ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড (IOCL) এর থেকে ১৫টি হাইড্রোজেন-বেসড ফুয়েল সেল চালিত বাসের বরাত পেল টাটা (Tata)। গতবছর ডিসেম্বরে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দরপত্র ডেকেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। ভারতের অন্যতম অটোমোবাইল সংস্থাটি দরপত্রের বিজেতা হয়। এরপরই চুক্তি স্বাক্ষর করে সংস্থা দুটি। সেই চুক্তি অনুযায়ী ফুয়েল সেল (fuel cell) বাসগুলি ইন্ডিয়ান অয়েলকে সরবরাহ করার জন্য টাটার হাতে মাত্র ১৪৪ সপ্তাহ বা ৩৪ মাস (প্রায়) সময় রয়েছে।
সম্ভবত ভারতের প্রথম হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল গাড়ি এটিই হবে। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল কিভাবে কাজ করে? ফুয়েল সেল হচ্ছে এমন একটি তড়িৎ রাসায়নিক কোষ যেখানে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন বিক্রিয়া করে ডিসি কারেন্ট উৎপন্ন করে। এরপর সেই তড়িৎ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে গাড়ি চলানো হয়। ভারতে এই প্রযুক্তি নির্ভর গাড়ি এখনো চালু না হলেও বিদেশের রাস্তায় ইতিমধ্যেই এই গাড়ি চলা শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিবেশকে দূষণ মুক্ত করে তোলার ক্ষেত্রে এর জুড়ি মেলা ভার। কারণ গাড়িগুলি থেকে বাইপ্রডাক্ট হিসেবে জল নির্গত হয়। তাই এক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণের কোনো প্রশ্নই আসে না।
ইন্ডিয়ান অয়েলের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ও টাটা যৌথভাবে গাড়িগুলি পরীক্ষা করবে বলে জানিয়েছে। একটি প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “টেস্টিং, মেইনটেনেন্স এবং বাসগুলির অপারেটিংয়ের বিষয়টি যৌথভাবে পরীক্ষা করে দেখা হবে। দিল্লি-এনসিআর পাবলিক ট্রান্সপোর্টের জন্য আনা হবে বাসগুলি। এর রিফুয়েলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় হাইড্রোজেন IOCL তৈরি ও বিতরণ করবে।”
এই প্রসঙ্গে টাটা মোটর্সের সভাপতি (কমার্সিয়াল ভেহিকেল বিজনেস ইউনিট) গিরিশ ওয়াঘ (Girish Wagh) বলেছেন, “আমরা এর আগে FAME-I ও FAME-II এর অধীনে যথাক্রমে ২১৫ টি ও ৬০০ টি বাসের অর্ডার সফলভাবে সরবরাহ করেছি। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের মত দেশের সম্মানিত একটি প্রতিষ্ঠানে থেকে PEM ফুয়েল সেল বাস সরবরাহ করার বরাত ভারতে বিকল্প জ্বালানি নির্ভর গাড়ি তৈরিতে আমাদের অধিক উৎসাহিত করেছে।”
বর্তমানে দেশে বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে কারণ জৈব জ্বালানির উপর যাতে নির্ভরতা কমানো যায়। এহেন পরিস্থিতিতে টাটার হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত গাড়িগুলি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। IOCL জানিয়েছে আগামী দিনে তাঁরা দেশে হাইড্রোজেন শক্তি উৎপন্ন এবং সরবরাহ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতে দেশে দিনে ১ টন হাইড্রোজেন উৎপন্ন করতে সক্ষম এমন পাইলট প্লান্ট তৈরি করা হবে।