যে রয়েছে একটি পরিবর্তনযোগ্য মেমব্রেন ফিল্টার এবং ব্যাটারি দ্বারা পরিচালিত একটি ছোট ফ্যান, যা একটানা ছয় ঘন্টা পর্যন্ত সচল থাকতে পারে। প্রয়োজনে সেটিকে মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং পোর্টের মাধ্যমে চার্জ করা সম্ভব। এক নিরপেক্ষ স্বাধীন সংস্থাকে দিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লির রাস্তায় পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, হেলমেটটি প্রকৃত পক্ষেই ৮০ শতাংশ দূষণ করার ক্ষমতা রাখে।

ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক এই হেলমেটের কার্যকলাপকে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি জানিয়েছে। অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হেলমেটটির দাম রাখা হয়েছে ৪,৫০০ টাকা। তবে এটির অপেক্ষাকৃত হালকা সংস্করণ তৈরি করার জন্য ফাইবার গ্লাসের পরিবর্তে কম খরচা সাপেক্ষ থার্মোপ্লাস্টিক উপকরণ ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে বেশি সংখ্যক উৎপাদন করার লক্ষ্যে একটি নামী সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে স্টার্টআপটি। পাঠক আরও জানিয়েছেন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি তার নতুন উদ্ভাবনের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেছে।