ড্রাইভ করুন নিশ্চিন্তে, গাড়ির ভিতরে থাকা করোনার জীবাণুকেও খতম করবে জাপানি সংস্থার প্রযুক্তি!
বর্তমান পৃথিবীতে মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণ এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার ক্রমাগত আক্রমনে জর্জরিত গোটা মানবসভ্যতা। সমগ্র বিশ্ব...বর্তমান পৃথিবীতে মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণ এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার ক্রমাগত আক্রমনে জর্জরিত গোটা মানবসভ্যতা। সমগ্র বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে কীভাবে একটা ছোট্টো ভাইরাস তার করাল গ্রাসে কবজা করেছিল আমাদেরকে। এমতাঅবস্থায় জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারী Nisaan (নিসান) এমন এক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করল, যা গাড়ির বহিরঙ্গ ও কেবিনকে সম্পূর্ণরূপে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফামার্সিউটিক্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় অণুজীব নিষ্ক্রিয়কারী প্রযুক্তিটি বিকাশ করা হয়েছে৷
তাদের দাবি অনুযায়ী, এই প্রযুক্তিতে এমন এক জৈব নাইট্রোক্সাইল রেডিক্যাল জারক অনুঘটক ব্যবহৃত হয়েছে যা রেডিক্যাল অনুঘটক নামেও পরিচিত। এটি গাড়ির বহিরঙ্গ ও কেবিনে থাকা অটোমোটিভ পেইন্টসের পলিমার যুক্ত পদার্থের পাশাপাশি ফাইবার এবং জৈব পলিমার বিশিষ্ট পদার্থের সংযোজক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আর এভাবেই সমগ্র প্রক্রিয়াটি সংঘটিত হয়।
দীর্ঘ সময়ের অবকাশে গাড়ির বাইরের অংশে তৈরি হওয়া বিবর্ণতা, ভঙ্গুরতার মত ফটোডিগ্রেডেশন বিক্রিয়া প্রতিহত করতে রেডিক্যাল অনুঘটক ব্যবহার করা হয়েছে । সংস্থার তরফে এও দাবি করা হয়েছে যে তারা রেডিক্যাল অনুঘটককে আরো সক্রিয় করে তুলে অন্যান্য ব্যবহারিক ক্ষেত্রকে উন্নত করার জন্য তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাবেন। ভাইরাসের ক্ষেত্রে রেডিক্যাল অনুঘটকগুলি জৈব যৌগকে জারণ করার মাধ্যমে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় । আরো বিশেষ ভাবে বললে, ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করে মানব কোষকে ধ্বংস করা রোধ করে।
এই প্রসঙ্গে জাপান কেন্দ্রিক সংস্থাটি জানিয়েছে "নিসানের প্রযুক্তি অটোমেটিভকে উন্নত ও সুদক্ষ করে তোলে, পাশাপাশি তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ড্রাগ সম্পর্কিত পরীক্ষা, ফার্মাসিউটিক্যাল বিজ্ঞান, অনুঘটকের প্রস্তুতি এর ব্যবহারিক প্রয়োগকে উন্নত করে তুলেছে।"
নিসান দাবি করেছে, এই প্রযুক্তি জারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে বলে কোনরকম আলোর উপস্থিতি ছাড়াই অন্ধকার জায়গায় ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কাজ করতে পারে। এমনকি কোভিড ভাইরাসের উপরও সমান কার্যকরী এই প্রযুক্তি। এটি ফাঙ্গী ও ব্যাকটেরিয়ার মত প্যাথোজেনকে নিষ্ক্রিয় করতেও সক্ষম। সংস্থাটি এই প্রযুক্তির ব্যবহারিক প্রয়োগের সীমা ভবিষ্যতে অনেকটাই বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টায় আছে।
উল্লেখ্য, এটাই প্রথমবার নয় যে এমন প্রযুক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটল। এর আগেও, ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য এমনই এক প্রযুক্তি বাজারে এনেছিল হোন্ডা, যা গাড়ির এয়ার ফিল্টার থেকে কেবিনের মধ্যে ভাইরাসকে প্রবেশ করতে বাধা দেবে। তবে নিসানের প্রযুক্তিটি কবে গাড়িতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হবে, তা এখনও জানা যায়নি৷