ইলেকট্রিক বাইকে এই প্রযুক্তি প্রথমবার! চার বছর গবেষণা শেষে 21 নভেম্বর লঞ্চ, ফিচার দেখে নিন
আমেদাবাদের টেকনোলজি স্টার্টআপ ম্যাটার (Matter) লঞ্চ করতে চলেছে তাদের প্রথম ইলেকট্রিক বাইক। আগামী ২১শে নভেম্বর এই বাইকটির...আমেদাবাদের টেকনোলজি স্টার্টআপ ম্যাটার (Matter) লঞ্চ করতে চলেছে তাদের প্রথম ইলেকট্রিক বাইক। আগামী ২১শে নভেম্বর এই বাইকটির উপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা উন্মোচন করবে তারা। সংস্থার দাবি এটি, ব্যাটারি চালিত স্পোর্টস বাইক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ভারতবর্ষের প্রথম লিকুইড কুলিং সিস্টেম যুক্ত ব্যাটারি প্যাকের সাথে আসবে এটি। পদার্থবিদ্যার নিয়ম অনুযায়ী দীর্ঘক্ষণ কোনো মোটর বা ইঞ্জিন যদি চালু অবস্থায় থাকে তা থেকে যথেষ্ট পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয়। যে কোনো ধরনের গাড়ি কিংবা টু-হুইলারের ক্ষেত্রেও এই কথা প্রযোজ্য। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার সময় ইঞ্জিনে উৎপাদিত তাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজন হয় কুলিং সিস্টেমের। সাধারণভাবে কম খরচে এয়ার কুলিং সিস্টেম ব্যবহৃত হলেও অপেক্ষাকৃত উন্নত কুলিং প্রযুক্তি হলো অয়েল কুলিং ও লিকুইড কুলিং। যদিও এই দুইয়ের মধ্যে লিকুইড কুলিং সবচেয়ে আধুনিক ও উচ্চ ক্ষমতাযুক্ত।
এ যাবৎ কাল পর্যন্ত ভারতে পেট্রল চালিত মোটরসাইকেল ও স্কুটারে লিকুইড কুল্ড প্রযুক্তি থাকলেও, ব্যাটারি চালিত দুই চাকার তা কখনও নজরে পড়েনি। এবার সেই নিয়মে ছেদ পড়তে চলেছে। ম্যাটারের সৌজন্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে এদেশের ইলেকট্রিক বাইকের জগতে। লিকুইড কুলিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় অতিরিক্ত তাপ উৎপাদনের জন্য ব্যাটারি ফেটে আগুন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে চিরতরে মুক্তি মিলবে বলে তাদের দাবি।
যদিও এখনো পর্যন্ত এই বাইকটির ডিজাইন, ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কিংবা ব্যাটারির রেঞ্জ সম্পর্কিত কোনো তথ্যই প্রকাশ করা হয়নি। নির্মাতার দাবি অনুযায়ী এই বাইকে ব্যবহৃত ব্যাটারি প্যাক দীর্ঘদিন যাবত টেস্টিং করার পরেই এর সুরক্ষা ও কার্যকারিতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন তারা। দেশে এটাই প্রথম কোনো নির্মাতার তৈরি লিকুইড কুলিং প্রযুক্তিযুক্ত ব্যাটারি প্যাক। চার বছর ধরে ই-বাইকটির ড্রাইভট্রেন, ইলেকট্রনিক্স, ব্যাটারি সিস্টেম, চার্জার, এবং কানেক্টেড সিস্টেমের উপর কাজ করেছেন তারা।
প্রসঙ্গত, সংস্থার আগত এই নতুন ইলেকট্রিক বাইকটির প্রথম ব্যাচের মডেলগুলি তাদের আমেদাবাদের প্ল্যান্টে অ্যাসেম্বল করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ২ লক্ষ বর্গফুট জমির উপর প্রস্তুত এই কারখানাটিতে বর্তমানে বছরে ৬০,০০০ ইউনিট বাইক তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে। যদিও আগামীতে এই উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রতি বছরে ২ লক্ষ ইউনিট করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই সংস্থায় কাদের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০০০ জনকে নিয়োগ করা হবে।
আগামীতে এদেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ার জন্য এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার এবং ডিলারশিপের উপরেই আস্থা রাখছে ম্যাটার। চারটি ধাপে তৈরি হবে তাদের ডিলারশিপ নেটওয়ার্ক। প্রথমে দেশের টিয়ার ওয়ান শহরগুলিতে ও পরবর্তীতে সমগ্র দেশেই ছড়িয়ে পড়বে তারা। এই নতুন বাইকটি লঞ্চের প্রসঙ্গে ম্যাটার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মহল লালভাই বলেন, "আমরা মনে করি যে আমাদের সংস্থা রাইডারদের জন্য নতুন ধরনের কিছু তৈরি করতে পেরেছে এবং সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই বাইক তার কার্য সম্পন্ন করতে পেরেছে দেখে অত্যন্ত খুশি আমরা।"
অন্যদিকে সংস্থার সহকারী প্রতিষ্ঠাতা অরুণ প্রতাপ সিং জানান, "ইভি ইন্ডাস্ট্রি এখনো পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আমরা অমনিচ্যানেল (Omni Channel) মারফত বিনিয়োগের মাধ্যমে এবং গ্রাহকদের মধ্যে ভরসার জায়গা তৈরি করে এই জগতে দীর্ঘকাল পর্যন্ত টিকে থাকার প্রয়াস করছি। আমাদের নেটওয়ার্ক কেন্দ্রিক সহযোগীদের সাহায্যে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণের জন্য তাদের অভিজ্ঞতাকেই হাতিয়ার করে এগোতে চাই।"